আমেরিকার ব্রিটনি স্পিয়ার্স মামলার উদাহরণ টেনে ব্যাখ্যা প্রধান বিচারপতি রামন্নার

0
52

নিউজ ফ্রন্ট,ওয়েব ডেস্কঃ

২১ বছর বয়সী শিষ্যাকে তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে আটকে রেখেছেন মেয়েটির বাবা-মা, এই অভিযোগে সুপ্রীম কোর্টে একটি হেবিয়াস কর্পাস পিটিশন দায়ের করেন ৪২ বছর বয়স্ক এক ‘আধ্যাত্মিক গুরু’। মামলাকারীর দাবি, ওই শিষ্যা তাঁর সঙ্গে একসাথে বসবাস করে আধ্যাত্মিক জীবন কাটাতে চান কিন্তু প্রাপ্ত বয়স্কা কন্যার সেই ইচ্ছেতে বাধা দিচ্ছেন তাঁর বাবা-মা। এর আগে প্রাথমিক পুলিশি তদন্তের ভিত্তিতে মেয়েটির সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতার ওপর সন্দেহ প্রকাশ করে কেরল হাইকোর্ট ওই মামলা খারিজ করে দেয়।

Britney Spears
কোলাজ চিত্র

কেরল হাইকোর্টের রায় ‘পিতৃতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গী থেকে নেওয়া’ এই মর্মে শীর্ষ আদালতের শুনানিতে মন্তব্য করেন ওই আধ্যাত্মিক গুরুর আইনজীবী গোপাল শংকরনারায়নন। তিনি বলেন মেয়েটির সাথে কথা বলার পরে আদালত মেয়েটির মানসিক স্থিতি সম্পর্কে সন্দিহান হয় এবং মেন্টাল হেলথকেয়ার আইন অনুযায়ী তার মানসিক পরীক্ষার নির্দেশ দেয়। মামলাকারীর আইনজীবী বলেন, কিন্তু মেয়েটির বয়স ২১ বছর তার নিজের জীবনের সিদ্ধান্ত নিজে নেওয়ার আইনসঙ্গত অধিকার রয়েছে।

মামলার শুনানিতে দেশের প্রধান বিচারপতি বলেন সব সমস্যার ভেতরে আদালত ঢুকতে পারে না, সমাধান ও করতে পারেনা একথা ঠিক তবে এক্ষেত্রে মামলাকারীর আচরণ সন্দেহজনক এবং মেয়েটির বয়স ২১ হলেও যে মানসিক অবস্থায় সে রয়েছে সেখানে কোন সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়।

বিশেষত ভারতের মত দেশে যেখানে মানসিক অসুখ নিয়ে কেউ মুখ খুলতে চান না সেখানে মেয়েটির পরিবার জানাচ্ছে যে তাঁদের সন্তান বেশ কিছু মানসিক সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এমনকি মেয়েটি ওই গুরুর কাছে প্রথমে গিয়েওছিল তার নিজের কাউন্সেলিংয়ের উদ্দেশ্যে তারপর তাদের মধ্যে কোনরকম সম্পর্ক তৈরি হয়।

আরও পড়ুনঃ কর্ণাটক সহ আট রাজ্যে নতুন রাজ্যপাল নিয়োগ রাষ্ট্রপতির

মামলাকারীর আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে প্রধান বিচারপতি বলেন, “এসব আধ্যাত্মিক গুরু কেমন হয় সে আপনিও জানেন। সেক্ষেত্রে পরবর্তীকালে মেয়েটির কোন ক্ষতি হওয়ার চাইতে সে তার বাবা-মায়ের কাছে সুরক্ষিত থাকছে এটাই কি ভালো নয়?” এছাড়া ওই গুরুর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতনের মামলা রয়েছে POCSO আইনে। সেখানে মেয়েটিকে যেতে দেওয়া কতটা নিরাপদ সে নিয়ে যথেষ্ট সংশয় থেকেই যাচ্ছে।

এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “গত সপ্তাহে আমেরিকার একটি প্রায় একই রকম মামলা আমরা দেখেছি”।মামলাকারীর আইনজীবী বলেন প্রধান বিচারপতি নিশ্চয় ব্রিটনি স্পিয়ার্স মামলার কথা বলছেন! প্রধান বিচারপতি রমান্না জানান, এটিও একই রকম মামলা যেখানে মেয়েটি বাবার বিরুদ্ধে তাকে আটকে রাখার অভিযোগ জানায়। জানা যায় সেও মানসিক ভাবে সুস্থ নয় কিন্তু চিকিৎসার জন্য তার সম্মতি চাই আবার আমেরিকার আইন অনুযায়ী মানসিক ভাবে সুস্থ ব্যক্তি ছাড়া তার সম্মতি মূল্যহীন।

আরও পড়ুনঃ ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় আদালতের নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি সরকারের

এক্ষেত্রেও সব দিক বিবেচনা করে মেয়েটিকে ওই গুরুজীর কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া সম্ভব নয় যতক্ষন না তার মানসিক স্থিতি সিদ্ধান্ত নেওয়ার মত হচ্ছে। বেঞ্চের বাকি দুই সদস্য সহমত হন প্রধান বিচারপতির সঙ্গে। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ রেজিস্ট্রার জেনারেল অফ হাইকোর্টকে নির্দেশ দিয়েছে, সংশ্লিষ্ট ডিস্ট্রিক্ট জাজ মেয়েটি ও তার পরিবারের সাথে আলাদাভাবে কথা বলবেন ও একমাস পরে মেয়েটি কি অবস্থায় রয়েছে তার রিপোর্ট সুপ্রীম কোর্টে পেশ করবেন।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here