শ্যামল রায়,কালনাঃ
উচ্চমাধ্যমিকে ভালো ফলাফল করল একই স্কুলের পাঁচ ছাত্রী।যদিও ভবিষ্যতে পড়ার ব্যাপারে যথেষ্ঠ চিন্তিত পরিবারের লোক জনেরা। এ বছর আর্থিক প্রতিবন্ধকতা ও প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যেও উচ্চমাধ্যমিকে ভালো ফল করে দেখালো মন্তেশ্বরের পঞ্চ পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পঞ্চকন্যা।এই সফলতাকে হাতিয়ার করেই তারা ইংরেজিতে অনার্স নিয়ে একই কলেজে পড়তে চায়।
ভবিষ্যতে পাঁচ জনেরেই স্বপ্ন ইংরেজির শিক্ষিকা হওয়ার।তবে সেই স্বপ্ন পূরণ করতে হলে চাই কোন সহৃদয় ব্যক্তি বা সংস্থার আর্থিক সাহায্য।সোমা দে,প্রিয়া দাস,বৈশাখী ঘোষ,তন্দ্রা দে এবং অঙ্কিতা ঘোষের বাড়ি মন্তেশ্বর থানার বিভিন্ন গ্রামে হলেও তারা প্রত্যেকেই সিজনা-উজনা পঞ্চপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী।তারা এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল।
ফল প্রকাশ হতেই দেখা গেল এই স্কুলের অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে তারা সর্বচ্চ নম্বর পেয়েছে। শতকরা হিসাবে এই পঞ্চকন্যার প্রাপ্ত নম্বর ৮২ শতাংশ থেকে ৮৮ শতাংশ পর্যন্ত।তাদের সাফল্যকে সম্মান জানাতে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই স্কুল কর্তৃপক্ষ এই পঞ্চকন্যাকে সম্বর্ধনা দেওয়ার ব্যবস্থা করে।পুষ্প স্তবক, মিষ্টি, পড়ার সরঞ্জাম দিয়ে সম্বর্ধনা জানা স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি তপন কুমার ঘোষ এবং প্রধান শিক্ষক বীরবল মন্ডল।
আরও পড়ুনঃ আর্থিক প্রতিবন্ধকতায় আটকে যাচ্ছে বিপাশার আইএএস হওয়ার স্বপ্ন
পরিচালন কমিটির সভাপতি তপন কুমার ঘোষ জানিয়েছেন যে তিনি সমস্ত রকম সহযোগিতা করবেন এই পঞ্চ কন্যার জন্য।তিনি এই বিদ্যালয়ের একজন একনিষ্ঠ এবং ছাত্র দরদী শিক্ষক হিসেবে সকলের কাছে সমাদৃত । নিজের জমানো অর্থ থেকেই বিভিন্ন সময়ে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কল্যাণমুখী কাজে আর্থিক সহযোগিতা করে আসছেন পাশাপাশি আর্থিকভাবে দুর্বল ছাত্র ছাত্রীর পাশে সর্বদা দাঁড়িয়েছেন তপন ঘোষ।
এমতবস্থায় এই পাঁচ ছাত্রীর সাহায্যেও তিনি পাশে দাঁড়াবেন এমনটাই আশ্বাস দেন।পঞ্চকন্যা এই সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানেই ঘোষণা করে তারা ইংরেজিতে অনার্স নিয়ে একই কলেজে ভর্তি হতে চায় এবং ভবিষ্যতে তারা শিক্ষিকা হতে চায় এমনটাই জানায়।একজন ছাত্রীর বাবা ফুচকা বিক্রেতা,বাকি চার জনের বাবা সকলেই প্রান্তিক কৃষক।আর্থিক অনটনের পাশাপাশি তাদের নেই পড়াশুনা করার অনুকূল পরিবেশও।
তবুও পাঁচ কন্যার কি করে মিললো এই সাফল্য ? তার উত্তরে সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষক বীরবল মন্ডল জানান এরা বাড়িতে পড়াশুনা করার থেকে স্কুলেই শিক্ষা গ্রহনে ধ্যান দিয়েছিল বেশী।নিয়মিত ক্লাস করার পাশাপাশি টিফিন বা অবসর সময়ে স্কুলেই পাঁচজন আলোচনা সভা বসাতো।সেই আলোচনায় তারা সিলেবাসের বিভিন্ন বিষয়ের উপর আলোচনা করতো।কোন ব্যাপারে সমস্যা দেখা দিলে পঞ্চকন্যা যৌথভাবেই শিক্ষকদের সাহায্য নিতো।
এরা নতুন আঙ্গিকে শিক্ষা নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সাফল্য পাওয়ার পাশাপাশি ভবিষ্যতের শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার নতুন দিশা দেখিয়ে গেল।এই পঞ্চকন্যাকে সাহায্য করার জন্য পরিবারের লোকজন সহযোগিতার আবেদন জানিয়েছেন।বাধা-বিপত্তি আর্থিক অনটনের মধ্যে দিয়ে ভালো ফলাফল করতে পারায় এই পঞ্চ কন্যার জন্য এলাকার বাসিন্দারাও খুশি।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584