নিজস্ব সংবাদদাতা, ওয়েব ডেস্কঃ
মানব কম্পিউটার শকুন্তলা দেবীর কথা তো সকলেরই জানা। এবার তাঁর মতো আরও এক গণিতবিদের উত্থান ঘটলো ভারতে। নাম নীলকান্ত ভানু প্রকাশ। বয়স মাত্র কুড়ি।
গণিতবিদ শকুন্তলা দেবী যেমন মুখে মুখে অঙ্ক কষতেন, ক্যালকুলেটরও লাগত না, এই তরুণও ঠিক তাই। নিমেষের মধ্যে জটিল অঙ্কের সমাধান করতে পারেন। কম্পিউটারের থেকেও দ্রুত। ক্যালকুলেটরের প্রয়োজনই হয় না। তাই বিশ্বের দ্রুততম ‘মানব ক্যালকুলেটর’-এর শিরোপা পেলেন হায়দ্রাবাদের বাসিন্দা নীলকান্ত ভানু প্রকাশ।
বিশ্বের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন নীলকান্ত। সম্প্রতি লন্ডনে বসেছিল মাইল্ড স্পোর্টস অলিম্পিয়াড (এমএসও) প্রতিযোগিতার আসর। সেই প্রতিযোগিতার মেন্টাল ক্যালকুলেশন ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতীয় তরুণের প্রতিভা নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা বিশ্বকেই। ২৯ জন প্রতিযোগীকে পিছনে ফেলে প্রথমবার ভারতকে সোনা এনে দিয়েছেন নীলকান্ত ভানু প্রকাশ।
মেন্টাল ক্যালকুলেশন ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে এর আগে ভারত থেকে কেউ সোনা জেতেননি। নীলকান্তই প্রথম। লন্ডনে এ বছর মাইন্ড স্পোর্টস অলিম্পিয়াডের প্রতিযোগিতা ভার্চুয়ালি হয়েছিল। ব্রিটেন, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, ফ্রান্স, গ্রিস সহ বিশ্বের ১৩টি দেশের মোট ৩০ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করে।
আরও পড়ুনঃ মহামারির ধাক্কায় বেমানান! কেএফসি’র আঙুল চাটা স্লোগান আবছা
ভারত থেকে ছিলেন নীলকান্ত। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন শুধু নয়, তরুণের ব্যতিক্রমী প্রতিভা দেখে অবাক বিশ্বের তাবড় গণিতবিদরাও। ভারতের গর্ব শকুন্তলা দেবীর মতোই নীলকান্ত ভানু প্রকাশের নামও হয়েছে ‘হিউম্যান ক্যালকুলেটর’।
ইতিমধ্যেই তিনি ভেঙে দিয়েছেন স্কট ফ্ল্যান্সবার্গ ও শকুন্তলা দেবীর রেকর্ডও। এই সম্মানের পাশাপাশি তাঁর ঝুলিতে রয়েছে আরও চারটি বিশ্বরেকর্ড ও ৫০ টি লিমকা রেকর্ড। বর্তমানে নীলকান্ত দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সেন্ট স্টিফেন্স কলেজের গণিত অনার্সের ছাত্র।
আরও পড়ুনঃ ১ সেকেন্ডেই ডাউনলোড হবে নেটফ্লিক্সের সব কনটেন্ট! ইন্টারনেটের স্পিডে রেকর্ড লন্ডনের গবেষকদের
রেকর্ড গড়ার পর তিনি বলেন, গণিতে বিশ্বের দরবারে দেশের নাম উজ্জ্বল করত পেরে তিনি গর্বিত। ভারতের বহু ছাত্রের মধ্যে অঙ্ক নিয়ে যে ভীতি রয়েছে, আগামী দিনে তা তিনি দূর করতে চান। নীলকান্ত জানিয়েছেন, দেশের সর্বশিক্ষা অভিযানের একটা অংশ হতে পারে এই ‘ভিশন ম্যাথ’।
দেশের মেধাবী পড়ুয়াদের এমনভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে যাতে জাতীয় স্তরে শুধু নয় ভারতীয় পড়ুয়াদের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে আন্তর্জাতিক স্তরেও। এই লক্ষ্যের দিকেই এগোতে চান ‘হিউম্যান ক্যালকুলেটর’ নীলকান্ত ভানু প্রকাশ। কোনও সম্মানজনক প্রতিযগিতায় এই প্রথম অংশগ্রহণ নীলকান্তর। আর প্রথম সুযোগেই বাজিমাত।
আরও পড়ুনঃ দেশের দীর্ঘতম রোপওয়ে চালু হল অসমে
ক্যালকুলেটরে অঙ্কের ডিজিট টাইপ করে যে কোনও জটিল হিসেব বের করতে যতটা সময় লাগে, তার থেকেও দ্রুত মুখে মুখেই অঙ্ক কষে দিতে পারেন নীলকান্ত। যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ তো বটেই শতকরা হিসেব থেকে বড় সংখ্যার বর্গমূল বের করা, সবই তাঁর কাছে খুবই সহজ। অঙ্কের সমস্যা বললে নিমেষে মুখেই তার সমাধান বলে দিতে পারেন।
এমনকি বিচারকরা দেখেছেন, কম্পিউটারে কোনও জটিল অঙ্কের সমাধান বের করতে যত সময় লাগে তার থেকেও তাড়াতাড়ি অঙ্ক কষতে পারেন নীলকান্ত। তাঁর মেধা ব্যতিক্রমী, মস্তিষ্ক কম্পিউটারের থেকেও দ্রুত কাজ করে। অঙ্কের জাদুকর স্কট ফ্ল্যানসবার্গ ও শকুন্তলা দেবীর সঙ্গেই এখন তুলনা করা হচ্ছে নীলকান্ত ভানু প্রকাশের।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584