“আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় রক্ষা করা আমাদের নাগরিক দায়িত্ব”- ফারুক আহমেদ, সম্পাদক,উদার আকাশ পত্রিকা।
পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহ্য ও গর্বের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যে অন্যতম আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। বাম জামানায় তৎকালীন সংখ্যালঘু মন্ত্রী ড. আবদুস সাত্তার সাহেব এর উদ্যোগে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে ওঠে। এই বিশ্ববিদ্যালয়কে তিনি আধুনিক ও বিশ্ব মানের আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার জন্য সব আয়োজন করেছিলেন। যার সুফল বাংলার সংখ্যালঘু ঘরের ছেলে মেয়েরা উচ্চ শিক্ষা নিতে পারছে। এই প্রতিষ্ঠানকে অবরুদ্ধ করে রাখলে সংখ্যালঘু সমাজের বহু ছাত্র-ছাত্রী পিছিয়ে যাবে। এই শুভ বুদ্ধি কবে হবে আন্দোলনকারী সমাজবিরুদ্ধ কিছু ফেলটুমারা ছাত্রদের।
বাংলার বুদ্ধিজীবী মহল আন্দোলন কারীদের রুচি দেখে ছি ছি করছেন। সময়ে অসময়ে বিভিন্ন দাবিতে বছরের বিভিন্ন সময়ে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় অবরুদ্ধ হওয়ার খবর শোনা যাচ্ছে, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে আরও বিশ্ববিদ্যালয় আছে সেখানেও আন্দোলন হয় কিন্তু পঠনপাঠন বিঘ্নিত হওয়ার খবর বেশি পাওয়া যায় না। এই আন্দোলন দমন করতে দক্ষ প্রশাসক মাননীয় উপাচার্য ড. আবু তালেব খানকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। এখন শিক্ষায় নব জোয়ার এসেছে। ছাত্র-ছাত্রিদের দাবি দাওয়া থাকতেই পারে কিন্তু পাশ না করতে পারা পড়ুয়াদের পাশ করিয়ে দিতে হবে। তার জন্য মাননীয় উপাচার্যকে ও শিক্ষাকদেরকে অপমান করে মারাধর করা ধাক্কা দেওয়া মেনে নেওয়া যায় না। এর প্রতিকার করতেই হবে। অপরাধীদের চিহ্নিত করে প্রশাসন এর হাতে তুলে দিতে হবে। আন্দোলনকারীদের সীমাবদ্ধতা থাকা উচিত।এই বিষয়ে বারবার বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করা অনভিপ্রেত।
বাংলার বুদ্ধিজীবী মানুষ আন্দোলনকে মান্যতা দেয়, কিন্তু পঠনপাঠন বন্ধ থাকুক এটা কোনও মতেই বরদাস্ত করা যায় না এবং বরদাস্ত করা উচিতও নয়। দাবি থাকতেই পারে কিন্তু বারবার ক্ষমতা প্রদর্শন করার জন্য আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রুপকার মাননীয় উপচার্য ড. আবু তালেব খান মহাশয়কে কাজে বাধা দেওয়া এবং চরম অপমান করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে না দেওয়া বড় অন্যায়।
প্রশাসনিক আধিকারিক,অধ্যাপক থেকে শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হবেনা সংখ্যালঘুদের একমাত্র শিক্ষা ভূমিতেে- এ আন্দোলন বরদাস্ত করা হবে না। কোনও মতেই উচিত নয় আপোষ করা। এর প্রতিকারে সরকার, প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কতৃপক্ষকে কড়া হাতে দমন করতে হবে। বাংলার বুদ্ধিজীবী মহল মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন রেখেছেন, এ আন্দোলনকে কড়া হাতে দমন করার জন্য। প্রয়োজনে এবিষয়ে নতুন আইন তৈরি করে একটা বার্তা তিনি দেবেন এই আশা আমরা রাখি।
রাজ্যের মাননীয় উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ছাত্র ভর্তি নিয়ে এবার কড়া পদক্ষেপ নিয়েছেন।
বাংলার বুদ্ধিজীবী থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষ আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এর এই নোংরা আন্দোলনের তীব্র নিন্দা করেছেন। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে এত উন্নত মানে গড়ে তোলার জন্য মাননীয় উপাচর্য ড. আবু তালেব খান মহাশয়ের অফুরন্ত অবদান অনস্বীকার্য। কিছু উস্কানি প্রদানকারী রাজনেতিক ব্যক্তি ও বিশেষ সুবিধা নেওয়া স্বার্থপরগনের পরোক্ষ ইন্ধনে ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের ভবিষ্যতকে নষ্টের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এই অসভ্য আচারব্যবহার কাম্য নয়। আমরা তাদের সঠিক পথে এবং পঠনপাঠন অব্যাহত রেখে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আবেদন রাখছি।
আমার শিক্ষক আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এর ইংরাজি বিভাগের প্রফেসর আমজাদ হোসেন এর কাছে শুনছিলাম আসাম, মুশির্দাবাদ ও বিভিন্ন জেলার মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে এই নোংরা আন্দোলন দেখে অবাক হয়েছে। কিছু ছাত্র দলের নামে খামখোর নেতা হয়ে উঠছেন দিন দিন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু ছাত্র-ছাত্রী নেট দিয়ে জে আর এফ সহ দেশ ও বিদেশে গবেষণা করছেন। প্রতিযোগিতার বাজারে সফল হহয়ে চাকরি করছেন। কলেজ সার্ভিস কমিশন এর মাধ্যমেও চাকরি পেয়েছেন বহু ছাত্র-ছাত্রী। এক কথায় উচ্চ শিক্ষায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এর মধ্যে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় একটি সফল ও আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে উঠতে অনেকটাই সফল হয়েছে। কিন্তু ইসলামী থিওলজির কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী প্রয়োচনায় পা দিয়ে বৃথা আন্দোলনে মেতে উঠেছে। ইসলামী থিওলজি বিভাগকে মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতে মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. আবু তালেব খান বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এবিষয়ে তিনি ইউজিসির অনুমোদন নেন। ফলে ইসলামী থিওলজির ছাত্র-ছাত্রীগণ বিএড ও গবেষণারর সুযোগ পায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএড ও নার্সিং বিভাগও শুরু করেন উপাচার্য মহাশয়।
পিছিয়ে পড়া সমাজের শিক্ষা প্রসারে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় একটি আবেগ ও ভালবাসার জায়গা। এই বিশ্ববিদ্যালয় কখনই বিপদে চালিত হতে পারে না। আমরা আমাদের পরম ভালবাসায় গড়ে তোলা আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে রক্ষা করবই।
আসুন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে আমিও আওয়াজ তুললাম। আপনিও আওয়াজ তুলুন। বিশ্ববিদ্যালয়কে রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে চ্যান্সেলর এর প্রতিনিধি হয়ে এসেছেন আর এক দক্ষ প্রশাসক, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় এর প্রাক্তন উপাচার্য, বর্তমানে এলাহাবাদ সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনি উপাচার্য রতন লাল হাংলু। তাঁর সাহায্য ও সহযোগিতায় আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় আগামীতে আরও ভালো জায়গায় যাবে এই আশা আমাদের।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584