সুদীপ পাল,বর্ধমানঃ
বাংলা ভাষা সাহিত্যের ইতিহাসে সমালোচক হিসেবে এবং পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে যে নামটি বাঙালি বারেবারে স্মরণ করে তাঁর নাম সজনীকান্ত দাস।সজনীকান্ত দাসের জন্ম বর্ধমান জেলার গলসি বেতালবন গ্রামে। কিন্তু এদিন সরজমিনে গিয়ে দেখা গেল নিজভূমেই তিনি ব্রাত্য। তাঁর জন্মস্থল জীর্ণদশা পেয়েছে।১৯০০ সালের ২৫ আগস্ট বর্ধমানের গলসির বেতালবন গ্রামে তাঁর জন্ম।কিন্তু কবি,সমালোচক, গবেষক ও হিসেবে তিনি পরিচিত হলেও ‘শনিবারের চিঠি’ পত্রিকার সম্পাদনা তাঁকে বিখ্যাত করে তুলেছিল।প্রথম দিকে এটি সাপ্তাহিক পরে মাসিক পত্রিকা হিসেবে প্রকাশিত হয়।
এর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল হাস্য কৌতুকের মাধ্যমে সমসাময়িক সাহিত্য-চর্চাকে আক্রমণ।শনিবারের চিঠির প্রায় সব রচনা বেনামে প্রকাশিত হয়েছে।লেখকদের মধ্যে উলেখযোগ্য ছিলেন — অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, রামানন্দ চট্টপাধ্যায়, সুনীতিকুমার চট্টপাধ্যায়,অশোক চট্টপাধ্যায়,সুবিমল রায়, মোহিতলাল মজুমদার, সজনীকান্ত দাস, নীরদচন্দ্র চৌধুরী প্রমুখ।পত্রিকার যে তির্যক মন্তব্য তার হাত থেকে রেহাই পাননি সে যুগের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে শুরু করে কাজী নজরুল ইসলামের মতো ব্যক্তিত্বরা। অন্যান্য সমসাময়িক লেখকদেরও এই পত্রিকার কৌতুক বাক্যবাণ সহ্য করতে হয়েছিল।অবশ্য ১৩৩৯ বঙ্গাব্দের শেষে দেখা যায় এই পত্রিকার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বদল। পত্রিকাটি ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ থেকে সৃজনশীল সাহিত্য রচনায় ব্যাপৃত হয়।এই নবজন্মের পর তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় ও বলাইচাঁদ মুখ্যোপাধ্যায় নিয়মিত লেখক ছিলেন।
শনিবারের চিঠি ছাড়াও তিনি বঙ্গশ্রী,শারদীয়া আনন্দবাজার পত্রিকা প্রভৃতিতে সম্পাদনার কাজ করেন।কিন্তু এদিন সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়,যে বাড়িটিতে সজনীকান্ত জন্মগ্রহণ করেছিলেন তার অবস্থা জীর্ণ এবং সেই বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করা যায় না তার কারণ ভিতরে মানুষ নয় পোকামাকড়ের বাস। বাংলা সাহিত্যের যে বহমান ঐতিহ্য সেই ঐতিহ্যের অন্যতম প্রাণপুরুষ এই সজনীকান্ত দাস। এলাকাবাসীর বক্তব্য,প্রশাসনের উচিৎ ছিল অনেক আগেই বাড়িটি মেরামত করা।গলসি বিধায়ক অলোক মাঝি উদ্যোগ নেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ চন্দ্রকোনায় ডান সন্দেহে একঘরে অাদিবাসী ব্যক্তি
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584