সজিবুল ইসলাম, মুর্শিদাবাদঃ
দীর্ঘ দুই বছর ধরে রাজ্যের বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে শিল্প সহ কলকারখানায় তালা পড়ে যায়। সেই সঙ্গে স্কুলেও তালা পড়ে। গত বছরের শেষের দিকে স্কুল খুললেও সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার নির্দেশ ছিল না। শুধু নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত একাধিক বিধিনিষেধের মধ্যে কোনো রকম ক্লাস শুরু হতে না হতে আবার তৃতীয় ঢেউ চলে আসে তার ফলে নতুন বছরের প্রথমে স্কুলের পঠন পাঠন আবার বন্ধ ঘোষণা করেন শিক্ষা দপ্তর।
দীর্ঘ সময় ধরে স্কুল বন্ধ থাকার কারণে গ্রাম বাংলার পড়ুয়ারা বিভিন্ন কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়। সেই রকম মুর্শিদাবাদ জেলার জলঙ্গী থানার চোয়াপাড়া অঞ্চলের বিশ্বাস পাড়া গ্রামের সোহেল মন্ডল নামের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রকে মাঝির কাজ করতে দেখা গেলো জলঙ্গি পদ্মা নদীতে।
সোহেল পরিবারের একমাত্র সন্তান বলে জানা যায়, তার বয়স ১৪ বছর। এই সময় পড়াশোনা করার কথা আর সেই সময় নৌকা চালাচ্ছে সে। এমনকি পদ্মা নদীর জলে ঘোরার জন্য নৌকার যাত্রী জোগাড় করে বেড়াচ্ছে সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র সোহেল এমনই করুন দৃশ্য দেখা গেলো জলঙ্গী পদ্মা নদীতে।
জলঙ্গী হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র সে, যদিও এইবার স্কুলে ভর্তি হয়নি বলে জানান সোহেল মন্ডল। সোহেল আরো বলেন, স্কুলে কি করবো ভর্তি হয়ে। তাই এবার আর ভর্তি হয়নি স্কুলে। স্কুল বাদ দিয়ে নৌকার হাল ধরেছি যাতে করে আর্থিক ভাবে সাবলম্বী হতে পারি ও পরিবারকে সাহায্য করতে পারি বলে জানান। সোহেলের মত কতো ছেলে যে স্কুল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। যদিও ৭ তারিখ থেকে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার নির্দেশ মত আবারও স্কুলের পঠনপাঠন শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ কোয়েল পাখি চাষে সাফল্যের মুখ দেখছেন মুর্শিদাবাদের সাইনুল
নৌ চালক (মাঝি) আমজাদ বলেন, স্কুলে লেখাপড়া কিছু হচ্ছে না কি করবে স্কুলে গিয়ে। আর যদিও পড়াশোনা করছে তারপরেও কোনো চাকরি নেই। গরীব পরিবারের সন্তানদের পড়াশোনা করিয়ে কোনো কাজ পাওয়ার স্বপ্ন দেখাই বৃথা বলে জানান। যেকোনো কাজ শিখে রাখলেই ভালো। এখন দেখার যে সোহেলের মত ছাত্ররা কি স্কুলের মূলস্রোতে ফিরতে পারবে সেই প্রশ্ন রয়ে যাচ্ছে সকলের কাছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584