ভোট শেষ,প্রিয়জন ছেড়ে পেটের তাগিদে কাজে ফেরার পালা

0
66

পিয়া গুপ্তা,উত্তর দিনাজপুরঃ

Migrate labours returned back at work
নিজস্ব চিত্র

ভোট উৎসব শেষ তাই এবার কাজে ফেরার পালা উত্তর দিনাজপুরের শ্রমিকদের।

ভোট মানেই শুধু গণতন্ত্র,প্রচার ও হার জিত নয় ভোট মানে ঘরে ফেরার পালা। প্রিয়জনকে নিয়ে ভোট মুখে যাওয়া।ভোট উৎসবে যোগদান দিতে উত্তর দিনাজপুর জেলার বহু শ্রমিকেরা এসেছিলেন ভিন রাজ্য থেকে এখন ভোট শেষে তাই বাড়ির প্রিয়জনদের ছেড়ে তাদের আবার ফিরে যাওয়ার পালা।

Migrate labours returned back at work
উপছে পড়া ভিড়ে কাজে ফেরার পালা।নিজস্ব চিত্র

প্রতিবার ভোট কিংবা পুজোর ছুটিতে নিজেদের প্রিয়জনদের সাথে কিছু সময় ছুটি কাটাতে পারেন ভিন রাজ্যে কর্মরত শ্রমিকেরা।উত্তর দিনাজপুর জেলার বহু বেকার যুবকরা প্রতিদিন কাজের খোঁজে বেরিয়ে পড়েন বিহার,উত্তরপ্রদেশ,দিল্লি সহ বহু জায়গায়।

নিজেদের এলাকায় কাজ না থাকায় বহু শিক্ষিত ছেলে মেয়েরা বেকারত্বের জ্বালায় প্রতিদিন ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজে যুক্ত হচ্ছেন।ভোট শেষ তাই কিছুদিনের ছুটি কাটিয়ে আবারও পরিবার ছেড়ে ফিরে যেতে হচ্ছে তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে।রায়গঞ্জ
লোকসভা কেন্দ্র এ ভোট উপলক্ষে ভিন রাজ্যের শ্রমিকদের নিজ নিজ ঘরে ফিরিয়ে অনার জন্য কোমর বেঁধে মাঠে নেমে পড়েছিলেন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা। সারা বছর খোঁজ না নিলেও কিছু আসে যায় না তবে ভোট যে বড়ই দামী।তাই যে ভাবেই হোক প্রতিটি রাজনৈতিক দলই ভোটের সময় নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য শ্রমিক দের বাড়ি গিয়ে ফোনে যোগাযোগ করে তাদের ভিন রাজ্য থেকে বাড়ি ফিরিয়ে আনার জন্য তৎপর হয়ে উঠেছিলেন। কোনো কোন রাজনৈতিক নেতারা তো আবার শ্রমিক দের নিজের গ্রামে ফিরিয়ে আনার জন্য তাদের পুরো খরচ ও বহন করতে এক পায়ে রাজি হয়ে পড়েন । একটা ই আশা ভোট টা যাতে সেই রাজনৈতিক নেতার দিকেই যায়।তবে এখন ভোট শেষ তাই এখন নিজেদের কাজে ফিরে যাচ্ছেন শ্যাম, বিনয়,হরিশ,মিরা,হেলা দের মতো বাকি শ্রমিকেরা।বিএ পাশ করা বছর সাতাশের শ্যাম সরকার জানান ভোটের সময় ফোন করে ডেকেছিল ভোট দিতে,এখন ভোট শেষ তাই আবার কাজে যাচ্ছি। ধনকোল এর বাসিন্দা বীনয় সাহা বলেন
ভোটের জন্য এসেছিলাম মা।আমাদের এলাকায় কাজ না থাকায় বাইরে যেতে বাধ্য হচ্ছি।খেটে খাওয়া গরীব মানুষরা গ্রামে কাজ না থাকায় দলে দলে গ্রাম ছাড়ছেন কাজের খোঁজে।কাজ না থাকায় খাদ্যভাব থেকে বাঁচতে ছেলে মেয়েদের ‘পুব খাটতে’ যাচ্ছি বাবু।এমনি জানালেন রসিদপুরের বাসিন্দা চল্লিশ বছরের খোকন দুলে।তিনি আরো বলেন শুধু আমি ও আমার স্ত্রী ছাড়া গ্রামের আরোও ১৫ জন যাচ্ছি বিহারে,সঙ্গে আমার শিশুপুত্র কুশ দুলে কেও নিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছি।ভোট শেষ এখন কি করব কাজ কর্ম ছেড়ে বাড়িতে বসে।কোন নেতা তো আসবে না এক বেলা না খেয়ে থাকলে।আমাদের ছেলে কে কার কাছে রেখে দিয়ে যাব’? কুশ দুলে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র।বাবা মা কাজের খোঁজে বাইরে যাওয়ার কারণে পড়াশোনা ছেড়ে ওকেও যেতে হচ্ছে। ফলে পড়াশোনায় ছেদ পড়ছে কুশের মতো কয়েকশো ছাত্রছাত্রীর। গ্রামের সায়বানী দুলে (৪৮), মীরা দুলে (৪০),হেলা রানী দুলে (৫০), লক্ষী দুলে,তারা দুলে আরও অনেকে একসাথে বলে ওঠে এখানে থাকলে না খেতে পেয়ে মারা যাব।ভোট শেষ আর কত দিন বাড়িতে বসে থাকবো এখানে কাজ কই ?তাই বাইরে যাব বাপু। একে একে প্রতিদিন কালিয়াগঞ্জ থেকে দিল্লি ও কলকাতার ট্রেনে চড়ে চলে যাচ্ছেন নিজেদের কর্মস্থলে।

আরও পড়ুনঃ পঞ্চায়েতের পর ফের ভোট বয়কট চকমাধব গ্রামের বাসিন্দাদের

ভোট নিয়ে কোন মাথা ব্যাথা নেই বিনয়, মিরা,হেলা,লক্ষী দের।এদের বক্তব্য ভোট দিতে হয় তাই দি। তবে যে বা যারাই আসুক তাতে এদের কোন উন্নতি হবে না বলেই বিশ্বাস এদের।কারণ পাঁচ বছর পর পর সরকারের বদল ঘটলেও এই বাইরে চলে যাওয়া খেটে খাওয়া মানুষ গুলোর কোনো পরিবর্তন আসবে না।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here