জৈদুল সেখ, মুর্শিদাবাদঃ
“হয়তো আমাকে কারো মনে নেই আমি যে ছিলাম এই গ্রামেতেই”… কিশোর কুমারের এই গান আজ বাস্তবায়ন হতে দেখা গেল মুর্শিদাবাদের বড়ঞা থানার কয়থা গ্রামে।
সকলের কাছে মৃত জানার পরেও গ্রামে ফিরলেন গ্রামেরই বাসিন্দা নিমাই খান। হ্যাঁ, ঠিকই শুনছেন বছর ৭১এর এই বৃদ্ধের নাম নিমাই খান। বাড়ি মুর্শিদাবাদ জেলার বড়ঞা থানার কয়থা গ্রামে।
পরিবারের কাছে তার মৃত্যু হয়েছিল আজ থেকে ঠিক ৫ বছর আগে। তার মৃত্যুর পর তার নামে থাকা সমস্ত সম্পত্তিও বিক্রি করে দিয়েছিল পরিবারের লোকজন। এমনকি তাঁর মৃত্যুর খবর বিশ্বাস করতে না পেরে শোকের জেরে বছর দুয়েক আগে মৃত্যু হয় তার স্ত্রীরও।
অল্প মানসিক ভারসাম্যহীন এই নিমাই খান মারা গেছে সেটা জানত গোটা কয়থা গ্রামবাসীই। তবে অবাক কান্ড ঘটল আজ?কয়থার বাসস্ট্যান্ডে আজ বাস থেকে নামলেন পাঁচ বছর আগে মৃত্যু হয়ে যাওয়া সেই নিমাই খান!
পরে সেখান থেকে টোটো করে তার বাড়িতে প্রবেশ করতেই, তাকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ল গ্রামের লোকজন! তার ছয় মেয়ে ও তিন ছেলে হঠাৎ এভাবে তাকে দেখে আলিঙ্গন করতে গেলেই কান্নায় ভেসে গেল বছর ৭১ -এর বৃদ্ধ নিমাই খানের চোখ দুটি।
আরও পড়ুনঃ জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে পঞ্চায়েত প্রধানকে মারধরের অভিযোগ বহরমপুরে
পরিবারের লোকজন জানিয়েছে, পারিবারিক অশান্তির কারণে আজ থেকে পাঁচ বছর আগে পরিবার ছেড়ে ছিলেন নিমাই খান। তারপর বিভিন্ন জায়গায় থাকার পর সে ছিল বিহারের মুজাফোর এলাকায়। সেখানে তাকে মিথ্যা কিডনাপিং অপরাধে দীর্ঘ তিন বছর বসত করতে হয়েছে সেখানকার পুলিশ হেফাজতেও। পরে মাসখানেক আগে তিনি বেকসুর খালাস পান এবং সেখানকার এক মহিলা আইনজীবী তার খোঁজের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন জেলায় প্রশাসনিক মহলে তার ছবি সহ পরিচয় পাঠালে তার খবর পাওয়া যায়। বড়ঞা থানা থেকে পরে বড়ঞা ব্লক যুগ্ম সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক ও বড়ঞা প্রশাসনের সহযোগিতায় তার পরিবারের লোকজন তাঁকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন। বৃহস্পতিবার তিনি বাড়ি ঢুকতেই তাকে দেখার জন্য ঢল নামে গ্রামবাসীদের।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584