নিজস্ব সংবাদদাতা, পশ্চিম মেদিনীপুরঃ
মৎস্য দপ্তর পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে, বাইশ লক্ষ ছত্রিশ হাজার টাকা মূল্যের আধুনিক মাছ চাষের প্রকল্পে-র মধ্যে তেরো লক্ষ দু’হাজার টাকার মূল্যে মাছ, মাছের খাবার, চুন ও এয়ারেটার মেসিন প্রভৃতি উপকরন বিনামূল্যে মাছ চাষিদের দিয়ে চাষে প্রযুক্তিগত সহায়তা করে মাছের উচ্চ উৎপাদনমূলক রূপায়ন হচ্ছে রাজ্য জুড়ে।
রাজ্যে প্রথম কোনো মহিলা মাছ চাষির হাত ধরে রূপায়িত হচ্ছে মাছের উচ্চ উৎপাদনশীলতার আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ।
রাজ্য জুড়ে মাছের উৎপাদন বাড়াতে জেলায় জেলায় রূপায়ন করা হচ্ছে ‘ময়না মডেল’। সেই সূত্র ধরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হলদিয়া ব্লকেও রূপায়িত হচ্ছে ময়না মডেল। সরকারী এই প্রকল্প রূপায়ন করে দেখাচ্ছে হলদিয়া ব্লকের মহিলা মাছ চাষি আরতী বর্মন।
প্রায় চ্যালেঞ্জের মতো গ্রহন করেছেন এই প্রকল্প। মৎস্য দপ্তরের প্রযুক্তিগত সহায়তায় একজন মহিলা মাছ চাষির উদ্যোগে উৎসাহিত হবে অন্যন্য মাছ চাষি। বাজারে মাছের চাহিদা পূরনের জন্য প্রয়োজন জলাশয়ে উচ্চ উৎপাদনশীলতা আর এতে মাছের সার্বিক উৎপাদন বাড়বে।
আরও পড়ুনঃ মৎস্য ব্যবসায়ীদের পেশাগত সামগ্রী প্রদান
কি এমন এই আধুনিক প্রযুক্তি যার মাধ্যমে উচ্চ উৎপাদনশীলতা সম্ভব ? এই বিষয়ে হলদিয়ার মৎস্যচাষ সম্প্রসারন আধিকারিক সুমন কুমার সাহু জানান, বায়ুসঞ্চালন যন্ত্রের মাধ্যমে জলাশয়ে বাড়তি অক্সিজেন দিয়ে প্রায় ১৫০ গ্রামের ওপর চারামাছ মজুদ করে বৈজ্ঞানসম্মত ভাবে চাষের মাধ্যমে জলাশয়ে মাছের উৎপাদন বাড়ানো পদ্ধতি।
‘ময়না মডেল’ রাজ্য মৎস্য দপ্তরের নতুন এক প্রকল্পের আলঙ্কারিক নাম। যার মুখ্য উদ্দেশ্য রাজ্যে মাছের উৎপাদন বাড়ানো। রাজ্য জুড়ে জেলায় জেলায় বৃহৎ আকারের জলাশয়ে এই প্রকল্প রূপায়ন করা হচ্ছে।
জলাশয়ের আয়তন কমপক্ষে ২ হেক্টর এবং বর্তমান মাছের উৎপাদন প্রতি হেক্টর বছরে ৩-৪ মেট্রিক টন এমন জলাশয়ে এই প্রকল্প রূপায়ন করা হচ্ছে। এই প্রকল্পে লক্ষ মাত্রা মাছের উৎপাদন প্রতি হেক্টর বছরে ১২ মেট্রিক টন ।
ইতিমধ্যে আরতি বর্মনের জলাশয়ে পরিদর্শন করে অভিভূত হন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সহ মৎস্য অধিকর্তা সৌরীন্দ্র জানা।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলাপরিষদের মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ আনন্দময় আধিকারি মহিলা মাছ চাষির মাধ্যমে এরকম আধুনিক প্রযুক্তির রূপায়নকে রাজ্যে এক অনন্য দৃষ্টান্ত বলে উল্লেখ করেন।
রাজ্যে মাছের উৎপাদন বাড়াতে হলদিয়া ব্লকে এরকম প্রকল্প রূপায়নে খুশি হলদিয়ার বিডিও তুলিকা দত্ত ব্যানার্জী, সভাপতি সুব্রত কুমার হাজরা ও সহ সভাপতি সাইফুল ইলসাম । আনুষ্ঠানিক ভাবে আরতী দেবীর জলাশয়ে মাছ ছাড়া হয়।
মাছ চাষি আরতী বর্মনের জলাশয়ে বিনামূল্যে ১৫০ গ্রাম ওজনের ২৪ হাজারটি চারা মাছ ছাড়া হয়। সঙ্গে ১০০০ কেজি চুন ও দেওয়া হয়। জলাশয়ে স্থাপন করা হয়েছে ২ হর্স পাওয়ারের দুটি এয়ারেটার মেসিন ( বায়ুসঞ্চালন যন্ত্র) ।
এদিন উপস্থিত ছিলেন হলদিয়া পঞ্চায়েত সমিতির মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ গোকুল মাঝি ও মৎস্যচাষ সম্প্রসারন আধিকারিক সুমন কুমার সাহু। আগামীতে ১৫ হাজার কেজি মাছের খাবারও বিনামূল্যে দেওয়া হবে বলে মৎস্যদপ্তর সূত্রে জানা গেছে।
মৎস্য দপ্তরের এমন প্রকল্প পেয়ে খুশি রাজ্য ও জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত মাছ চাষি আরতি বর্মন।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584