পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ
শিক্ষার আঙ্গিনায় বর্বরতার নিদর্শন বাকরুদ্ধ করে দিল সাধারণ মানুষ থেকে মন্ত্রী, শিক্ষাবিদ, অভিভাবকদের। বীরভূমের বোলপুরের একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে শিশুদেরকে অর্ধনগ্ন অবস্থায় শ্রেণিকক্ষে পাঠদান দিলেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। ভয়ঙ্কর ঘটনার কথা জানাজানি হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে অভিভাবকেরা এবং মঙ্গলবার সকাল থেকে স্কুলের সামনে দীর্ঘক্ষন বিক্ষোভ দেখায় তারা।
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার দুপুরে প্রথম শ্রেণীর এক ছাত্রী বাড়িতে আসার পর শিশুটির মা দেখে শিশুর পরনের গরম ফুল প্যান্ট নেই জিজ্ঞাসা করতেই শিশু বলে স্কুলে দিদিমণি খুলে নিয়েছে কারণ স্কুল থেকে যে নির্দিষ্ট পোশাক ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল সেই পোশাকের সঙ্গে মিল না হওয়ার জন্য স্কুলের তরফে শিশুদের প্যান্ট খুলে নিয়ে গিয়ে স্কুলে জমা করে রাখা হয়। সোমবার স্কুল ছুটির পর অভিবাবকরা ঘটনার কথা জানতে পেরে সাথে সাথে শান্তিনিকেতন থানায় অভিযোগ জানান কিন্তু শান্তিনিকেতন থানার আইসি কস্তুরী মুখোপাধ্যায় স্কুলের পর কর্তৃপক্ষকে ডেকে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়।
অভিভাবকদের একাংশ পুলিশের ভূমিকায় যথেষ্ট ক্ষুব্ধ। তাই মঙ্গলবার সকালবেলায় স্কুল খুলতেই অভিবাবকরা স্কুলের সামনে শিশুদের সাথে এই অন্যায়ের সুবিচার চাইতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে যদিও স্কুলের প্রিন্সিপাল সিস্টার অর্চনা জানিয়েছেন, যে অভিযোগ অভিভাবকরা করছেন তা সঠিক নয় শিশুদেরকে নির্দিষ্ট পোশাক পড়ে স্কুলে আসার জন্য বলা হয়েছিল কিন্তু কোন শিশুরই প্যান্ট খুলে নেওয়া হয়নি। যদি এমন ঘটনায় স্কুলে নাই ঘটবে তবে সোমবার সন্ধ্যেতে কেন অভিভাবকদের অভিযোগের ভিত্তিতে স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে গিয়ে ক্ষমা চাওয়া হয়েছে এই কথা বলে, যে ঘটনা স্কুলে বাচ্চাদের সাথে ঘটেছে তার জন্য তারা ক্ষমাপ্রার্থী এবং দুঃখ প্রকাশ করছেন।
ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় তিনি বলেছেন এ ঘটনা যদি বাস্তবে ঘটে থাকে তবে তা সত্যিই আশঙ্কাজনক এবং শিশুদের জন্য অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক। শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদেরকে বলা হবে খোঁজ নিয়ে সঠিক ঘটনা জানানোর জন্য। সেন্ট টেরিজা স্কুলের প্রথম শ্রেণীর এক ছাত্রী জানিয়েছে সোমবার স্কুল শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পর ক্লাস টিচার এসে আচমকাই তাদের প্যান্ট খুলে নিতে বলে তারপর সেই প্যান্টগুলো নিয়ে তিনি চলে যান এবং স্কুলে জমা করে দেন। সেই অবস্থাতেই দীর্ঘক্ষন ক্লাসে ক্লাস করতে হয় ছাত্র-ছাত্রীদের ।
এক শিশুর বাবা রাজেশ শর্মা জানান অত্যন্ত হতবাক হয়েছি বাচ্চাকে বাড়িতে এই অবস্থায় দেখে, যে কজন শিশুর সঙ্গে এই ঘটনা ঘটেছে আমরা প্রত্যেকেই শান্তিনিকেতন থানায় স্কুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলাম কিন্তু থানার তরফে স্কুল কর্তৃপক্ষকে ডেকে বিষয়টি মীমাংসা করে ও বাচ্চার ভবিষ্যতের কথা ভেবে চলে যেতে বলেন। সেই মুহূর্তে আমরা চলে গেলেও শুধু দুঃখ প্রকাশ করে কি আমার শিশুর সম্মান ফিরিয়ে দিতে পারবেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। অভিভাবকদের দাবি যে শিক্ষিকা এই ধরনের ঘৃণ্য ঘটনা ঘটিয়েছেন তাকে অবিলম্বে স্কুল থেকে সরিয়ে দিতে হবে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584