নাদিহা বেগম,আরামবাগঃ
হুগলির গোঘাটে দিঘির জমি জটে আটকে রেল লাইনের কাজ, তাই আদালতের বাইরে আলোচনা করে ভাবাদিঘির জট ছাড়াবার চেষ্টা করে প্রশাসন শুক্রবার। তবে সেই চেষ্টা কতটা সফল তা নিয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে। ভাবাদিঘিতে ৩ একর জমি জটে থমকে রেললাইন পাতার কাজ। জমির মালিকদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল দীঘির পাশ দিয়ে রেলপথ তৈরি করতে হবে। এনিয়ে একাধিকবার প্রশাসনিক স্তরে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু, কোনও সুরাহা হয়নি। ১৬০জন মালিকের মধ্যে ৯১জনের আপত্তিতে থমকে রয়েছে কাজ। অনেক জটিলতার পরে গ্রামবাসীদের নিয়ে বসার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন।
এদিন বিকাল ৩ টা নাগাদ গোঘাটের ভাবাদিঘির পাড়ে ভাবাদিঘি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি সভা ডাকা হয়। এই সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্য পরিবহণ দফতরের চিফ সেক্রেটারি , পূর্ব রেল চিফ ইঞ্জিনিয়ার, আরামবাগের সাংসদ, গোঘাটের বিধায়ক সহ আরো অনেকে। তবু মিটল না সমস্যা। যথা সময়ে সকল উচ্চ পদস্থ কর্ম কর্তারা উপস্থিত হন। ভাবাদিঘির মানুষ ও উপস্থিত হন এই বৈঠকে। প্রত্যেক গ্রামবাসী হাতে দীঘি বাঁচানোর আহ্বান জানিয়ে ফেস্টুন নিয়ে মিছিল করে সংঘবদ্ধ হয়ে এই বৈঠকে আসেন। তাদের মিছিলের ব্যানারে, ভাবাদিঘি বাঁচিয়ে দীঘির উত্তর দিক থেকে লাইন যাওয়ার প্রস্তাব তারা তুলে ধরেন। সভা শুরুর মুখে তৃণমূলের বহিরাগতরা ভাবাদিঘিতে প্রবেশ করে। আর তাতেই উত্তেজনা বাড়ে। গ্রামবাসীরা তৃণমূলের বহিরাগতদের বের করে দেবার দাবিতে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। ৭০ ঊর্ধ্ব বৃদ্ধাও এই আন্দোলনে সমান তীব্রতার সঙ্গে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। আর তাতেই নরম হতে হয় পুলিস কে। বহিরাগত দের বিতারণের পর শুরু হয় বৈঠক। গ্রামবাসীরা জানান “রেল লাইন তৈরির বিপক্ষে আমারা নই, তবে ভাবাদিঘি বুজিয়ে নয়। দীঘির উত্তর দিক থেকে লাইন গেলে আমরা সহযোগিতা করবো।”
এরই মাঝে নাটকীয় ভাবে সভায় উপস্থিত হন ইচ্ছুক দিঘীদাতারা। আর তাতে আবার উত্তপ্ত হয় জনগণ। ইচ্ছুক দিঘীদাতারা উপস্থিত হওয়ায় গ্রাম বাসীরা সভা ছেড়ে চলে যান। তাদের দাবি, যারা আন্দোলন না করে স্বেচ্ছায় দীঘি দিয়েছে তাদের উপস্থিতিতে তারা সভা করতে ইচ্ছুক নয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বোঝানো হলেও দাবিতে অনড় গ্রামবাসীরা। তাই নতুন করে আবার উত্তপ্ত হচ্ছে ভাবাদিঘি। ভাবাদিঘির মানুষের বাড়ি তে গিয়ে সভা করার উদ্যোগ গ্রহণ করে প্রশাসন।
প্রশাসনিক আধিকারিকরা জানান অবশেষে ভাবাদিঘির জমিজট কাটতে চলেছে। তারা জানান লিখিত উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিলেই কাজ শুরুর দাবি জানিয়েছেন দিঘি বাঁচাও কমিটির মানুষ। তবে কি লিখিত চায় সে বিষয়ে এখনও পরিষ্কার করিনি গ্রামবাসীরা। রয়েছে ধোঁয়াশা তাদের দাবি না মেনে নিলে পিছু হটবে না গ্রাম বাসিরা। এদিনের এই সভা বার বার বাতিল হবার পরে ভাবাদিঘির ভবিষ্যত কী হবে সেদিকেই তাকিয়ে রাজ্যবাসী!
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584