মেলেনি অ্যাম্বুলেন্স, মাকে বাইকে বেঁধে হাসপাতালে ছেলে

0
54

নিজস্ব সংবাদদাতা,পূর্ব মেদিনীপুরঃ

মায়ের ডাকে ঈশ্বরচন্দ্র দামোদর নদ পেড়িয়েছিলো। তবে কোলাঘাটের এই যুবক নদ বা নদী নয়, মাকে নিয়ে কুড়ি কিমি রাস্তা পাড়ি দিল বাইকে করে।

মায়ের দেখা দিয়েছে করোনা উপসর্গ। মেলেনি অ্যাম্বুলেন্স,তাই গামছা বেঁধে মাকে বাইকে বসিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেল ছেলে। এমনই এক করুণ ঘটনা লক্ষ্য করা গেল পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট এলাকায়। পরিবারের তরফ থেকে জানা গিয়েছে, বাড়ির বড় দাদা ও বৌদি করোনা আক্রান্ত হয়ে ভর্তি আছে পাঁশকুড়া বড়মা করোনা হাসপাতালে। বাড়ির সকলের লালারস পরীক্ষা হয়েছে।

son | newsfront.co
গামছায় মাকে বেঁধে হাসপাতালের পথে ছেলে। নিজস্ব চিত্র

কিন্তু রিপোর্ট এখনও হাতে আসেনি। তারই মাঝে মায়ের কয়েকদিন ধরে শ্বাসকষ্ট ও জ্বর রয়েছে। সেই মতে গ্রামীণ আশা কর্মীর সাহায্য চেয়েছিলেন কোলাঘাটের ছাতিন দা গ্রামের এক যুবক। স্বাস্থ্যকর্মীরা ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসার কথা জানান ছেলেকে। সেই মতন গত শনিবার অর্থাৎ ১১ই জুলাই কোলাঘাট উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে মাকে নিয়ে বাড়ির ছোট ছেলে চিকিৎসার জন্য যায়।

কিন্তু ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র জানিয়ে দেয় করোনা উপসর্গ রয়েছে মায়ের। পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেয় কোলাঘাট ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র। করোনা উপসর্গ থাকায় কোন গাড়ি নিয়ে যেতে রাজি হয়নি তাদের। মেলেনি সরকারি অ্যাম্বুলেন্স।

আরও পড়ুনঃ কোভিড আক্রান্ত হলেন মন্ত্রী সাধন পাণ্ডের স্ত্রী

কোলাঘাটের বিডিও- র দ্বারস্থ হয় ওই পরিবার। ওই পরিবারের অভিযোগ, বিডিও সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে দিতে পারেননি। ক্রমশ অসুস্থ হয়ে পড়ে বৃদ্ধা মহিলা। বাধ্য হয়ে বাড়ির ছোট ছেলে মায়ের চিকিৎসার জন্য নিজে ঝুঁকি নিয়ে মোটর বাইকে মাকে বসিয়ে গামছায় বেঁধে পাঁশকুড়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন।

সরকারি গাফিলতির চরম নিদর্শন দেখল কোলাঘাটের এলাকাবাসী। যদিও কোলাঘাটের বিডিও মদনমোহন মণ্ডল জানান, “ব্লকের হাতে যে অ্যাম্বুলেন্স ছিল সেটা দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ড্রাইভার মারা গিয়েছে।

আর যে গাড়িটি ছিল সেটা রোগী বহন করছে। কিছুক্ষণ আমি ওয়েট করতে বলি। কিন্তু ওরা ধৈর্য হারিয়ে নিজেরাই নিয়ে চলে যায়। তবে এ ধরনের ঘটনা আর হবেনা। আমরা দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করছি যাতে রোগীরা দ্রুত পরিষেবা পায়।”

আরও পড়ুনঃ করোনার জোড়ালো থাবা দক্ষিণ দিনাজপুরে

এখানেই প্রশ্ন, তাহলে কি ব্লক প্রশাসন আগে থেকে সচেতন নয়। কেন এত বড় ব্লক, একটি অ্যাম্বুলেন্সের ওপর নির্ভরশীল থাকবে। প্রতিদিন করোনা দাপট দেখাচ্ছে কোলাঘাট ব্লক এলাকায়। ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র কেন ওই যুবকের মাকে পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে মোটর বাইকে করে নিয়ে যাওয়ার জন্য পারমিশন দেবে।

বা কেন আটকালো না সেই মুহূর্তে। প্রশ্ন তুলেছে আক্রান্তের বাড়ির আত্মীয়-পরিজনরা। এই মুহূর্তে মা ও ছেলে দুজনেই পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে রয়েছে।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here