নিজস্ব সংবাদদাতা,পশ্চিম মেদিনীপুরঃ
এতদিন কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠে আসছিল শাসকদল তৃণমূলের বিভিন্ন নেতার বিরুদ্ধে।এবার ঠিক উল্টো পুরাণ ঘটলো,কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠল বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে।কাটমানি নিয়েছেন স্বয়ং বিজেপির পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড় ব্লকের মধ্য মন্ডল সভাপতি শুভাশিষ মহাপাত্র ও বিজেপি নেতৃত্ব গৌরাঙ্গ সাউ।
বেলদা থানার অন্তর্গত বাখরাবাদ,খালিনা জগৎপুর সহ বিভিন্ন জায়গায় বিজেপির নারায়ণগড় ব্লকের মধ্য মন্ডলের সভাপতি শুভাশিষ মহাপাত্র ও বিজেপি নেতৃত্ব গৌরাঙ্গ সাউ এর বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ তুলে কাটমানি পোস্টার পরে।
সকালে গ্রামবাসীরা দেখে বিভিন্ন জায়গায় এই পোস্টার লাগানো রয়েছে ।পোস্টারে অভিযোগ করা হয়েছে,তৃণমূল নেতা সুশান্ত ধলের কাছ থেকে পিএমদেওয়াই এর লুট হওয়া কাটমানির তিন লক্ষ টাকা আদায় করে বিজেপি নেতা শুভাশিস মহাপাত্র,গৌরাঙ্গ সাউ সহ অন্যান্যরা আত্মসাৎ করলে কেন ‘জবাব দাও’।
আরও পড়ুনঃ ক্ষীরপাই পুরসভায় কাটমানি ইস্যুতে পোস্টার
অবিলম্বে বিজেপি নেতাদের দারা আত্মসাৎ করা কাটমানি গরিব মানুষের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে। এতদিন তৃণমূল নেতাদের নামে কাটমনি নেওয়ার অভিযোগ করে আসছিল শাসক দলের প্রবল প্রতিপক্ষ বিজেপি।এবার বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার পোস্টার পড়ায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে নারায়ণগড় ব্লকের বিজেপির মধ্য মন্ডলের সভাপতি শুভাশিস মহাপাত্র জানান “কেউ হয়তো ঈর্ষাবশত কিংবা দলের প্রতি বিদ্বেষবশত এটা লাগিয়েছে।
তবে আমার জানা নেই ।খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।” তবে তার নামে দেওয়া পোস্টারটি কি ভুল এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান -“ই পোস্টারটা সম্পূর্ণ ভুল নয়, আংশিক সত্য।টাকা টাকাট মানির টাকা নয়,সুশান্ত ধল আবাস যোজনার নামে যে টাকা আদায় করেছিল তার টাকা ” তাহলে প্রশ্ন উঠছে সুশান্ত ধল এর কাছ থেকে আদায় করা টাকা টা কাটমানি নয়।
যদি কাটমানির টাকা না হয় তাহলে বিজেপি কেন সেটা আদায় করেছিল?শুভাশিস বাবু আবার স্বীকার করছেন পোস্টারে উল্লিখিত তিন লাখ এর বদলে তার কাছে ১ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা রয়েছে।
এই টাকাটি খালিনার তৃণমূল নেতা সুশান্ত ধলের কাছ থেকে গ্রামবাসীরা উদ্ধার করেছিল এবং সেটা তাঁর কাছে রয়েছে। রশিদ দিয়ে রীতিমত সেই টাকা টা নেওয়া হয়েছে।এই মাসের শেষের দিকে সবাইকে দিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানান হয়।
তবে মাস শেষ হতে আর একটি দিন বাকি টাকা গ্রামবাসীদেরকে এখনো ফেরত দেওয়া হয়নি।শুভাশিস বাবুর বক্তব্য থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে তৃণমূল নেতার কাছ থেকে গ্রামবাসীদের দ্বারা উদ্ধার করা টাকা যদি কাটমানির টাকা না হয় এবং সেই টাকা গ্রামবাসীদের ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মাস অতিক্রান্ত হতে যাবার প্রায় শেষ মুহূর্তেও গ্রামবাসীরা সে টাকা পাননি।
অপর দিকে তার নামে কাট মানি নেওয়ার পোস্টার পড়ায়, এতদিন ধরে যে তৃণমূলের নেতাদের নামে কাট মানি নেওয়ার অভিযোগ উঠে আসছিল তাই এবার পরিবর্তিত হয়ে বিজেপি নেতার নামে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠল ও রাজ্য রাজনীতিতে নতুন মাত্রা পেল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এ ব্যাপারে নারায়ণগড় ব্লকের তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মিহির চন্দ জানান -” প্রশাসন পুরো ব্যাপারটা তদন্ত করে দেখুক।এর আগে বিজেপি চাপ দিয়ে সুশান্তের কাছ থেকে অন্যায় ভাবে টাকা নিয়েছে।”
তৃণমূল নেতা সুশান্ত ধল জানিয়েছেন “কিছুদিন আগে আমার বুথে একটা সমস্যা ছিল।তাই আবাস যোজনা প্রকল্পে দরজা জানালা ও দুয়ারে বেশ কয়েকজন প্রাপকের ৫ হাজার টাকা করে মোট এক লক্ষ পঁয়তাল্লিশ হাজার টাকা ফেরতের কথা ছিল।
সেই মত মিউচুয়াল টেবিলে থানাতে বসে বিজেপি নেতৃত্ব শুভাশিষ মহাপাত্রের হাতে কাগজ কলমে লেখার মাধ্যমে তুলে দেই।আজ কে বা কারা এই পোস্টার লাগিয়েছে আমার জানা নেই।
কোন দলীয় নেতার নামে পোস্টার লাগিয়ে তাদের পদকে কলুসিত করার চেষ্টা চলছে।আমি প্রশাসনকে অনুরোধ করব যারা করেছে তাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584