পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ
জঙ্গি সংযোগের অভিযোগে বীরভূমের পাইকার থানার কাশিমনগর থেকে নাজিবুল্লা নামে এক ব্যাক্তিকে গ্রেফতার করলো এসটিএফ কলকাতা। বৃহস্পতিবার রাত দেড়টা নাগাদ নিজের বাড়িতে ঘুমাচ্ছিলো নাজিবুল্লা। আচমকা রাতের বাড়ি দরজায় দাদার নাম ধরে ডাকাডাকি শুরু করে, দরজা খুলতেই বলে পুলিশের লোক, দাদার খোঁজ করে এবং ঘুম থেকে তুলে তাকে নিয়ে চলে যায়, এমনটাই দাবি করে ধৃত নাজিবুল্লাহর ভাই।
এদিকে ধৃতের স্ত্রী হাসিনা মমতাজ একেবারে ভেঙে পড়েছেন। কিসের ভিওিতে তার স্বামীকে ধরলো পুলিশ। শুধু সন্দেহের বশে ধরে নিয়ে যাবে আমার স্বামীকে? সে তো শুধু কাজ করতো। ছোট ছোট এই বাচ্চাগুলোকে কে দেখবে?
আরও পড়ুনঃ গুন্ডামি বন্ধ করে দেবো দলীয় কার্যালয় উদ্বোধনে এসে বার্তা দিলীপ ঘোষের
জানা গেছে, হিয়াত নগর মোড়ে তুবা কম্পিউটার প্রেস নামে একটি ছোট্ট দোকান আছে। পাশেই তার ভাইয়ের চায়ের দোকান। ছাপার কাজ করতে কখনও রামপুরহাট আবার কখনও জঙ্গিপুর যেতে হতো বছর পঞ্চাশের নাজিবুল্লাহকে। তিনি একজন আলেম।
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন, ধর্ম পুস্তক পড়তেন। পাড়া প্রতিবেশীরা তাকে একজন ভালো মানুষ হিসেবেই জানেন। এলাকার প্রধান আব্দুল গণি বলেন, যতদূর জানি, উনি খুব ভদ্র মানুষ। কোথাও ভুল হচ্ছে, জঙ্গিদের সাথে উনার যোগ থাকতে পারে না।
আরও পড়ুনঃ ফালাকাটায় তৃণমূলের বঙ্গধবনি যাত্রায় ঋতব্রত
উনার নাবালক ছেলে মোবাইলে কিছু একটা শেয়ার করে। কিন্তু সিম নাজিবুল্লাহ সাহেবের নামে ছিল। তাই তাঁকেই ধরে নিয়ে গেছে। ধৃতের প্রতিবেশী মুহাম্মদ সেকেন্দার ও মণিরুল ইসলাম বলেন, প্রেসের কাজ নিয়ে থাকতেন অভাবের সংসার ছোট ছোট বাচ্চা আছে আজ খেলে, কাল খেতে পাবে না। কোথাও ভুল হচ্ছে। কোন বাইরের লোকের আনাগোনা নেই। নাজিবুল্লাহ সাহেব ভালো মানুষ।
নাজিবুল্লাহ সেখের মোট সাতটি সন্তান। তার মধ্যে বড় নাসিহা খাতুন। অভাবের সংসারে তার বিয়ে দিয়ে উঠতে পারেন নি নাজিবুল্লাহ সেখ। তারা তিন বোন ও চার ভাই। ছেলেদের মধ্যে বড় শিবগাতুল্লাহ। সে জঙ্গিপুরে মোমিনতলা জুনিয়র মাদ্রাসায় নবম শ্রেণিতে যাতায়াত করে পড়াশোনা করে। বাকি তিন ভাই খুব ছোট।
শিবগাতুল্লাহ বলে, হঠাৎ করে কি হয়ে গেল। বৃহস্পতিবার রাত দেড়টা নাগাদ ৩৫- ৪০ জন সাদা পোশাকের পুলিশ আসে। তাদের মধ্যে একজন ডেকে দরজা খোলায় বাকিরা বাড়ি ঘিরে ফেলে। তারপর বাবার নাম জিজ্ঞেস করে।
আরও পড়ুনঃ আসানসোল আদালতে আত্মসমর্পণ গরুপাচার কাণ্ডের মূলচক্রী এনামুলের, হাজির সতীশ কুমারও
কি করে জিজ্ঞেস করে। মাকে কিছু প্রশ্ন করে। মায়ের ছবি তোলে। বাড়ির চারটে মোবাইল ও একটা খেলনা মোবাইল নিয়ে নেয়। আমার ক্লাসের কিছু কাগজ পত্র নেয়, বই নেয়। বাড়িতে রাখা হাদিস নেয়। এছাড়াও প্রেসের কম্পিউটার, ল্যাপটপ, সিপিউ নিয়ে যায়।
শিবগাতুল্লাহ জানায়, মোবাইলে সে একটা কিছু শেয়ার করেছিল। তারজন্য বাবাকে ধরে নিয়ে গেল।
যদিও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সাকিব আলি নামে একটা ফেক একাউন্ট থেকে উগ্রবাদের ভাবনা ছড়ানো হতো। সেরকম বইপত্র পুলিশ উদ্ধার করেছে। এব্যাপারে শিবগাতুল্লাহকে প্রশ্ন করা হলে, সে কিছু বলতে পারে নি। গোটা ঘটনার তদন্তের জন্য ধৃতকে কোলকাতা নিয়ে গেছে এসটিএফ।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584