নিজস্ব সংবাদদাতা, পশ্চিম মেদিনীপুরঃ
শুক্রবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশপুর ব্লকের আনন্দপুরে তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে এক বিশাল জনসভার আয়োজন করা হয়। ওই জনসভায় বক্তব্য রাখেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র, তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য, রাজ্যসভার সাংসদ মানস ভুঁইয়া,তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি, বিধায়ক দিনেন রায় ও শিউলি সাহা। এদিন উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা গোপাল সাহা, মহম্মদ রফিক সহ আরো অনেকে। প্রকাশ্য সমাবেশে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়েছিল।
ওই সমাবেশে মদন মিত্র তার ভাষণে বলেন, “২০০১ সালে, ২০০৪ সালে পুরসভা ছিল না,জেলা পরিষদ ছিলনা, তখন আমি ছিলাম তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক। তখন লোকসভার ৫৪৩ টি আসনের মধ্যে একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ ছিলেন। তখন অনেকের টিটকারি শুনেছিলাম। তখন আমরা বলেছিলাম ৪১ বনাম ১ এর লড়াই চলো আবার ঘুরে দাঁড়ায়।” তিনি বলেন, “আমি কে, কিছুই নই। যদি আমার গা থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের জার্সিটা খুলে নেয় তাহলে রাস্তার আমি ভিখারী হয়ে যাবো। আমরা জার্সি বদল করিনা তাই আমি বলে কেউ নয় কারণ আমরা একটা দল করি যে দলের নেত্রী হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুনঃ অগ্নিকাণ্ডে কোভিশিল্ড সুরক্ষিত থাকলেও ক্ষতিগ্রস্ত অনান্য ভ্যাকসিন
আমরা কেউ চাকর-বাকর নই আমরা সবাই দলের কর্মী। আমরাও ধাপে ধাপে উঠে এসেছি।” তিনি আরো বলেন যে, “আমার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দোশ করেছেন বলে বলব না, কিন্তু কোথাও একটা ভুল হয়েছিল কারণ যে চেয়ারে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ বসে ছিলেন সেই চেয়ারে দিদি বেহালার কানন যাকে এখন শোভন-বৈশাখী নামে চেনে তাকে বসিয়েছিলেন। কাঁচরাপাড়ার মুকুল কে রেল মন্ত্রী করে ছিলেন। আর শুভেন্দু অধিকারী যদি পাঁচ মিনিটের মধ্যে সব পদের নাম বলতে পারে তাহলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেবো।” তিনি এও বলেন, “দিদি বোধহয় একটা বিরাট ভুল করেছিলেন সেটা হল শুভেন্দু ও রাজীবকে নোবেল দিতে পারেনি। যদি ওদের নোবেল পুরস্কার দিত তাহলে ওদের ভালো হতো।” শুভেন্দু অধিকারী কে কটাক্ষ করে মদন মিত্র বলেন, “শান্তি কুঞ্জ দেখেছিস অশান্তি কুঞ্জ দেখিসনি, আমরা ছোট থেকে অশান্তি দেখেছি। কেশপুরে মিছিল করতে এসে জামশেদ ভবনের সামনে কি সমস্যা হয়েছিল তা সকলেই জানেন। আমাদের নিরাপত্তা পুলিশ দিতে পারবে না বলে জানিয়ে দিয়েছিল।”
আরও পড়ুনঃ কপিরাইট লঙ্ঘনের তকমা নিয়েই মুক্তি পেল ‘দ্য হোয়াইট টাইগার’
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ২২১ টি আসনে জয়লাভ করে তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসবেন এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হবেন বলে জানান মদন মিত্র।
তিনি শুভেন্দু অধিকারীর নাম করে বলেন, “ভয় দেখাচ্ছেন। কাকে ভয় দেখাচ্ছেন? ভয় দেখাবেন না। নন্দীগ্রাম কেশপুর তৃণমূলের ছিল,আগামী দিনেও থাকবে। যদি নির্বাচনের আগে ওদের হাতে তলোয়ার দেখা যায়, সেই তলোয়ার যদি ছাড়িয়ে নিতে না পারি তাহলে আমি মদন মিত্র নয়।” তিনি বলেন, “নরেন্দ্র মোদী গরুর পূজা করেন। ২০১৪ সাল থেকে ১৮ সাল পর্যন্ত সারা পৃথিবীতে গরুর মাংস বিক্রি করেছে সব থেকে বেশি এই নরেন্দ্র মোদি সরকার। আর সেইসব গরুর মাংস বিক্রেতাদের মালিক হলেন সতীশ আগরওয়াল,সুনীল কাপুরের মত মানুষেরা। এরপরে বড় বড় কথা বলেন এ কথাটা মুসলমান মানুষেরা জানেন না। তাদের ভালো করে জানা উচিত।” তিনি বলেন,আমি হিন্দুর ছেলে আমিও গরুর পুজাে করি, গরুর লেজ ধরে বলি বৈতরণী পার করো। কিন্তু নরেন্দ্র মোদি সবথেকে বেশি গরুর মাংস বিক্রি করে মুনাফা অর্জন করেছেন বলে জানান মদন মিত্র।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584