উজ্জ্বল দত্ত, কলকাতাঃ
কাটমানি, সিন্ডিকেট নিয়ে বারবার রাজ্যে এসে বিভিন্ন মঞ্চ থেকে তৃণমূলকে আক্রমণ করছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। আর এবার রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎ প্রসাদ নাড্ডা ।
বৃহস্পতিবার বিজেপির হেস্টিংস অফিসে বসে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ করলেন জেপি নাড্ডা। তিনি এদিন লক্ষ্য সোনার বাংলা ক্যাম্পেন-এর সূচনা করতে এসে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিলেন। তাঁর সেই সব মারাত্মক অভিযোগ ভোটের আগে রাজ্যের বিরুদ্ধে বিজেপির-র বড় অস্ত্র হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিন জেপি নাড্ডা বলেছেন, “ডেঙ্গির রিপোর্ট বারবার কেন্দ্র চাইলেও দিতে রাজি হয়নি রাজ্য সরকার। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক বলেছিল, রিপোর্ট দিন। মমতাদি তখন এখানে ডাক্তারদের হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, এখান থেকে কোনও রিপোর্ট কেন্দ্রের কাছে পাঠানো যাবে না। ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল কেন্দ্রের। তাদের হাতে কোনও রিপোর্ট তুলে দেওয়া হয়নি। ডেঙ্গির রিপোর্ট পেতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের টিম পাঠানো হয়েছিল বাংলায়। করোনার সময়ও টিম পাঠানো হয়েছিল।
সেই টিমের সদস্য দের গেস্ট হাউস থেকে বেরোতে দেওয়া হয়নি। রাজ্য সরকারের তরফে তাঁদের বলা হয়েছিল, তাঁরা খেয়েদেয়ে আরাম করুন। এভাবেই ওঁদের তো বন্দি করে রেখেছিল মমতার সরকার। বাংলার মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে এখানকার সরকার। একবারও ডেঙ্গি, করোনা নিয়ে প্রকৃত রিপোর্ট কেন্দ্রকে দেয়নি বাংলার এই সরকার।”
সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে বাংলার সংস্কৃতি, গৌরবময় ইতিহাস নতুন করে তুলে ধরা হবে। বৃহস্পতিবার এমনই প্রতিশ্রুতি দিলেন জেপি নাড্ডা। সোনার বাংলা গড়ার এই কর্মযজ্ঞে বাংলার সাধারণ মানুষও অংশ নিতে পারবেন বলে এদিন জানান নাড্ডা। তিনি জানিয়েছেন, সোনার বাংলা গড়ার পরামর্শ দেবে বাংলার জনতা। সবাইকে সুযোগ দেওয়া হবে। পরামর্শ শুনে ও তা লিখে রাখার জন্য কার্যত সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবেন বিজেপি কর্মীরা।
আরও পড়ুনঃ রাজনৈতিক মন্তব্যে আমার প্রতিক্রিয়া দেওয়া ঠিক নাঃ জগদীপ ধনকড়
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি এদিন বলেছেন, ” দু কোটি মানুষের পরামর্শ নেব আমরা। ত্রিশ হাজার সাজেশন বক্স সারা বাংলায় রাখা হবে। দুশোচুরানব্বই টি বিধানসভা কেন্দ্রে ঘুরবে আমাদের সুসজ্জিত ট্যাবলো। ডিজিটালি পরামর্শ দেওয়া যাবে সেখানে। এছাড়া মিসড কল নম্বর থাকবে। তিন মার্চ থেকে কুড়ি মার্চ পর্যন্ত চলবে সোনার বাংলা ক্যাম্পেন। সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে বাংলার মানুষ। এই বাংলায় আয়ুষ্মান ভারত লাগু হবে।
মতুয়া ও নমঃশুদ্র সমাজের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের স্কলারশিপ দেব আমরা। তবে সবার আগে আমাদের লক্ষ্য, বাংলাকে সিন্ডিকেট মুক্ত করা হবে। কাটমানির সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে। গত ষাট থেকে সত্তর বছর ধরে একের পর এক শিল্পপতি বাংলা থেকে বিনিয়োগ তুলে নিয়েছে। সেই বিনিয়োগ বাংলায় আবার ফিরিয়ে আনতে হবে আমাদের।”
এদিন বিজেপির নির্বাচনী কর্মসূচির সূচনা করে নাড্ডা বলেন, “আজ বাংলা যা ভাবে, তা আগামী দিনে গোটা ভারত ভাবে। বাংলার মনীষীরা গোটা দেশকে পথ দেখায়। তাঁদের সেই চিন্তাভাবনাকে একত্র করে বিজেপি নির্বাচনী ইস্তেহার তৈরি করতে চায়। আমরা মনে করি বাংলার মানুষ জানে, কীভাবে সোনার বাংলা বানাতে হবে। তাই আমাদের ইস্তেহারে সাধারণ মানুষের মতামত নেওয়া হবে। মোট দু কোটি মানুষের মতামত আমরা নেব। সাধারণ মানুষের মতামত নিয়েই বাংলা এগিয়ে যাবে।”
আরও পড়ুনঃ নজিরবিহীন নমনীয়তা বামেদের, আইএসএফ কে ভাঙর ছাড়ছে লাল পার্টি
পরে তিনি আরও বলেন,”বিজেপি ক্ষমতায় এলে রাজ্যে চালু হবে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি। চালু হবে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প। কার্যকর করা হবে সপ্তম বেতন কমিশন। একই সঙ্গে বিজেপি ক্ষমতায় এলে সিন্ডিকেট ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলা গড়া হবে। বাংলার গর্ব আমাদের ফিরিয়ে আনতে হবে।
সোনার বাংলা ফিরিয়ে আনতে হবে। বাংলার ইতিহাস গৌরবময়। বিজেপি সেই গৌরবময় ইতিহাস ফিরিয়ে আনতে চায়। কীভাবে এখানকার কৃষিতে উন্নতি করতে হবে, কীভাবে শিল্পে উন্নতি করতে হবে, কীভাবে বাংলার স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নতি করা হবে, সেসব নিয়ে আমরা আগেই পরিকল্পনা করে রেখেছি।”
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584