শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
রাজ্যের গরিব মানুষদের পাশে দাঁড়াতে পুলিশ বদ্ধপরিকর। প্রয়োজনে নিজেরাই টাকা তুলে ফান্ড তৈরি করে কমিউনিটি কিচেন তৈরি করে রান্না করে খাবার পৌঁছে দিয়ে আসছেন। আবার বাসিন্দাদের কাছ থেকে জেনে তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিষেবাও দিচ্ছেন। কিন্তু করোনা আক্রান্ত নিয়ে কলকাতা বেড়ে চলা বিপদে এবার একটি বিশেষ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হল কলকাতা পুলিশ। ঠিক হয়েছে, সংক্রমণ এড়াতে কনটেনমেন্ট জোনে পাড়ার স্বেচ্ছাসেবকের মাধ্যমেই সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই কলকাতা ৫০০ জনেরও বেশি করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে। ২৩০ টি রাস্তাকে কনটেনমেন্ট জোন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আবার কলকাতা পুলিশেও ৪ জন করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছেন। এই পরিস্থিতিতে গরিব মানুষদের পাশে দাঁড়াতে কনটেনমেন্ট জোনে এই অভিনব প্রক্রিয়া শুরু পুলিশের।
কনটেনমেন্ট জোনে সেই এলাকায় এক বা দু’জনকে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। তাঁর দায়িত্ব সেই পাড়ায় যতগুলি বাড়ি রয়েছে তাদের খাদ্য সামগ্রী থেকে শুরু করে ওষুধ, সবই ঘরে পৌঁছে দেওয়া। কনটেনমেন্ট জোন এলাকার বাসিন্দাদের সবকিছুতেই পাশে থাকবেন সেই স্বেচ্ছাসেবক। ইতিমধ্যেই কলকাতায় বেশ কিছু জায়গায় পাড়ার স্বেচ্ছাসেবকদের সাহায্য নিয়ে পরিষেবা দেওয়ার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। অন্য জায়গাতেও খোঁজ চলছে এরকম স্বেচ্ছাসেবকের।
পুলিশ সূত্রে খবর, কোনও এলাকা কনটেনমেন্ট জোন হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পর সর্বপ্রথম ওই এলাকাকে সিল করে দেওয়া হচ্ছে। তারপর বাসিন্দাদের জানানো হচ্ছে, যে কোনও প্রয়োজনে পাড়ার সেই স্বেচ্ছাসেবকের সাহায্য নেওয়ার জন্য। পাড়ার প্রত্যেকের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে সেই স্বেচ্ছাসেবকের মোবাইল এবং হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর। বাজার, ওষুধ বা অন্যকিছু প্রয়োজন হলে ওই স্বেচ্ছাসেবকের নম্বরে জানাতে বলা হচ্ছে।
স্বেচ্ছাসেবকের কাজ, পাড়ার লোকেদের থেকে তাদের প্রয়োজনীয়তা ফোনে বা হোয়াটসঅ্যাপে জেনে নিয়ে রোজ একটি তালিকা তৈরি করা। তারপর সেই প্রয়োজনীয় জিনিসের তালিকা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া। স্বেচ্ছাসেবকও যেহেতু একই এলাকার বাসিন্দা, তাই তিনি কখনই বাইরে বেরবেন না। রোজকার তালিকা তুলে দেবেন থানার নোডাল অফিসারের কাছে। তালিকা ধরে সব জিনিস এনে পুলিশ সেগুলি স্বেচ্ছাসেবকের কাছে পৌঁছে দেবে। তারপর স্বেচ্ছাসেবক সবার ঘরে পৌঁছে দেবেন। বিল হাতে দিয়ে টাকাও নিয়ে আসবেন।
বিল অনুযায়ী টাকা এনে কনটেনমেন্ট জোনের ঠিক বাইরে একটি জায়গায় টাকা রেখে দেবেন। তারপর পুলিশ সেই টাকা স্যানিটাইজ করে নির্দিষ্ট দোকানে পৌঁছে দেবে। এভাবেই স্বেচ্ছাসেবকের মাধ্যমে কনটেইনমেন্ট জোনের বাসিন্দাদের সবরকম পরিষেবা দেওয়া শুরু হয়েছে। তবে লোকের বাড়ি বাড়ি গেলে সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে অনেকেই এখনো স্বেচ্ছাসেবক করতে রাজি হননি। তাই যেসব এলাকায় স্বেচ্ছাসেবক মিলছে না, সেখানে আপাতত থানার পুলিশকর্মীরাই স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে সাহায্য করছেন কনটেনমেন্ট জোনের বাসিন্দাদের। তবে স্বেচ্ছাসেবক থাকলে দু’তরফেই যে সংক্রমণ প্রতিরোধ করা যাবে, তা সচেতন করতে ওই এলাকাগুলিতে হ্যান্ড মাইকিং করে সাধারণ মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করছে পুলিশ।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584