শুভম বন্দোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
মুখ্যমন্ত্রী বারবার নবান্নে বসে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের কথা বললেও কোনও কিছুই যে নিয়মমত চলছে না, তা যেন ফের পরিষ্কার হয়ে গেল। এর আগে পার্ক সার্কাস থেকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ যেতে এক অ্যাম্বুলেন্স চালক দাবি করেছিলেন মাথাপিছু ৯ হাজার টাকা। বেশ কিছুদিন বাদে ফের সল্টলেক আমরি থেকে কলকাতা মেডিকেল কলেজে যাওয়ার জন্য ফের দাবি করা হল ৯ হাজার টাকা।
আগেরবার এক চিকিৎসকের মধ্যস্থতায় রোগীর পরিবার থেকে টাকা কম দিতে হলেও এবারে সুযোগ না থাকায় পুরো টাকাটাই গুনতে হয়েছে রোগীর পরিবারকে। যদি অ্যাম্বুলেন্স চালকের দাবি, পুরো ব্যাপারটাই তার মালিক বুঝে নিয়েছেন।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার সকালে। পরিবার সূত্রে দাবি, ১০ দিন আগে হাওড়ার বাসিন্দা ৮০ বছরের হরিওম আগরওয়ালের সেরিব্রাল স্ট্রোক হয়। তার জেরে তিনি পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েন। বেশ কয়েকটি হাসপাতালের শয্যা না পাওয়ার পর সল্টলেকে আমরি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই ৫ দিন পর চিকিৎসকদের সন্দেহে তার করোনা পরীক্ষা করা হলে দেখা যায়, তিনি কোভিড পজিটিভ।
আরও পড়ুনঃ জুলাইয়ে আনলক পর্বে কাজ হারিয়েছেন ৫০ লক্ষ মানুষ
দীর্ঘদিন ভেন্টিলেশনে থেকে হাসপাতালের বিল বেড়ে যাওয়ায় রোগীকে অন্য কোথাও সরানোর চেষ্টা করছিল পরিবার। এরপরই তারা বৃহস্পতিবার ঠিক করেন হরি ওম বাবুকে কলকাতা মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাবেন। মেয়ে মমতা আগরওয়াল বলেন, “লকডাউনের জন্য একটাও অ্যাম্বুলেন্স পাচ্ছিলাম না। অনেক অ্যাম্বুল্যান্স চালক কোভিড রোগী শুনেই ফোন কেটে দিচ্ছিলেন। শেষমেশ ন’হাজার টাকায় ওই অ্যাম্বুল্যান্সটা পাই আমরা।’
তিনি আরও বলেন, অক্সিজেন কমে আসায় বাবাকে কলকাতা মেডিকেল কলেজে পৌঁছানোটা আমাদের কাছে অনেক জরুরী ছিল। তাই টাকা নিয়ে কোনও দরকষাকষির পথে যায়নি। বুঝতে পেরেছিলাম যে অতিরিক্ত নিচ্ছে। কিন্তু একে ছেড়ে দিলে আমাদের আরও অসুবিধা হতো, তাই মানতে হল।
আরও পড়ুনঃ সার্জারি না জানা চিকিৎসকের হাতে প্রাণ হারালেন রোগী, নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে তদন্ত
মমতা দেবী জানান, পিপিই কিট পরা অ্যাম্বুল্যান্স চালককে ৬ হাজার টাকা অগ্রিম দিয়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের গেটের সামনে এসে নিয়ে আসা হয়। বকেয়া ৩ হাজার টাকা দেওয়ার পর অ্যাম্বুল্যান্স চালক কার্যত রোগীকে মাটিতে নামিয়েই চম্পট দেয়।
পিপিই কিট পরে থাকা সত্বেও রোগীকে জরুরী বিভাগের বাইরে নিয়ে যাওয়াতে রাজি হয়নি। কাজ মিটে গেল সরকারি নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হরি ওম বাবুর মেয়ে মমতা আগরওয়াল। যাদের সামর্থ্য নেই, তাদেরও পরিস্থিতির সুযোগে কিভাবে অ্যাম্বুল্যান্স চালকরা লুটেপুটে নিচ্ছে, তারা যেন এই ধরনের ঘটনায় বারবার প্রকাশ্যে চলে আসছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584