নিউজফ্রন্ট, ওয়েবডেস্কঃ
এক সময় রাতের পর রাত শহর কলকাতার হোটেলগুলিকে মাতিয়ে রাখতেন তিনি। তাঁর লাস্যময়ী শরীরী ভঙ্গিমায় নেশাগ্রস্ত হতো ফিরোপ’জ, গ্র্যান্ড থেকে পার্ক স্ট্রিটের হোটেলগুলির নিত্যযাত্রীরা। গানের সুরে সুরে তাঁর কায়ার মূর্ছনায় আয়াসি করত তিলোত্তমার মাস্তানি রাতেরা।
কিন্তু সবাইকে ‘থ’ করে বৃহস্পতিবার ভোর ৬ টা নাগাদ বিদায় নিলেন তিনি। সোদপুরে নিজের বাসভবনেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন বিখ্যাত ক্যাবারে ডান্সার ‘মিস শেফালি’ ওরফে আরতি দাস।
আরও পড়ুনঃ সাড়া জাগালো ‘কর্কট রোগ’-এর স্পেশাল স্ক্রিনিং
বিখ্যাত ‘কুইন অফ ক্যাবারে’র মৃত্যুতে থমথমে গোটা টলিপাড়া। সাতের দশকে সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ছবি ‘প্রতিদ্বন্দ্বী'(১৯৭০) এবং ‘সীমাবদ্ধ'(১৯৭১) তে দেখা গেছে তাঁকে। এছাড়াও ১৯৭৬ সালে বহ্নিশিখা এবং ১৯৯২ তে ‘পেন্নাম কলকাতা’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তিনি।
শোনা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই কাজের অভাবে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন আরতি দেবী। বেশ কিছু বছর ধরে পর্দার আড়ালেই থাকতেন তিনি। চিকিৎসার জন্য অর্থাভাবও দেখা দিয়েছে বেশ কয়েকবার। যদিও অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত আর্থিক সাহায্য করে পাশে থেকেছেন একাধিকবার।
ইন্ডাস্ট্রিতে ‘ক্যাবারে ডান্সারদের’ শৈল্পিক সত্ত্বা নিয়ে আলোচনা না হওয়ার কারণে, ক্যাবারে ডান্সকে শিল্প হিসেবে সম্মান না দেওয়ার কারণে মান-অভিমান ও মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে আরতি দাসকে।
ভাগ্নি আলভিনা সাহা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। ভুগছিলেন কিডনির সমস্যাতেও। দুটো কিডনিই নাকি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। দীর্ঘদিন এর আগে হাসপাতালেও ভর্তি ছিলেন তিনি। অবশেষে ৭৬ বছর বয়সে জীবনাবসান ঘটে এই শাখাপ্রশাখাহীন মহীরুহের।
টলিউড ইন্ডাস্ট্রির ওঠাপড়া, তৎকালীন রাজনৈতিক অস্থিরতা—অনেক কিছুর সাক্ষী এই মানুষটি। বলিউড হোক বা টলিউড, শেফালির নামে ফুলের রেণুর গন্ধে মন্ত্রমুগ্ধ হওয়া প্রজাপতির মতো বিহ্বলিত হয়ে থাকত দর্শক।
গত বছর কঙ্কণা সেনশর্মা মিস শেফালিকে নিয়ে বায়োপিক করার কথা ঘোষণা করেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় একটাই এই ছবি তিনি দেখে যেতে পারলেন না।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584