কবির হোসেন, মুর্শিদাবাদঃ
এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় সালারের পারভেজ হোসেন পেয়েছে ৬৬৮ নম্বর । ছেলের এত নম্বর পাওয়ায় খুশি হওয়ার পাশাপাশি ভীষণ সমস্যায় পড়েছেন পারভেজের মা পারভীন বিবি । ২০০৫ সালে ভরতপুরের গড্ডা গ্রামের ফারুক হোসেনের সাথে বিয়ে হয় পারভীন বিবির কিন্ত ২০০৭ সালে পারিবারিক অশান্তির জেরে ১০ মাসের ছেলে পারভেজ কে সঙ্গে নিয়ে স্বামীর বাড়ি ছাড়েন পারভীন বিবি সেই শেষ তার পর থেকে বাবা ফারুক হোসেনের সাথে আর কোনো যোগাযোগ হয় নি ছেলে পারভেজের। শেষমেশ ছেলে কে নিয়ে মায়ের বাড়িতে আশ্রয় নেয় মা পারভীন বিবি সালার থানার অন্তর্গত পুনাশী গ্রামে । সেখানে ভাই ইলিয়াসের সাহায্য নিয়ে ছেলেকে পড়াশোনা করান এবং সংসার চালান। কিন্তু তারও আর্থিক অবস্থা খুব ভালো নয় । ছোট থেকেই পারভেজ অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র। তার পড়াশোনার প্রতি একাগ্রতা দেখে তার মা পারভীন বিবি বিড়ি বাঁধার কাজ শুরু করেন একমাত্র সন্তানের পড়াশোনার খরচ বহন করার জন্য ।যদিও এই বিষয়ে অনেক ক্ষেত্রে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তাঁর ভাই ইলিয়াস শেখ ও উজুনিয়া আল-আমীন মিশন কর্তৃপক্ষ ।
কিন্তু বাধ সাধলো এই বছর মাধ্যমিক ৬৬৮ নম্বর , সে অংকে ৯৮ ভৌতবিজ্ঞান ৯৬ ও জীবন বিজ্ঞানে ৯৯ ভবিষ্যতে ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করায় ভীষণ সমস্যায় পড়েছে মা পারভীন বিবি । নুন আনতে পান্তা ফুরায় পরিবারের সদস্য, তার উপর স্বামী পরিত্যক্তা পারভীন বিবি দীর্ঘদিন ধরে মায়ের বাড়িতে বিড়ি বেঁধে কোন ক্রমেই দিন গুজরান করছে । এমতাবস্থায় ছেলের উচ্চশিক্ষার জন্য পড়াশোনার খরচ কিভাবে করবেন সে চিন্তাই রয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুদের পাশে দাঁড়াতে কেশপুরের উত্তর শীর্ষাতে রক্তদান শিবির
ছোট থেকেই অত্যান্ত মেধাবী পড়াশোনায় মনোযোগী এলাকায় কৃতী ছাত্র হিসেবে পরিচিত পারভেজ । পরিচিত আত্মীয়-স্বজনদের পরামর্শে তার একমাত্র সন্তানকে সালার থানার অন্তর্গত উজুনিয়া আল-আমিন মিশনের ভর্তি করেন। স্কুলে পড়াশোনার পরিবেশ ও সুযোগ সুবিধা তার পড়াশোনার ইচ্ছাশক্তিকে আরও বাড়িয়ে দেয এবং শিক্ষকদের সহায়তায় নিজেকে ঘষে-মেজে আরো উপযোগী করে তোলে তারই ফলস্বরূপ মাধ্যমিকে এবছর ৬৬৮ নম্বরকে মিশনের স্কুলের তৃতীয় হয়েছেন যারপর নাই খুশি আত্মীয়-স্বজন থেকে বন্ধু-বান্ধব সকলেই কিন্তু বাধ সাধলো ভবিষ্যতে তার পরিকল্পনা নিয়ে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করে আগামী দিনে ডাক্তার হতে চান এবং গ্রামের গরিব মানুষদের সেবা করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। কিন্তু তার এই ইচ্ছাপূরণের প্রধান অন্তরায় হচ্ছে অর্থ , অর্থিক দিক দিয়ে দুর্বল এই এই মা তার ছেলের ইচ্ছাকে কী করে পূরণ করবে তার চিন্তায় এখন বিনিদ্র। স্কুলের ভর্তি থেকে বইপত্র ও আনুষঙ্গিক পড়াশোনার খরচ কোথা থেকে জোগাড় করবেন তা নিয়ে চিন্তিত এই অসহায় মা ।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584