পিয়া গুপ্তা ,কালিয়াগঞ্জঃ
উত্তরবঙ্গের সবথেকে বড় পূজো গুলোর মধ্যে একটি পুজো কালিয়াগঞ্জ এর বয়রা কালী মায়ের পূজো।মঙ্গল বার সকাল থেকে বযরা মায়ের পুজো কে ঘিরে জমজমাট ভীর কালিয়াগঞ্জে।অষ্টধাতুর তৈরি মায়ের এই পুজো কে ঘিরে উত্তরবঙ্গে বহু প্রান্ত থেকে মানুষ সকাল থেকে নিজেদের পূজার জন্য নাম লিখিয়েছেন পুজো মন্দিরে।
এদিন সকালে মায়ের পূজোতে লুচি,সুজি,ফলমূল,পায়েস ও মিষ্টি দিয়ে মা কে আহার ভোজনের ব্যবস্থা করা হয়েছিলো।পাশাপাশি দুপুরে মায়ের পূজো তে মাকে শাল,সোল,রুই,কাতলা,বোয়াল ,পুঁটি সহ পাঁচ রকম মাছ ও পাঁচ রকম ভাজা আহারে দেওয়া হয়েছে।এদিন মা কে তিন বেলা নানা রকমারি পদ খাবার দেওয়া হয়।এছাড়া সন্ধ্যার সময় মা কে পড়ানো হবে রকমারি সোনার অলঙ্কার।কানের দুল,নেকলেস,মানতাসা,বিন্দি ,সোনার টিপ,সোনার নুপুর সহ হাজারো গয়না দিয়ে এদিন সন্ধ্যা হতেই মায়ের পুরো শরীরে ভরিয়ে দেওয়া হবে।
রাতে পূজো উপলক্ষে এদিন বয়রা মা কে চালকুমরো,পায়রা ও পাঠা বলি দেওয়া হয়।এই ঐতিহ্যবাহী বয়রা কালী বাড়ির পুজো কে ঘিরে রয়েছে নানান রহস্যময় কাল্পনিক কথা। উত্তর দিনাজপুরে কালিয়াগঞ্জে এই বয়রা কালী পূজো শুরু হয়েছিল কবে তা সঠিক জানা নেই কারো।কথিত আছে, কালী পূজোর রাতে মা বয়রা কালিয়াগঞ্জ শহর পরিক্রমায় বের হতেন।উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জে শ্রীমতি নদীর তীরে বয়রা কালী পূজো শুরু হয়েছিল কয়েশ বছর আগে। বর্তমানে প্রায় সারা বছর ধরে শ্রীমতি নদীতে ধান চাষ হলেও এক সময় এই নদী খরস্রোতা ছিল।নদী পথে যে সমস্ত বণিক সম্প্রদায় বাণিজ্য করতে আসতেন তাঁরা নদী তীরে একটি জঙ্গলে বয়রা গাছের তলায় প্রথম কালী পূজোর সূচনা করেছিল।সেই সময় থেকেই এই কালী “মা বয়রা কালী” নামে পরিচিতি লাভ করে।১৯৯৮ সালের ৬ ই এপ্রিল কালিয়াগঞ্জ বাসীর চেষ্টায় ও আর্থিক সহায়তায় প্রায় চার লক্ষ টাকা ব্যায়ে মা বয়রার অষ্টধাতুর বিগ্রহ স্থাপন করা হয়। কৃষ্ণনগরের মৃগাঙ্ক পাল এই অষ্টধাতুর বিগ্রহটি তৈরি করেছিলেন।কালী পূজোর রাতে মা বয়রার গোটা শরীর সোনায় অলঙ্কারে ঢেকে দেওয়া হয়। কালী পূজোর রাত থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত কঠোর নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয় গোটা কালীবাড়ি চত্বর।প্রতি বছরের মতো এবারো মায়ের পূজো মণ্ডপ যেন তীর্থক্ষেত্রের রূপ নিয়েছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584