শিবশংকর চ্যাটার্জ্জী,দক্ষিন দিনাজপুরঃ
কোলকাতায় বিদ্যাসাগর মূর্তি ভাঙাকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতি যখন তোলপাড়, তখন বালুরঘাটের চকভৃগুতে একটি দোকানের সামনে অবহেলায় অনাদরে পড়ে রয়েছেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের পূর্ণাবয়ব মূর্তি।
কোনো এক বই ব্যাবসায়ীর খেয়ালেই গড়ে ওঠা বিদ্যাসাগরের এই মুর্তিটি বছরের পর বছর হার্ডওয়্যার দোকানের আসবাবের ভিড়ে দাঁড়িয়ে থাকেন।বছরে একটা মালাও জোটে না। রাস্তার ধারে সিকিউরিটি গার্ডের মত দাঁড় করিয়ে রাখা হলেও,হুঁশ নেই কারও।মূর্তিটির অপমানে ক্ষোভে ফুসছেন বাসিন্দারা, মূর্তিটি সম্মান পাক,দাবি সকলের।
শহরের দিক থেকে বালুরঘাট স্টেশনের দিকে যেতে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে রয়েছে বিদ্যাসাগরের এই পূর্ণবয়াব মুর্তিটি।
একটি হার্ডওয়ার দোকানের সামনে প্রায় বারো বছর ধরে অবহেলায় পড়ে রয়েছে এই মূর্তিটি। স্থানীয় এক বই ব্যবসায়ীর খেয়ালেই একসময় গড়া হয়েছিল মূর্তিটি। পরবর্তীতে বইয়ের দোকানটি বন্ধ হয়ে গেলেও এবং আশপাশে হার্ডওয়ার বা অন্যান্য দোকান চালু হলেও, কিন্তু বর্ণপরিচয় হাতে বিদ্যাসাগরের অবস্থান বদলায়নি।
আরও পড়ুনঃ নবজাগরণের পথিকৃৎ বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙাকে কেন্দ্র করে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান
দিনভর হার্ডওয়ার দোকানের সামগ্রির আড়ালে চাপা পড়ে থাকেন বিদ্যাসাগর মহাশয়।পথচলতি মানুষের চোখে ওই ছবিটি বার বার ধরা পড়লেও, এ ব্যাপারে নিশ্চুপ প্রায় সকলেই।জন্মদিন,প্রয়াণ দিবসতো বটেই বছরের কোন দিনই ওই মুর্তির গলায় মালা জোটে না।মাঝে মাঝে স্থানীয় শিল্পী ব্রতিন রায় ওই মূর্তিতে মালা দিয়ে সম্মান জানানোর চেষ্টা করলে তাকেও কটুক্তির মুখে পরতে হয় বলে দাবি ওই শিল্পীর।
তাইতো কলকাতায় বিদ্যাসাগর কলেজের বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার ঘটনা যখন রাজ্য রাজনীতি উত্তপ্ত,এমন কি ওই মূর্তির অপমান হয়েছে বলে বুদ্ধিজীবী থেকে রাজনীতিকরা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করছে।প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে কে আগে মূর্তি গড়ে দেবেন তার তরজা চলছে,তখন বালুরঘাটে বছরের পর বছর বিদ্যাসাগরের মূর্তি অবহেলা, অবজ্ঞা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেও কারও নজর নেই।
হার্ডওয়ার দোকানের মালিক সমীর রায় বলেন,স্থানীয় এক বই ব্যবসায়ী এখানে মূর্তিটি বসিয়ে দিয়ে গেছিল।তখনই আপত্তি জানিয়ে ছিলাম।কিন্তু সে সময় তিনি সে সব শোনেন নি।পরে বইয়ের দোকান বন্ধ হয়ে গেলেও কিন্তু মূর্তিটা সরাননি।এর ফলে আমাদের দোকানের আসবাবপত্র রাখতে সমস্যা হচ্ছে।কিন্তু উপায় নেই,তাই মূর্তিকে আড়াল করেই দোকানের সামগ্রী রাখতে হচ্ছে।খারাপ লাগে, কিন্তু কিছু করার নাই।
চকভৃগু গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলের নেতা তথা তৃণমূল কংগ্রেস সদস্য চন্দন চৌহান বলেন,এভাবে বিদ্যাসাগরের অপমান মানবো না।আমরা খুব শীঘ্রই এনিয়ে আন্দোলনে নামবো।
বিজেপি পরিচালিত চকভৃগু গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান পার্থ দাস বলেন,এটি একটি ব্যক্তিগত উদ্যোগে বসানো হয়েছিল বলে শুনেছি।ওই মালিক এর আগেও পঞ্চায়েতকে মুর্তিটি দিতে অস্বীকার করেছিল।তবে আবার আমরা পঞ্চায়েতের তরফে মূর্তিটি পাবার জন্য আবেদন জানাবো।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584