মোহনা বিশ্বাস, বিনোদন ডেস্কঃ
কলকাতার অন্যতম ঐতিহ্য হল কলেজ স্ট্রিট, যা বাঙালির সাংস্কৃতিক জীবনে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে। স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির সময়েই গড়ে ওঠে এই বই পাড়া। করোনা আবহে কেমন আছে কলকাতার এই ঐতিহ্যবাহী কলেজ স্ট্রিট বই পাড়া? এই বিষয় নিয়েই ৭ অক্টোবর কলকাতায় বালিগঞ্জের নিকটবর্তী একটি ক্লাবে এক আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল ট্যালেন্ট আর্টস পাবলিকেশন।
এদিন আলোচনার মূল বিষয় ছিল, “করোনার সময়ে সাহিত্য, কেমন আছে বই পাড়া?” মূল বক্তা হিসাবে এই আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন সাহিত্যপ্রেমী তথা অভিনেতা সুজয় প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়। এছাড়াও এদিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন একঝাঁক নতুন প্রজন্মের লেখক-লেখিকা। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশেষভাবে সক্ষম শিল্পী রঞ্জন কুর্মি। এদিন সেখানে পা দিয়ে মা দুর্গার ছবি আঁকেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ এক্সক্লুসিভ ইন্টারভিউঃ ফাইট সিনে শাড়ি পরে দুষ্কৃতী দমনে রূপা ভট্টাচার্য
পুজো মানেই পুজো সংখ্যা। পুজো সাহিত্যে অলস দুপুরে ডুবে যাওয়া। কিন্তু এবছর সবটাই অন্যরকম হচ্ছে। করোনা আবহের জেরে এবার সবকিছু ওলটপালট হয়ে গিয়েছে। বদলেছে পৃথিবী, বদলেছে জীবন। ঘরবন্দি জীবনে এখন অখণ্ড অবসর।
বাড়ির বাইরে বেরোলে মাস্ক, স্যানিটাইজার সঙ্গে রাখা আবশ্যক। করোনা মোকাবিলা করতে হাজারও ঝক্কি পোহাতে হচ্ছে সকলকে। তবুও এই ভাবেই প্রতিনিয়ত জীবন কাটাতে হচ্ছে। এরই মাঝে আসছে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। ঘরে ঘরে ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে শারদীয়া সংখ্যা। নিউ নর্মাল জীবনে শারদীয়া সংখ্যাতেও উলটপুরাণ। ঘরে ঘরে দখল নিয়েছে ই বুক।
আরও পড়ুনঃ ‘পাপ কা ঘড়া’, নতুন হিন্দি গানে অমিত কুমার
সাহিত্যে উঠে আসছে মহামারীর তাণ্ডব। সাহিত্য সময়ের কথা বলে। এই কঠিন সময়ে কেমন আছে কলকাতার বইপাড়া? ই বুকের সৌজন্যে তৈরি হচ্ছে নতুন পাঠক। ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে বইপড়ার চেনা অভ্যাস। এখন আর বইয়ের পাতা নয়, মোবাইল স্ক্রিনেই উল্টে যাচ্ছে পাতা।
ই বুকেই পাঠক বইপড়ার খিদে মেটাচ্ছেন। এই সময়টাকেই খুঁজে দেখার চেষ্টা করলেন নতুন প্রজন্মের একদল লেখক-লেখিকা। গত বুধবার বইপাড়া নিয়ে আলোচনা সভার পরই ‘ক্যানভাস’ বইটি প্রকাশিত হয়। উপস্থিত নবীন প্রজন্মের লেখকদের করোনা কালের মধ্যে লেখা নিয়েই এই ‘ক্যানভাস’।
আরও পড়ুনঃ উদ্বেগজনক হলেও চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়
সাহিত্যপ্রেমী সুজয় প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়ের কথায় করোনার ভয় মানুষকে অসংবেদনশীল করে তুলেছে। যেন একটা যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি। সামাজিক বোধ এবং চেতনা সবই যেন পরিবর্তন হয়ে গেছে। সাহিত্যে সেই সমাজ এবং নতুন চেতনার প্রতিফলন ঘটেছে। তিনি আরও বলেন, একদিকে কলেজ স্ট্রিট বইপাড়া যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্যবসায়িক দিকে, তেমনি আবার বইয়ের ডিজিটাল বিপণন অনেকগুণ বেড়েছে। সেটাও একটা নতুন দিক।
এই সময়ের ছয় লেখক অরিন্দম আচার্য, দেবারতি ভৌমিক, ঐশিক মজুমদার, অর্পিতা সরকার, শোভন কাপুড়িয়া, অতনু প্রঞ্জান। তাঁদের লেখার সংকলিত কোলাজই হল ‘ক্যানভাস’। ট্যালেন্ট আর্টস পাবলিকেশনের কর্ণধার প্রীতম মুখোপাধ্যায়ের উদ্যোগে পুজোর আগেই প্রকাশিত হল এই বই।
প্রীতম মুখোপাধ্যায় বলেন, “বর্তমান সময়ে ই বুকের প্রচলন সবচেয়ে বেশি। ই বুকের দৌলতে প্রকাশকরাও বেশ লাভবান হচ্ছেন। এক্ষেত্রে ই বুকের মাধ্যমে পাঠকের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে বহু লেখক লেখিকা। প্রকাশকরাও ই বুকের উপরই বেশি জোর দিচ্ছেন। পাঠকের কাছে আরও বেশি করে পৌঁছে যেতে হলে এগিয়ে আসতে হবে নতুন প্রজন্মের লেখক-লেখিকাদেরও”।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584