কুশমন্ডি থেকে ইস্টবেঙ্গলের মহিলা দলে, আপ্লুত এলাকাবাসী

0
94

তপন চক্রবর্তী, দক্ষিণ দিনাজপুরঃ

শনিবার কোলকাতা- রাধিকাপুর এক্সপ্রেসে কালিয়াগঞ্জ স্টেশনে সকালে নেমে এক সাক্ষাৎকারে ইস্টবেঙ্গল মহিলা ফুটবল দলের ক্যাপ্টেন সুনীতা সরকার ও গোলরক্ষক বুলি সরকার বললেন স্বপ্নেও ভাবিনি ইস্টবেঙ্গল মহিলা ফুটবল দলের ক্যাপ্টেন ও গোলরক্ষকের দায়িত্ব পাবো।

Sunita Buli | newsfront.co
স্টেশনে সুনীতা-বুলি। নিজস্ব চিত্র

আমাদের দুজনের উপর যে গুরু দায়িত্ব তুলে দিয়েছে আমরা সেই দায়িত্ব কথায় নয় খেলার মাধ্যমে অক্ষরে তা অক্ষরে পালন করবার চেষ্টা করবো।

Football player | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

ক্যাপ্টেন সুনীতা সরকারের বাড়ী দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমন্ডির প্রত্যন্ত গ্রাম সরলার (পুপরা) ও গোল রক্ষক বুলি সরকারের বাড়ী দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমন্ডির সরলা গ্রামের তেলিবাড়িতে। গত ৩রা ফেব্রুয়ারী কলকাতার ইস্টবেঙ্গল মহিলা ফুটবল দলের ক্যাপ্টেন ও গোলরক্ষক হবার পর তারা পর পর তিনটি ম্যাচ খেলেছে।

আরও পড়ুনঃ জাতীয় স্তরের ক্যারাটে চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা, রূপা-ব্রোঞ্জ পদক জয় রায়গঞ্জের

ক্যাপ্টেন সুনীতা সরকার বলেন ইস্টবেঙ্গল দলের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলে তালতলা দীপ্তি সংঘকে ৬-১গোলে হারিয়ে জয়ী হয়। দ্বিতীয় ম্যাচটি পুলিশ এসির বিরুদ্ধে খেলে ড্র হয় এবং তৃতীয় ম্যাচটি খেলে বিদ্যুৎ এ সির সাথে।বিদ্যুৎ এ সিকে ইস্টবেঙ্গল ১৮-০গোলে পরাজিত করে। ক্যাপ্টেন সুনীতা সরকার বলেন দুই একদিনের মধ্যেই কলকাতায় গিয়েই আবার মাঠে নামতে হবে।

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমন্ডি সরলা ভুপেন্দ্র নাথ উচ্চ বিদ্যালয় বেশ কয়েক বছর ধরেই বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের মধ্য থেকে এই দুজন সুযোগ পেয়েছে।এই দুই প্রাক্তন ছাত্রী সুনীতা সরকার ক্যাপ্টেনের দায়িত্ব এবং বুলি সরকার গোল রক্ষকের দায়িত্ব পেয়েছে। পড়াশোনার সুবাদে দুজনেই কলকাতায় থাকে বর্তমানে। সরলা ভুপেন্দ্র নাথ উচ্চ বিদ্যালয়ে তাদের ফুটবলে হাতে খড়ি হয়।

গত ২০১৪ সালে বর্তমানে ইস্টবেঙ্গল মহিলা ফুটবল দলের ক্যাপ্টেন সুনীতা সরকার বিদ্যালয়ের গন্ডি পেরিয়ে এশিয়ান ফুটবল চ্যাম্পিয়ানশিপে আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতীয় দলের হয়ে শ্রীলঙ্কায় খেলতে যায়।সুনিতার বাবা ক্ষীরোদ সরকার একজন পাট্টা প্রাপ্ত চাষী মা বাসন্তী দেবী গৃহবধূ,।

বুলি সরকারের বাবা সুশীল সরকার একজন প্রান্তিক চাষী, মা সুনতি সরকার কৃষি কাজ করে থাকে। দুজনের বাবা ও মায়ের বক্তব্য আমাদের মেয়ের খেলাধুলার সব দেখভাল প্রধান শিক্ষক সত্যজিৎ সরকার করেছেন।তার কৃপায় আমাদের মেয়েরা কলকাতায় খেলার সুযোগ পেয়েছে। আমাদের কোন সামর্থ নেই এইসব করার। পেট চিন্তায় চমৎকার আমাদের।

সুনীতা জানায় সরলা ভুপেন্দ্রনাথ বিদ্যালয় দুইবার সুব্রত কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়।একবার রানার্স হয়। এছাড়াও ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে জাতীয় স্তরে খেলার সুযোগ পেয়ে সুনীতা ইতিমধ্যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে। বিগত একবছর ধরে কলকাতায় একটি ক্লাবের হয়ে লীগ ফুটবল খেলছে বলে সে জানায়। সুনীতা ও বুলির সাথে কালিয়াগঞ্জ স্টেশনে নামে কুশমন্ডির সরলা ভুপেন্দ্র নাথ উচ্চবিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সভাপতি সুশান্ত চন্দ্র সরকার।

তিনি বলেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমন্ডি ব্লকের মত পিছিয়ে পড়া এলাকার প্রত্যন্ত সরলার মত একটি গ্রামের দুই হত দরিদ্র ঘরের মেয়ে তাদের পরিশ্রমের মাধ্যমে ইস্টবেঙ্গলের মত একটি ভারত বিখ্যাত ক্লাবে মহিলা ফুটবল দলের ক্যাপ্টেন হয়ে ফুটবল খেলবে এটা আমাদের কাছে স্বপ্নের মত মনে হয়।আমরা গ্রামবাসী তথা সমগ্র দক্ষিণ দিনাজপুর সুমীতা ও বুলির জন্য সবাই গর্বিত।

বিদ্যালয়ের ফুটবল খেলা পাগল প্রধান শিক্ষক ডঃ সত্যজিৎ সরকার বলেন, ইস্টবেঙ্গলের মত এত বড় একটি ক্লাবের মহিলা ফুটবল দলের ক্যাপ্টেন ও গোলরক্ষক হয়ে আমার বিদ্যালয়ের প্রাক্তন দুই ছাত্রী খেলছে এর চেয়ে আনন্দের আর কি হতে পারে?

আমার বিদ্যালয়ের প্রাক্তন দুই ফুটবল খেলোয়াড় ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সুনাম রক্ষার সাথে সাথে আমাদের গর্ব সুনীতা ও বুলি জীবনে আরো অনেক উন্নতি করবে এই প্রত্যাশা ও আশীর্বাদ তাদের জন্য রইলো।

জানা যায়, সুমীতা ও বুলি কালিয়াগঞ্জ থেকে কুশ মন্ডিতে গিয়ে পৌঁছালে কুশ মন্ডির সাধারণ মানুষ একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের দুজনকেই বিপুলভাবে সম্বর্ধনা দেয় বলে জানা যায়।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here