কালিয়াগঞ্জে রথে চাহিদা বাড়ছে নটকনের

0
157

পিয়া গুপ্তা ,কালিয়াগঞ্জঃ 

পুরীর রথের পাশাপাশি জেলায় জেলায় সাড়ম্বড়ে পালিত হচ্ছে রথযাত্রা। শনিবার সকাল থেকেই
উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ ,কালিয়াগঞ্জ সহ সমগ্র জেলাতে পালিত হলো রথযাত্রা ।
রীতি মেনে রথ টানা শুরু হলো জেলার বিভিন্ন প্রান্তে। রথ যাত্রা উপলক্ষে কালিয়াগঞ্জের নাটমন্দির প্রাঙ্গণে  অগণিত মানুষের ভীড় দেখা গেল শনিবার সকাল থেকেই । অগণিত ভক্তের ভীড় সামলাতে জেলা জুড়ে জায়গায় জায়গায় কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করেছে প্রশাসন।

আর রথ মানেই মেলা। সেই উপলক্ষে বিভিন্ন জায়গায় বসেছে মেলা। শনিবার সকাল থেকেই জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার আরাধনায় মাতলেন কালিয়াগঞ্জ বাসী।
পঁয়ষট্টি বছরে  পদার্পণ করলো এবারে  কালিয়াগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী  রথযাত্রা । এই রথযাত্রা উপলক্ষ্যে প্রতি বছর গ্রামীণ মেলাও বসে কালিয়াগঞ্জের নাটমন্দির প্রাঙ্গণে।

নিজস্ব চিত্র

কালিয়াগঞ্জ এর এই  মেলার বৈশিষ্ট্য হল নটকন ও জিলেপি।বহু দূরদূরান্ত থেকে মানুষ এই রথের মেলায় আসে নটকন খেতে।টক মিষ্টি  এই ফলটি সোজা রথ ও উল্টো রথের দিনই পাওয়া যায় ।সারা বছর  নটকন এই ফলটির দেখা না মিললেও রথের এই একটি দিন এই ফলটি পাওয়া যায় ।ফলে সাধারণ মানুষের কাছে এই ফলটির প্রতি  বিশেষ চাহিদা থাকে। এছাড়া ও বিকেল থেকে রথে জগন্নাথ দেবকে চিনি কলা দিতে হাজারো  মানুষের ভীড় কালিয়াগঞ্জের ছিল নাটমন্দির প্রাঙ্গণে  ।একটা সময় কালিয়াগঞ্জের এই রথের মেলার সব থেকে আকর্ষণীয় ছিল মাটির তৈরি পুতুল ও কাঠের তৈরি সামগ্রী  ।যা ছোটো থেকে
বড়ো সকলের কাছে আকর্ষণীয় ছিল এক সময়  । তবে বর্তমান যুগ মানুষের রুচির সাথে সাথে  ক্রমেই হারিয়ে যেতে বসেছে এই শিল্প।  এক সময় মাটির তৈরি পুতুল বিক্রি করে রথের মেলায় ভালই রোজগারের মুখ দেখতো মৃত শিল্পীরা। তবে  চাহিদা কমে যাওয়ায় বাধ্য হয়েই কাঠের খেলনা বানাতে শুরু করলেন শিল্পীরা । তবে ধীরে ধীরে  কাঠের খেলনা ছেড়ে বর্তমানে প্লাস্টিকের তৈরি খেলনার প্রতি ঝোঁক বেড়েছে শিশুদের।

নিজস্ব চিত্র

শিল্পী তপন চক্রবর্তী  বলেন, কালিয়াগঞ্জ  এর এই মেলাটি তাঁর বাবার আমল থেকে দেখে আসছেন তখন অনেক জায়গা থাকতো বেশ বড় একটা মেলা হতো। তেলে ভাজা থেকে জিলিপি সব থাকলেও মাটির পুতুলের চাহিদা ছিল বেশ। এখন মাটি সেই ভাবে পাওয়া যায় না । এছাড়াও ছোটদের কাছে মেলার সব থেকে আকর্ষণীয় যেটা ঘাড় নড়া দাদু সেটার দিকে তেমন ঝোঁক নেই তাদের । তার বদলে প্লাস্টিকের ছোটা ভীম, মটু পাতলু জায়গা করে নিয়েছে। ফলে এই পুতুল আগে যেমন ৫০০টিরও বেশি এক এক জন শিল্পী বানাতেন এখন জনা কয়েক শিল্পী বানান। সরকারিভাবে তেমন কোনও সাহায্যও তেমন নেই যে তারা সেটাকে টিকিয়ে রাখবে। তাই মেলার ঐতিহ্য টিকিয়ে রেখেছেন শুধুকয়েকজন। জায়গা না থাকায় মেলার পরিসরও অনেকটাই কমে গিয়েছে এই নাটমন্দির প্রাঙ্গণে । এক সময় এলাকার শিল্পীরা ছাড়াও বাইরে থেকে অনেক শিল্পী মাটির তৈরি পুতুল নিয়ে আসতেন এখন তাঁরাও আসেন না। এছাড়াও নতুন প্রজন্ম তেমন ভাবে মাটির পুতুল তৈরিতে আগ্রহ দেখায় না । ফলে আগামী দিনে এই শিল্প কি ভাবে বেঁচে থাকবে সেই নিয়েই সংশয় দেখা দিয়েছে শিল্পীদের মধ্যে।
এদিন কালিয়াগঞ্জের নাটমন্দির প্রাঙ্গণে অবস্থিত এই রথ মেলাকে ঘিরে মানুষের উৎসাহ ও ভীড় ছিল চোখে পড়ার মত।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here