শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
রাজ্যজুড়ে করোনা সংক্রমণে হিসেব রাখতে রাখতে স্বাস্থ্য ভবনের কর্মীরা নিজেরাই সংক্রামিত হয়ে পড়েছেন। বুধবার পর্যন্ত খবর অনুযায়ী, স্বাস্থ্য ভবনের কন্ট্রোল রুমে ১ নম্বর সেলের ১৪ জনের এবং ২ নম্বর সেলের ৬ জনের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। রাজ্যের করোনা লড়াইয়ের মূল ‘ওয়ার রুম’ স্বাস্থ্য ভবন যাতে কর্মীর অভাবে থমকে না যায়, তার জন্য সপ্তাহে তিন দিন অফিস করতেই হবে সবাইকে—এই মর্মে নির্দেশ জারি করল রাজ্য স্বাস্থ্য প্রশাসন।

প্রসঙ্গত, স্বাস্থ্য ভবনে করোনা আতঙ্ক ঢুকে পড়তেই অন্যান্য সরকারি অফিসের মতোই হাজিরা এড়াছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। কন্ট্রোলরুমে একের পর এক চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মী পজিটিভ আসায় কী পদক্ষেপ করা হবে–সে নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকও হয় স্বাস্থ্যভবনে। তবে খাস স্বাস্থ্যভবনেই আক্রান্তদের ‘কনট্যাক্ট ট্রেসিং’ ঠিকমতো হচ্ছে না বলে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন কর্মী-আধিকারিকদের একাংশ।
করোনা রোগীদের চিকিৎসার সঠিক বন্দোবস্ত করা থেকে শুরু করে তাঁদের সংস্পর্শে এসেছেন (কনট্যাক্ট) কারা, কোয়ারান্টাইনে থাকাকালীন সেই কনট্যাক্টদের কারও উপসর্গ দেখা দিলে টেস্টের ব্যবস্থা—সব দায়িত্বই সামলায় স্বাস্থ্যভবনের করোনা কন্ট্রোল রুম। তাই কঠিন পরিস্থিতিতে দফতর সচল রাখতে এই নির্দেশিকা জারি করল স্বাস্থ্য ভবন।
আরও পড়ুনঃ তৃণমূল জমানায় ৯০ শতাংশ দুর্নীতিই নিয়ন্ত্রণে! সাফাই মুখ্যমন্ত্রীর
জানা গিয়েছে, দফতরের মূল ভবনের দু’টি পাশাপাশি ঘরে কাজ করে কন্ট্রোল রুমের সেল-১ ও সেল-২। সূত্রের খবর, ক’দিন আগেই ১ নম্বর সেলের এক মেডিক্যাল অফিসারের জ্বর আসে। তারপরই তড়িঘড়ি সেখানে কর্মরত চিকিৎসক, আধিকারিক এবং কর্মীদের করোনার টেস্ট করা হয়। ২ নম্বর সেলের কর্মীদের সঙ্গে ১ নম্বরের কর্মীদের নিয়মিত যোগাযোগ থাকায় সেখানেও টেস্ট করানো হয়। তারপরেই এই ভয়াবহ রিপোর্ট সকলের সামনে আসে।
আরও পড়ুনঃ রাজ্য সরকারি কর্মীদের নিয়মমাফিক বেতন বৃদ্ধির ঘোষণা নবান্নের
এক কর্মীর কথায়, ‘তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে আমাদের টানা ডিউটি চলছে। অনেক বার বলা সত্ত্বেও আমাদের ছুটি দিয়ে কোনও দ্বিতীয় টিমকে আনা হয়নি। বদ্ধ ঘরে বসে দিনের পর দিন কাজ করে যাওয়ার কারণেই এভাবে ছড়াল সংক্রমণ। একটা সময়ে এটা হওয়ারই ছিল। আক্রান্তদের কনট্যাক্ট ট্রেসিংও এখনও পর্যন্ত ঠিক ভাবে শুরু হয়নি। প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে একে কাজ করবে? ’
স্বাস্থ্য দপ্তরের অন্য কিছু বিভাগেও ইতিমধ্যেই করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন কর্মীরা। স্বাস্থ্যসাথী ভবনে করোনা আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসায় সোমবারই ৫০ জনের আরটি-পিসিআর টেস্টে করা হয়েছে। একই দিনে স্বাস্থ্যভবনের অন্দরে গণহারে র্যা পিড অ্যান্টিজেন টেস্ট হওয়ার পরেই ভয়ে কর্মীর সংখ্যা কমেছে। কিন্তু রাজ্যের উদ্বেগজনক করোনা পরিস্থিতি স্বার্থে এ নির্দেশিকা জারি করল স্বাস্থ্য ভবন।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584