শ্যামল রায়,নবদ্বীপঃ
শ্রী চৈতন্যদেবের জন্মস্থান নবদ্বীপ।আর এই নবদ্বীপ শহরের গা ঘেষেই প্রবাহিত হয়েছে গঙ্গা। গঙ্গার ওপারে মায়াপুর ইসকন আর এই পাড়ে নবদ্বীপ শহর।দুইয়ের সংযোগস্থলে রয়েছে গঙ্গা ও জলঙ্গী নদী।প্রতিবছরের মতো এবছরও গঙ্গা শুকিয়ে যাচ্ছে ফলে নবদ্বীপ ফেরি ঘাট সংলগ্ন এলাকায় লঞ্চ চলাচল সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। ইতিমধ্যেই গঙ্গায় জেগে উঠেছে বড় বড় চরা।পুণ্য সলিলে গঙ্গা শুকিয়ে যাওয়ায় চরম সমস্যার মধ্যে পড়েছেন নৌকা চালক থেকে শুরু করে লঞ্চ চালকরা।সামনেই দোল উৎসব।আর এই দোল উৎসব কে কেন্দ্র করেই দেশ-বিদেশ থেকে লক্ষাধিক পূণ্যার্থীদের মিলন ঘটে।নবদ্বীপ ফেরি ঘাট দিয়েই পুণ্যার্থীরা যাতায়াত করে থাকেন।
শুখা মরসুমে গঙ্গা তথা ভাগীরথী তে এতটাই জল কমে যায় যে নদী তীরের এলাকা জলের তলা থেকে জেগে ওঠে। নদীর নাব্যতা এখানে অনেকটাই কমে গেছে সেই জন্যই গঙ্গায় এই ভাবেই চর জেগে ওঠে প্রতিবছর।ইতিমধ্যেই বড় নৌকো লঞ্চ চলাচলে সমস্যা হচ্ছে জল আরো কমে গেলে নদী দিয়ে ফেরি চলাচলও চরম সমস্যার মধ্যে পড়তে হয় চালকদের তাই এখন যেসব জায়গায় নৌকা লঞ্চ ঘাট তৈরি হয়েছে আর কয়েক মাস বাদে পরিবর্তন হয়ে যাবে ঐ সমস্ত ঘাট।
জানা গিয়েছে যে নবদ্বীপ চৈতন্য তীর্থ ক্ষেত্র হিসেবে দেশ-বিদেশে সকল পুণ্যার্থীর কাছে পরিচিতি।গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর লীলা ক্ষেত্র এই নবদ্বীপ এক সময়ে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামে পরিচিত ছিল।গঙ্গা নবদ্বীপ শহর এ পাশ দিয়ে প্রবাহিত।গৌরাঙ্গ সেতুর নিচে নদীর একাংশের অবস্থা খুবই খারাপ এখানে নদীর বুকে প্রচুর পরিমাণে চর জেগে উঠেছে নাব্যতা কমে গিয়ে এই অবস্থাটা তৈরি হয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ।
নবদ্বীপের বড়াল ঘাট থেকে স্বরুপগঞ্জ এবং মায়াপুরে ফেরি চলাচলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় জল যখন কমে যায় এই সময়টাতে।
গঙ্গার পূর্ব দিকের গ্রামীণ এলাকায় দুটো ফেরিঘাট আছে একটি রয়েছে স্বরুপগঞ্জ অন্যটি রয়েছে মায়াপুরে।এই স্বরুপগঞ্জ ফেরিঘাট থেকে আবার কৃষ্ণনগরে যাওয়া যায় অর্থাৎ নবদ্বীপ শহর থেকে যথাক্রমে জেলা সদর কৃষ্ণনগর এবং পর্যটন ক্ষেত্র মায়াপুর যাওয়া যায় এই দুটি ফেরী ঘাট থেকেই।অনেকে কলকাতা থেকে রেলপথে বা সড়কপথে কৃষ্ণনগর এসে এই দুই ফেরিঘাট এর মাধ্যমে নবদ্বীপ ও মায়াপুর যান।তাই এই দুটি ফেরিঘাট এর গুরুত্ব অপরিসীম পর্যটকদের কাছে। ফাল্গুন-চৈত্র মাসে চর এতটাই জেগে ওঠে যে নৌকা চলাচলে চরম অসুবিধা হয় তাই ঘাট পরিবর্তন করে যাত্রীদের মায়াপুরে নেওয়ার ব্যবস্থা হয়ে থাকে।
নবদ্বীপ আসলে দুই নদীর সঙ্গমস্থল।গঙ্গা এবং জলঙ্গি এখানেই এক সঙ্গে মিশেছে দুই নদীর পাড়ে নবদ্বীপ শহর স্বরুপগঞ্জ এবং মায়াপুর অবস্থিত এই দুই নদীর মিলিত প্রবাহের ফলে এখানে জল বেশি থাকার কথা কিন্তু বাস্তবে নাব্যতা কমে গিয়ে গোটা গঙ্গা জুড়েই বড় বড় চর জেগে ওঠে এই সময়।
আরও পড়ুনঃ নয়ানজুলিতে গাড়ি পড়ে আহত দশ যাত্রী
এই প্রসঙ্গে নবদ্বীপ পৌরসভা চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ সাহা জানিয়েছেন যে বিষয়টি বারবার শেষ দপ্তর এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে জানানো হয়েছে কোন সমস্যার সমাধান আজও হয়নি কেন্দ্রীয় সরকার নমামি গঙ্গে প্রকল্পের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করলেও এ বিষয়ে কিছুই করেনি বলে অভিযোগ করেন তিনি।নবদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হরিদাস দেবনাথ জানিয়েছেন নবদ্বীপ গঙ্গার জল কমে যাওয়ায় সমস্যা তৈরি হয় এর কারণ নদীর নাব্যতা কমে গিয়ে বড় বড় চরা জেগে ওঠায় এরকম সমস্যা তৈরি হচ্ছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584