মুঘল অভিজাত রমণীদের গহনা

    0
    490

    সহেলী চক্রবর্তী 

    সহেলি চক্রবর্তী

    মুঘল আমলের অন্যতম আকর্ষণ ছিল মুঘল আমলের গহনা,যা তাদের রাজকীয় ঐতিহ্যকে তুলে ধরত স্বমহিমায়।রাজপরিবারের মহিলা ও পুরুষ উভয়েই নিজেদের সম্পদ ও সম্মান প্রদর্শনের জন্য গহনাকে বেছে নিত।আর তাই প্রত্যেকেই বিভিন্ন ভারী ভারী গহনা পরত।মুঘল গহনায় ইসলামিক ঐতিহ্যের প্রভাব ছাড়াও বিভিন্ন জাতির প্রভাব ও পড়েছিল।একাধারে গজনি,ঘোরী বংশের সাথে সাথে রাজপুত ঘরনাও মুঘল গহনায় বিশেষ ছাপ ফেলেছিল।পরবর্তীকালে ইউরোপীয়রা ভারতে এলে সেখানকার গহনা শৈলীর প্রভাবও দেখা যায় মুঘল গহনার ক্ষেত্রে।
    মুঘল যুগ ছিল গহনার ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী যুগ।এর প্রমাণ হিসেবে সেই সময়কার বহু তৈলচিত্রে গহনার নকসা দেখতে পাওয়া যায় যা এক একটা অসাধারণ নৈপুন্যের বহিঃপ্রকাশ। মুঘল রমণীরা আট ধরনের গহনা পড়তেন। যার মধ্যে দুই ইঞ্চি পুরু আর্মলেট ছিল যা ওপর হাতে পরা হত।হাতে পড়ত বহু চেন দিয়ে তৈরি ব্রেসলেট। মুঘল হাতের গহনায় সোনা ও দামী পাথরের ব্যবহার ছিল চোখে পড়ার মত।যাতে রত্নের সাথে থাকত ফুলের নকসা।মুঘল অভিজাত রমণীদের হাত ও আঙ্গুল গহনায় ভরা থাকত।আংগটির সাথে সাথে চেন দিয়ে তা হাতের বালার সাথে যুক্ত থাকত।

    সংগৃহিত

    কানে বিভিন্ন ধরনের ভারী গহনা পরার চল ছিল।যার মধ্যে মোর-ভাঁওর,বালি,ঝুমকা,কানফুল ও পিপল পাত্র উল্লেখযোগ্য। মুঘল রমণীরা মাঝে মধ্যে এতো কানের দুল পড়ত যা পুরো কানকে ঢেকে দিত।কানের দুলের হুঁক চুলের সাথে লাগানো থাকত।গলায় মুক্তো ও বিভিন্ন রত্নখচিত হার পরা হত সে যুগে।গলার গহনার মধ্যে ছিল গুলুবান্দ,হাস,হার ও হাঁসুলি।

    সংগৃহিত

    ১৬ শতকের মুঘল যুগ থেকেই ভারতে নথের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়।নথের শ্রেণীবিভাগ ছিল।যেমন ফুল,বেসর,লঙ্গ,বালু,নথ ও ফুলি।মুঘল রমণীরা মাথায় পরত তারা,সূর্য,চন্দ্র বা ফুলের নকসার টিকলী।মুঘল মহিলারা মাথায় এক বিশেষ ধরনের গহনা পড়তেন যা কপালের একপাশে ঝুলত।তারা পায়ে পড়ত মুক্তো খচিত নূপুর। নূপুরেও দামী রত্ন লাগানো হত।এছাড়া পায়ের আঙ্গুলেও রত্ন বসানো আংগটি পড়া হত। এর সাথে মহিলারা বুড়ো আঙ্গুলে কাঁচ বসানো বিশেষ ধরনের আংগটি পড়তেন।মুঘল গহনায় হীরে, রুবি,পান্না,মুক্তো,নীলা,টোপাজ,ফিরোজা এছাড়া হরিতাশ্ভ বা জেড ও অন্যান্য দামী রত্ন ব্যবহার করা হত।

    সংগৃহিত

    মুঘল যুগে স্থাপত্যকলা ও চিত্রকলার সাথে সাথেই শিল্পের জন্যও আলাদা করে বিখ্যাত।মুঘল অভিজাত রমণীদের ভারী আড়ম্বরপূর্ন গহনা ছিল চোখ জুড়ানো।খোরাসানীয় ও পারসিক শৈলীর সাথে রাজপুত শৈলীর সংমিশ্রনে গড়ে ওঠে মুঘল ঘরনা।কোন সন্দেহ নেই মুঘল ঘরনার গহনার ডিজাইন ও নির্মাণ শৈলীতে মুগলদের অবদান বিশাল।রঙ,বিভিন্ন মূল্যবান পাথর,তার রুপ,সব কিছুর প্রভাব আজও প্রবল বর্তমান যুব সমাজের ভিতর।

    নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
    WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
    আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here