নিজস্ব সংবাদদাতা,দক্ষিণ দিনাজপুরঃ
সরকারি উদাসীনতায় ফুট আন্ড মাউথ রোগে দক্ষিণ দিনাজপুরে গরু মৃত্যু অব্যাহত। বৈজ্ঞানিক ভাষায় ফুট আন্ড মাউথ ডিজিজ এবং চলতি ভাষায় খুড়াই রোগে আক্রান্ত হয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন ব্লকের ২ নং অঞ্চলের অন্তশিমুল এলাকায় গরু মৃত্যুর সংখ্যা ইতিমধ্যেই ৫০ ছাড়িয়ে গেছে। হুশ নেই জেলার প্রাণী সম্পদ বিকাশ বিভাগের কর্তা আধিকারিকদের। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন ব্লকে ৩টি প্রাণী সম্পদ কেন্দ্র অবস্থিত যথাক্রমে করদহ, লস্করহাট এবং তপনে। একটি ব্লকে তিনটি প্রাণী সম্পদ থাকা সত্বেও এই ব্লকের খুড়াই রোগে আক্রান্ত হয়ে গরু মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রাণী স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদাসীনতায়।
তপন ব্লকের অন্তশিমুল এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দাদের জীবিকা গরু পালনের উপর নির্ভরশীল। বেশ কিছুদিন ধরে এই এলাকার বাসিন্দারা লক্ষ্য করছিলেন এই এলাকার অধিকাংশ গরুর পায়ের খুড়ে পোকা ধরছে এবং গরুর মুখ দিয়ে অনবরত লালা ক্ষরণ হচ্ছে। অভিযোগ এরপর কয়েকজন গ্রামবাসী প্রাণী স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সরকারি পশু চিকিৎসককে জানালেও গ্রামে দেখা মেলেনি সরকারী পশু চিকিৎসকের। অগত্যা এরপর একজন গ্রামবাসী বেসরকারীভাবে সরকারি চিকিৎসককে ডাকলে দেখা মেলে প্রাণী স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সরকারি চিকিৎসকের। এক্ষেত্রেও গ্রামবাসীদের অভিযোগ চিকিৎসক গরিব এক গ্রামবাসীর কাছ থেকে তিনবারে যথাক্রমে ১০০০ টাকা, ১২০০ টাকা এবং ৮০০ টাকা চিকিৎসার জন্য নিলেও শেষ পর্যন্ত ঐ গ্রামবাসীর গরুটি মারা যায়। অন্তশিমুল এলাকার বাসিন্দা মুজিবর সরকার বলেন খুড়াই হওয়ার পর গরু খেতে পারছে না, প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তপন সমষ্টি প্রাণী স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে সাহায্য প্রার্থনা করার পাশাপাশি এদিন মুজিবর সরকার জানান এর পূর্বে খুড়াই রোগে আক্রান্ত হয়ে তার ২টি গরু মারা গিয়েছে এবং এলাকার বেশ কয়েকটি গরু খুড়াই রোগে আক্রান্ত। গ্রামবাসীদের আরও অভিযোগ কেন্দ্র সরকার এবং রাজ্য সরকার গরুর খুড়াই রোগ প্রতিরোধে প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা খরচ করলেও এই বিষয়ে উদাসীন তপন সমষ্টি প্রাণী স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আধিকারিকরা। ফলে গরু মৃত্যু অব্যাহত। তপন প্রাণী স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভেটেনারি অফিসার ডাঃ অর্ণব পাল জানিয়েছেন ব্লকের যারা প্রাণী বন্ধু, প্রাণী সেবিকা তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রতিষেধক দিতে হয়। শেষ প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছিল চলতি বছরের মার্চ মাসে। সেই সঙ্গে এখনো কোন খবর পাননি বলে নিজের দায়িত্ব কোন মতে এড়ান তিনি। তপন ব্লকের করদহ প্রাণী স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভেটেনারি অফিসার জানান এটি খুব ভাইরাল রোগ, এর প্রতিষেধক আছে কিন্তু এন্টিবায়োটিক নেই। প্রাণী সম্পদ দপ্তরের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ডিস্ট্রক্ট ভেটেনারি অফিসার সমীর মোদক বলেন কার্ড দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের প্রেসে ছাপতে দিয়েছি, সেই কার্ড এসে পৌছায়নি। এর পাশাপাশি সমীর মোদক বলেন প্রাণী বন্ধুরা রিপোর্ট করেনি, আমি খোঁজ নিয়ে নিচ্ছি। সুতরাং শীতঘুম কাটিয়ে ফুট আন্ড মাউথ ডিজিজ বা খুড়াই থেকে গরু বাঁচাতে কবে প্রাণী স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আধিকারিকরা পদক্ষেপ গ্রহণ করবে সেই দিকে তাকিয়ে এখন তপন ব্লকের অন্তশিমুল এলাকার বাসিন্দারা।
আরও পড়ুনঃ ট্রাক ও বাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত বাইক আরোহী
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584