সীমা পুরকাইত, দক্ষিণ ২৪ পরগনাঃ
লকডাউনের জেরে পরিবারকে নিয়ে অথৈজলে মৃৎশিল্পী। দুর্গাপুজোর আর কয়েক মাস থাকলেও আশার আলো তেমন দেখছেন না। বছর কয়েক আগে পর্যন্ত একা রোজগেরে হলেও বিষ্ণুপুরের কোনচৌকির গন্টারম্যান পাইপারস লিমিটেড কোম্পানিতে কাজ করেই চলে যেত মা-দিদি-স্ত্রী ও এক মেয়েকে নিয়ে মোট পাঁচজনের সংসার।
কিন্তু প্রায় বছর দুয়েক আগেই কারখানা বন্ধের পর থেকেই সংসারে আর্থিক সংকট কাটাতে মৃৎশিল্পে নামতে হয় বিষ্ণুপুরের সিংহীর মোড়ের মানব জানাকে। তারপর থেকে বিভিন্ন পূজামণ্ডপের দেওয়া অর্ডারে শিব দুর্গা কালী থেকে শুরু করে বিভিন্ন মন্দিরের মাটির প্রতিমার সাথে পাল্লা দিয়ে সিমেন্টের প্রতিমা তৈরি করে রোজকার করতেন। কিন্তু সুখের সংসারে বাদ সেধেছে লকডাউন! মন্দা নেমেছে মৃৎশিল্পে।
আরও পড়ুনঃ করোনা আবহে বিজেপির গণ অবস্থান
অপরদিকে কাজের ফাঁকে শখ মেটাতে চলত সঙ্গীতচর্চা। স্থানীয় একটি ব্যান্ডে মনের খিদে মেটাতে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি নিজে হাতে তৈরি করে বাজাতেন। এখন অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির মাঝে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী হাতে তৈরি আবহ সংগীতের যন্ত্রপাতি বাড়িতেই তৈরি করছেন সময় কাটাতে। কিছু কিছু জিনিস বিক্রিও করেছেন। কিন্তু তাতে আর কত পয়সা? এতে কি সংসার চলে! দুর্গাপুজোর হাতেগোনা আর কয়েক মাস। কিন্তু অন্যান্য বছরের মতো এখনো পাওয়া যায়নি অর্ডার।
এমন আর্থিক সংকটের বাজারে বেশি আশাও করতে পারছেন না তিনি। তাও একটা দুটো প্রতিমা সময় কাটাতে করে যাচ্ছেন। সেইসঙ্গে একমনে তৈরি করে চলেছেন আবহসংগীতের নানান যন্ত্রপাতি। কিন্তু হাতে টাকা না থাকলে কিসের শিল্প চর্চা! লক ডাউনের বাজারে মাঠে মারা যাচ্ছে তার আবহ সঙ্গীতের যন্ত্রের আবিষ্কার। সরকারিভাবে যদি কোন আর্থিক সাহায্য মিলত, তাহলে হয়তো বাঁচানো যেত পুরানো ঐতিহ্যকে। শিল্পীদের ভবিষ্যৎ যে কী তা ভেবেই হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন মানব।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584