নিজস্ব সংবাদদাতা,রামপুরহাটঃ-
একেই বলে পরিবারতন্ত্র। বীরভূমের রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লকের আয়াস পঞ্চায়েতে তৃণমূলের প্রতীকে একই পরিবার থেকে প্রার্থী হয়েছেন ছ’জন। পরিবারের প্রধান ছাড়াও প্রার্থী হয়ে জয়ী হয়েছেন স্ত্রী, মেয়ে, জামাই, ভাই ও বোন। রামপুরহাট ১ ব্লকের ৯ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১২৮ টি আসনের মধ্যে একটি বাদ দিলে বাকি আসনে বিরোধীদের কেউই মনোনয়নপত্রই জমা দিতে পারেনি। নারায়নপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপির পক্ষ থেকে এক জন মনোনয়ন জমা দিলেও বৃহস্পতিবার তিনি প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছেন। ফলে সবকটিতে কার্যত জয়ী হয়েছে তৃণমূল প্রার্থীরা। এখন শুধু সরকারিভাবে ঘোষণার অপেক্ষা।
নির্বাচনে ৮ টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় তাপ উত্তাপ না থাকলেও আয়াস গ্রাম পঞ্চায়েত সর্বত্র আলোচিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ ওই পঞ্চায়েতের ২০ টি আসনের মধ্যে তৃণমূলের আয়াস অঞ্চল সভাপতি আকবর আলম তার পরিবার থেকে ছয়জনকে প্রার্থী করেছেন। তিনি আয়াস গ্রাম পঞ্চায়েতের ১০ নম্বর সংসদ থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাঁর স্ত্রী জামিরা খাতুন ২০ নম্বর সংসদ থেকে দাঁড়িয়েছেন। মেয়ে আপসিয়া খাতুন ৮ নম্বর এবং ৭ নম্বর সংসদ থেকে জামাই মহম্মদ ইউসুফ আলি খান প্রার্থী হয়েছেন। ৪ নম্বর সংসদ থেকে বোন হাবিবা খাতুন এবং ১৭ নম্বর সংসদ থেকে প্রার্থী হয়েছেন আকবর সাহেবের পিসির ছেলে রেজাউল করিম। এবারই প্রথম নয়, গতবছরও ছয়জন প্রার্থীই নির্বাচিত হয়েছিলেন। আকবর সাহেবের দাবি, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনেও এই ছয়জন জয়ী হয়েছিলেন। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এলাকার মানুষের দাবিতে পরিবারের ছয়জনকে পুনরায় প্রার্থী করা হয়েছে। তাছাড়া পঞ্চায়েতের অনাস্থা ঠেকাতেই এই সিদ্ধান্ত। তিনি জানান,” গতবার বিরোধীদের হারিয়ে জয়ী হয়েছিলাম। কিন্তু এবার বিরোধীরা প্রার্থীই দিতে পারেনি। ফলে সকলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছি।” তিনি বলেন, “অন্য সদস্যদের সমর্থন নিয়ে পঞ্চায়েত চালাতে গিয়ে পদে পদে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। পরিবার থেকে প্রার্থী হলে পঞ্চায়েত পরিচালনার ক্ষেত্রে কেউ বিরোধীতা করবে না। পরিবারের সদস্যরা তো আর বিরুদ্ধাচারণ করবে না”। পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ তুলে সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সঞ্জিব বর্মণ বলেন, “ওদের নীতি হল লুটেপুটে খাওয়া। উন্নয়নের নামে সব টাকা হজম করার জন্যই এই সিদ্ধান্ত”। বিজেপির জেলা সহসভাপতি শুভাশিস চৌধুরী বলেন, “আমরা প্রার্থী দেওয়ার জন্য ব্লকে গিয়েছিলাম। ওরা ভয় পেয়ে সন্ত্রাস সৃষ্টি করে বিরোধীদের মনোনয়ন জমা দিতে দেয়নি”। বিধায়ক মিল্টন রশিদ বলেন, “ লুটেপুটে খেতেই একই পরিবারের ছয়জন প্রার্থী। আর বিরোধী থাকলে চুরি ধরা পড়ে যাবে তাই বিরোধীদের মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হল না”।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584