দূর্গাপদ মাইতি, উলুবেড়িয়া, হাওড়াঃ-
পশ্চিমবঙ্গের মাদ্রাসা শিক্ষার বর্তমান পরিস্থিতি ও কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষক চেয়ে মাদ্রাসাগুলোর আবেদন করার যৌক্তিকতা নিয়ে
আজ বেঙ্গল মাদ্রাসা এডুকেশন ফোরামের উদ্যোগে হাওড়া জেলার উলুবেড়িয়াতে এক সভার আয়োজন করা হয়।কিন্তু প্রশ্ন উঠছে সুপ্রিমকোর্টের শিক্ষক নিয়োগের নির্দেশ কি হাওড়া জেলার মাদ্রাসাগুলি মানবে?
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই আজকের সভার ডাক বলে দাবি মাদ্রাসা ফোরামের। তবে শেষ পর্যন্ত উত্তর অনেকটাই সদর্থকই বলে এই সংগঠনের দাবি।
উক্ত সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলার বিশিষ্ঠ সমাজ সেবক ও প্রাবন্ধিক এস এম সামসুদ্দিন,বেঙ্গল মাদ্রাসা এডুকেশন ফোরামের সভাপতি ইসরারুল হক মন্ডল, আজানগাছি হাইমাদ্রাসার টিআইসি ডঃ সাবির আলী,ফোরাম রাজ্য নেতৃত্বের অন্যতম সদস্য আসিকুল আলম , হুগলী সভাপতি মহম্মদ জাবিউল্লা প্রমুখেরা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলার মাদ্রাসা শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দের এক বৃহদাংশ ও অগণিত শিক্ষা দরদী ব্যক্তিগণ।সভাতে উপস্থিত প্রত্যেকেই সরকারের মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনকে পুনর্জীবিত করার প্রয়াসকে ভূয়সী প্রশংসা করেন। তাদের মতে দীর্ঘদিন প্রায় কোমায় থাকা কমিশন এখন আংশিক সচল। ইতিমধ্যে গত ১৭ই মে’র সর্বোচ্চ আদালতের রায় মেনে কমিশন এখন সমস্ত ইচ্ছুক মাদ্রাসাকে শিক্ষক চেয়ে আবেদন করতে বলেছে। তাতে হাওড়া জেলা প্রথমদিকে পিছিয়ে থাকলেও আস্তে আস্তে ভাল সাড়া দিচ্ছে।
উক্ত সভায় বিশিষ্ঠ লেখক এস এম সামসুদ্দিন মন্তব্য করেন যে এক সময়ে কমিটির মাধ্যমে রাজ্যের স্কুল ও মাদ্রাসাগুলোতে নিয়োগে স্বজনপোষন নীতি অনুসরণ করা হত। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে সম্পাদক বা হেডমাস্টারের ছেলে বা মেয়ের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কিংবা অর্থের গড়াপেটা হত। তিনি বলেন, ” কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষের কমিটির মাধ্যমে নিয়োগের দাবি, ভবিষ্যত প্রজন্মকে গলা টিপে মারার এক প্রচেষ্টা ।” তিনি দাবি করেন যে তিনি খোঁজ নিয়ে দেখেছেন জাতীয় সংখ্যালঘু দপ্তরের কাছে পশ্চিমবঙ্গের মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে সেরকম কোন ধারণা নেই।
অন্যদিকে,আজানগাছি হাই মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের মতে,হাওড়া জেলায় ক্রমশ মাদ্রাসা গুলো কমিশনের সপক্ষে সাড়া দিয়ে শিক্ষক চেয়ে আবেদন করছেন, একসময়ে যা ছিল আশাতীত। তিনি মন্তব্য করেন, হাওড়া জেলার বেশিরভাগ মাদ্রাসার শিক্ষকগণ এমনকি বর্তমানে বেশিরভাগ ম্যানেজিং কমিটিও কমিশনের সপক্ষে এবং মাদ্রাসাগুলো যাতে কমিশনের ছত্রছায়ায় আসে সে প্রচেষ্টায় তাঁরা বদ্ধপরিকর।
ফোরাম সভাপতি ইসরারুল হক মণ্ডল বলেন যে , তারা কখনই সংবিধানের বিরোধী নন, কিন্তু দূর্নীতির বিপক্ষে। তিনি দাবি করেন মূখ্যমন্ত্রী স্বচ্ছতা বজায় রেখে কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ চান। কিন্তু বহু মাদ্রাসা কমিশনের ডাকে সায় দিয়ে শিক্ষক চেয়ে আবেদন করছেন না। কোর্টের আদেশনামা অমান্য করে কন্টাই রহমানিয়ার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশেরও নিন্দা করেন তিনি। উপস্থিত ব্যক্তিবর্গ হাওড়া জেলা সহ সারা পশ্চিমবঙ্গে সমস্ত মাদ্রাসায় স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে একাগ্রতা প্রকাশ করেন।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584