মনিরুল হক,কোচবিহারঃ
৭ বছর আগে প্রেমিকা তার প্রেমিককে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল “তোমাকে ছাড়া জীবনে কাউকেই বিয়ে করব না।” তাই প্রেমিক তার প্রেমিকার ভালবাসার কোন খামতি রাখেনি।দীর্ঘ সাত বছর ধরে ভালবেসে এসেছিল প্রেমিক তার প্রেমিকাকে।
প্রেমিকাও তাকে মন প্রান দিয়ে ভালবেসেছে।কিন্তু দীর্ঘ ৭ বছর পর প্রেমিক জানতে পারে যে তার ভালবাসার মানুষটির অন্য জায়গায় বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। তখন প্রেমিক নিজেকে সামলে রাখতে পারেননি। বাধ্য হয়ে ধুপগুড়ির অনন্তরে পথে বেছে নেয়।
নিজের ছবি–সহ প্রেমিকার সঙ্গে তোলা বেশকিছু ছবি ও বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড নিয়ে চলে এল প্রেমিকার বাড়ির সামনে ধর্না দিতে।
প্রেমিকার বাড়ির সামনে রীতিমত ওই প্ল্যাকার্ডে লেখা “আমার ৭ বছরের ভালবাসা ফিরিয়ে দাও।” চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় রীতিমতো হইচই পড়ে যায় গোটা কোচবিহার জেলার নাটাবাড়ি বিধানসভার অন্তর্গত চিলাখান এলাকা।
জানা গেছে, প্রেমিক ওই যুবকের নাম সঞ্জয় দাস। তার বাড়ি কালজানি ভেলাকোপা এলাকায়। প্রেমিকার নাম দিশানি পাল।
তার বাড়ি চিলাখানা বাজার সংলগ্ন এলাকায়। তাদের প্রেম শুরু হয় ২০১২ সাল থেকে। একে অপরকে ভালবাসত যখন তার দশম শ্রেণীতে পড়তে। প্রেমিকের মনে হয়েছিল তাদের ছোট বেলার প্রেম কোনভাবে নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না।
তাই সঞ্জয় তার বন্ধুদের সাথে নিয়ে প্রেমিকা দিশানি পালের বাড়িতে ধর্নায় বসে।
এদিন ধর্না বসে প্রেমিক সঞ্জয় দাস বলেন, “আমি দিশানিকে ২০১২ সাল থেকে ভালবাসি ও আমাকে ভালবাসে। আমরা তখন দশম শ্রেণীতে পড়ি চিলাখানা হাই স্কুলে।
আরও পড়ুনঃ বিয়ের পরেও বউয়ের অন্যত্র বিয়ে,প্রতিবাদে ধর্ণায় যুবক
একসাথে উচ্চমাধ্যমিক তারপর তুফানগঞ্জ কলেজে পড়াশুনা। আমি যখন বি এ দ্বিতীয় বর্ষে পড়া ছেড়ে দিলাম। তারপরও পড়াশুনা করেই চলেছে দিশানি।
দিশানি আমার বাড়িতে যাওয়া আসা করত। আমার বাড়ির লোকজনকে আমাদের ভালবাসার কথা জানিয়েছি। আমাদের বাড়ির লোকজন মেনেও নিয়েছে দিশানিকে।
দীর্ঘ সাত বছর পর আমি জানতে পেলাম দিশানির কাছ থেকে আমাদের ভালবাসা ওর মা মেনে নেই নি কোন দিনই। দিশানি আমাকে জানিয়েছে, যদি ও আমাকে ভালবাসে তাহলে না কি দিশানির মা আত্মহত্যা করবে।
তারপর দিশানি আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পরে শুনতে পাই দিশানির বিয়ে ঠিক হয়েছে শিলিগুড়ির এক পাত্রের সাথে।
ওই পাত্রের নাম শুভময় পাল। যখন আমি শুনতে পাই তখন আমি কি করব বুঝে উঠতে পারি নি। তখন ভাবলাম তার বাড়ির সামনে ধরনায় বসব। কারন যাকে এত ভালবাসি সে যদি আমাকে ছেড়ে অন্যের ঘরে চলে যায় তাহলে আমার আর বেঁচে থেকে লাভ কি।
তাই বাধ্য হয়ে দিশানির বাড়ির সামনে ধর্নায় বসি।”সঞ্জয় আরও বলেন, ও যখন অন্য ছেলেকে বিয়ে করবে বলে ঠিক করেছে। তাহলে আমার সাত বছবের ভালবাসা ফিরিয়ে দিক না হলে আমি এখানেই আত্মহত্যা করব। আমি আমার ভালবাসা ফিরে পেতে চাই। তাকে নিয়ে সুখে সংসার করতে চাই।
পূর্বের খবর : বিয়ের রেজিস্ট্রি শংসাপত্র হাতে প্রেমিকের বাড়ির সামনে ধর্ণায় যুবতী
ওই ঘটনার পর থেকে স্থানীয় লোকজন প্রেমিক সঞ্জয়কে দেখার জন্য রীতিমত ভিড় জমেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে তুফানগঞ্জ থানার পুলিশ। এখন দেখার বিষয় সঞ্জয় কি ধুপগুড়ির অনন্তের মত সাফল্য পায় না কি ব্যর্থ হয়। সেটা সময়ের অপেক্ষা।
তবে এ বিষয়ে স্থানীয় এক প্রেমিক যুবক রাহুল হোসেন বলেন, “মেয়েটি এতদিন সঞ্জয়কে বলে এসেছিল সে তাকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করবে না। তাই সঞ্জয় তার ভালোবাসার কোন কমতি রাখেনি। কিন্তু যখন সে জানতে পারলো তার ভালবাসার মানুষটি অন্যের সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছে। তারপর সঞ্জয় ধরনায় বসে তার সাত বছরের ভালোবাসা ফিরে পাওয়ার জন্য।
এবার আপনারাই বলুন তো এখানে প্রতারণা কে করলো। সব সময় সমাজের কাছে শুনতে হয় ছেলেরাই মেয়েদের সাথে ভালোবাসা নিয়ে, মন নিয়ে খেলা করে, প্রতারণা করে, যার জন্য জেলে যেতে হয় অনেক ছেলেদেরকে। তাহলে এবার একই অপরাধে জন্য বা মেয়েটিকে শাস্তি দেওয়া হবে না কেন।
তাই আমরা সঞ্জয়কে বলে তুই তোর ভালবাসার অধিকার নিয়ে ধর্না চালিয়ে যা আমরা আছি তোর সাথে।”
যদিও এবিষয়ে সঞ্জয়ের প্রেমিকার দিশানির ও তার মায়ের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা কোন ভাবেই সম্ভব হয় নি।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584