জয়শ্রী টেক্সটাইলে ধর্ণা

0
90

সুমিত ঘোষ,রিষড়া:১৪ এবং ১৫ই ডিসেম্বর, ২০১৭… রিষড়ার ‘জয়শ্রী টেক্সটাইল’ কারখানার ‘জয়শ্রী শ্রমিক মুক্তি ইউনিয়ন’ (আই. এফ. টি. ইউ.)-এর ডাকে ছাঁটাই হওয়া ৯জন শ্রমিককে অবিলম্বে কাজে পুনর্বহাল এবং টোটিদের পুরো মজুরীর দাবীতে দুদিনব্যাপী ধর্না কর্মসূচি সংঘটিত হয়। ম্যানেজমেন্টের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে ১৬ই মে শ্রমিকরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলে তা দমন করার জন্য পুলিশ লাঠিচার্জ করে, ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাস। ছাঁটাই করা হয় ২৪জন শ্রমিককে। ১৮ই মে কারখানা কতৃপক্ষ শ্রমিক ইউনিয়নের সারা রাত লাগাতার আন্দোলনের চাপে এস. ডি. ও., এস. ডি. পি. ও., ডি. এল. সি. ও আই. সি.-র উপস্থিতিতে ২৪জনের মধ্যে ১৫জনকে কাজে পুনর্বহাল করে এবং ১ মাস পরে বাকি ৯জনকেও পুনর্বহাল করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে একটি চুক্তি পত্রে সই করে।

৬ মাস কেটে গেলেও সেই চুক্তি পত্রের বয়ান উপেক্ষা করা হচ্ছে। ১৬ই সেপ্টেম্বর কয়েকশো শ্রমিক সংঘটিতভাবে গণ-ডেপুটেশান দিলেও কোনও কাজ হয়নি। রাজ্য সরকার ‘বহিষ্কার’ করা যাবে না বলেও কতৃপক্ষের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সাস্পেনশন ঝুলিয়ে রেখেছে। কোম্পানি বর্তমানে ৭ দিনের বদলে ৬ দিন কারখানা চালু রাখছে, ইনক্রিমেন্ট বন্ধ রেখেছে, আর্থিক অবস্থা ভালো নয় বলে ও. টি. বন্ধ করেছে, শ্রমিকদের ভাত খাওয়ার ব্যবস্থা না করলেও চালু হয়েছে বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা, উৎপাদন বাড়ানোর তাড়নায় ডিপার্টমেন্টাল এগ্রিমেন্ট করা হচ্ছে, টোটিদের পুরো মজুরী দিচ্ছে না, ঠিকা শ্রমিকের নুন্যতম মজুরী অস্বীকার করছে এবং শো-কজকে হাতিয়ার করে ভয় দেখাচ্ছে ও শ্রমিক অসন্তোষকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। নিজেদের পাহাড় প্রমাণ মুনাফার পথ সুগম করলেও খারাপ আর্থিক অবস্থার অজুহাতে কতৃপক্ষ উৎপাদন অনুযায়ী মজুরী দিতে চাইছে যাতে কয়েকশো শ্রমিকের কাজ খোয়ানোর আশঙ্কা রয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে ২৬শে নভেম্বর ‘আই. এফ. টি. ইউ.’-র উদ্যোগে বিদ্যাপীঠ স্কুলের নিকট গান্ধী সড়ক রোডে ‘ছত্রীয় জাগরণ মঞ্চ’-এ কনভেনশানের ডাক দেওয়া হয়। ১৪-১৫ ডিসেম্বরের ধর্না কর্মসূচিতে বহু শ্রমিক যোগ দেন। কারখানার মূল প্রবেশ দ্বারের নিকট চলে দুদিনব্যাপী ধর্না। আন্দোলনরত শ্রমিকদের দাবীঃ ৯জন শ্রমিককে অবিলম্বে পুনর্বহাল করতে হবে, ইনক্রিমেন্ট দিতে হবে, ক্যান্টিনে ভাত খাওয়ার সুবিধা করে দিতে হবে, ডিপার্টমেন্টাল এগ্রিমেন্ট বন্ধ করতে হবে, ঠিকা শ্রমিকদের সরকার ঘোষিত নুন্যতম মজুরী এবং টোটিদের পুরো মজুরী দিতে হবে। আন্দোলনরত শ্রমিকদের আহ্বানে ধর্না কর্মসূচির শেষদিনে ‘পিপ্‌ল্‌স্‌ ব্রিগেড কালচারাল ইউনিট’-এর তরফ থেকে পরিবেশন করা হয় সমরেশ বসুর কালজয়ী নাটক ‘আদাব’।

বর্তমান সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের প্রচেষ্টার বিপরীতে শ্রমিকদের এহেন উদ্যোগ তাঁদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের প্রগতিশীলতাকেই ফুটিয়ে তুলেছে। এই আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে যেতে অঙ্গিকারবদ্ধ ওই কারখানার শ্রমিকরা; আরও বড় প্রতিবাদ কর্মসূচি সংগঠিত করার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here