শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
কলকাতার ময়দান ও হেস্টিংস এলাকায় শহরের পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ ঘোড়াগাড়ি। পর্যটকদের থেকে পাওয়া অর্থে ঘোড়াগুলির মালিকদের উপার্জন এবং খাবারের জোগান দুই-ই হত। কিন্তু লকডাউনের বাজারে পর্যটকের অভাবে মালিকদের মাথায় হাত। আর খাবারের অভাবে রুগ্ন হয়ে পড়েছিল ঘোড়াগুলিও।
এই পরিস্থিতিতে ‘আশারি’ নামক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সহযোগিতায় ময়দান এবং হেস্টিংস মাজার এলাকায় ৪১ জন দরিদ্র ঘোড়ার মালিককে প্রায় ১৫০টি ঘোড়ার জন্য প্রয়োজনীয় খাবার পৌঁছে দিল কলকাতা মাউন্টেড পুলিশ।
ময়দান ও ভিক্টোরিয়া-সংলগ্ন এলাকায় ঘোড়ার পিঠে পর্যটকদের চাপিয়েই রোজগার করতেন এই ঘোড়াগুলির সহিসরা। পর্যটকরা ঐতিহ্যের ভিক্টোরিয়া দর্শনে এসে ঘোড়ার গাড়ি চড়ে শহর ঘোরেন। আবার পর্যটকদের পিঠে করে নিয়ে ঘোরাফেরা করে, এমন অনেক ঘোড়াও আছে।
ঘোড়াগুলির মালিকরা সেগুলিকে হেস্টিংসে দ্বিতীয় হুগলি সেতুর ফ্লাইওভারের তলায় নিয়ে এসে রেখেছেন। সার বেঁধে সেখানে রয়েছে প্রায় শ’দেড়েক ঘোড়া। কিন্তু সেই রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ফলে ঘোড়ার খাবার তো দূর, নিজেদের খাবার জোগাড় করাই অসম্ভব হয়ে উঠেছিল এদের মালিকদের কাছে।
আরও পড়ুনঃ লকডাউনে অনুমতি ছাড়াই এসি বসাতে ‘প্লাগ অ্যান্ড প্লে’ পরিকল্পনা সিইএসসি’র
বার্লি, গমের খোসা ও আরও নানারকমের খাদ্যশস্য মিশিয়ে তৈরি হয় ঘোড়ার খাবার। ঘোড়াগুলির দুরবস্থার কথা জানতে পেরে কলকাতা মাউন্টেড পুলিশ ও ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা যৌথভাবে ঘোড়ার খাবার, দানা ও ভুসি কিনে নিয়ে আসে। যদিও এই খাবারে মাত্র কয়েকদিন চলবে ঘোড়াগুলির। ছোট ঘোড়া বা পনিগুলি তবু ঘাস খেয়ে পেট ভরায়। কিন্তু বড় ঘোড়াগুলির ক্ষেত্রে তা হয় না। তাদের জন্য প্রয়োজন ভুসি ও দানা।
দেড়শো ঘোড়ার জন্য প্রতিদিন প্রায় ৫০০ কেজি খাবার প্রয়োজন। এখন সেই খাবারের দাম ১৫ হাজার টাকা। তবে পরে আবার কি করে এদের খাবারের বন্দোবস্ত করা যায়, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।
এর পাশাপাশি খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে শহরের রাস্তায় এদিক-সেদিক ঘুরে বেড়ানো আরও বেশ কয়েকটি ঘোড়ার কাছেও। এই খবর কলকাতা পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা নিজেই টুইট করে জানিয়েছেন। জানানো হয়েছে। কলকাতা পুলিশের ফেসবুক পেজেও। লকডাউনে অভুক্ত ঘোড়াগুলির মুখে খাবার দিয়ে খুশি পুলিশকর্মীরাও।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584