পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ
বিজেপির মহিলা মোর্চা ও যুব মোর্চা থেকে প্রায় ৭ হাজার বিজেপি কর্মী রবিবার তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করলেন। সাঁইথিয়া বিধানসভার অন্তর্গত সাঁইথিয়া পৌর এলাকা এবং স্থানীয় বেশকিছু গ্রাম থেকে রবিবার বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের হাত থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকা নিয়ে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করলেন বিজেপি কর্মীরা।
বিজেপির মহিলা মোর্চার নেত্রী ঝুমা সাহা বণিক জানিয়েছেন বিজেপির হাত ধরে রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয়েছিল ধীরে ধীরে মহিলা যুব মোর্চার নেত্রী হয়েছিলাম কিন্তু সময় যত গড়াচ্ছে ততই বুঝতে পারছি সাধারণ মানুষ বিজেপির পাশ থেকে সরে যাচ্ছে। লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের মানুষকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যেসকল প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সেই সব প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি উল্টে সাধারণ মানুষ দেশের নাগরিক থাকবে কিনা সে নিয়ে মানুষের মনে তৈরি হয়েছে একাধিক সন্দেহ। রাস্তাঘাটে মানুষ দেখলেই প্রশ্ন করছে বিজেপি কেন জনবিরোধী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, কেন দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ কেন্দ্রীয় সরকার। ‘অনুপ্রবেশকারী’দের আটকানোর নাম করে ন্যায্য দেশের নাগরিকদের হেনস্থা কেন হতে হচ্ছে? সাধারণ মানুষের প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে অত্যন্ত লজ্জা বোধ হয়। জাতীয় নাগরিকপঞ্জি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের যে ভূমিকা তা সাধারণ মানুষ মোটেও ভালো ভাবে নিচ্ছেন না। রাজ্য নেতৃত্ব রাজ্যের ভালো-মন্দ সাধারণ মানুষের উন্নয়ন নিয়ে কেন্দ্রের কাছে দরবার করছেন না তাই সবদিক বিবেচনা করে মানুষের পাশে এবং উন্নয়নের কাজ বুঝে নেওয়ার জন্য তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করলাম।
বিজেপির যুব মোর্চার নেতা পার্থ ভৌমিক দলের বিরুদ্ধেই অভিযোগ তুলে দাবি করেন, লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব শুধু সাধারণ মানুষ নয় দলের কর্মীদেরও বোকা বানিয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের নির্বাচনী জনসভা থেকে বর্তমান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন কালো টাকা দেশে ফেরত আনবেন, দেশের সমস্ত দুর্নীতি রুখে দেবেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করবেন দেশের নাগরিকরা সুরক্ষিত থাকবেন কিন্তু কার্যক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতির সব উল্টো ফল দেখতে পাচ্ছি দুর্নীতি কোথাও বন্ধ হয়নি উল্টে বিজেপি নেতারা দিনের পর দিন দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছেন কালোবাজারি বন্ধ হয়নি কালো টাকা দেশে ফেরত আসেনি দেশের নাগরিকরা উল্টে নিজেদের অসুরক্ষিত মনে করছেন। বহু মানুষের রাতের ঘুম উড়ে গেছে এটা ভেবে যে কবে দেশ থেকে কেন্দ্রীয় সরকার তাড়িয়ে দেবে এভাবে চলতে পারে না বিজেপির যুব নেতা হিসেবে যে দায়িত্ব পালন করতে পারিনি সাধারণ মানুষের জন্য সেই উন্নয়নের কাজটা তৃণমূল কংগ্রেসের হাত ধরে এলাকার মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চাই। ধর্ম নিয়ে বিজেপি যেভাবে রাজ্য এবং দেশজুড়ে অশান্তির বাতাবরণ তৈরি করছে তাতে সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকা যাবে কিনা সে নিয়ে মানুষের মধ্যে দিনকে দিন সংশয় তৈরি হচ্ছে রাজনৈতিক ব্যক্তি এবং সমাজের সভ্য মানুষ হিসাবে আমাদের দায়িত্ব সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদ ভুলে একসঙ্গে সমস্ত মানুষকে নিয়ে চলা।
আরও পড়ুনঃবীরপাড়া চা বাগানে শীত বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠান
অনুব্রত মণ্ডল বলেন বিধানসভা নির্বাচন আসার আগে বীরভূম জেলা বিজেপি শূন্য হয়ে যাবে। যদিও বীরভূম জেলা বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মন্ডল তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান নিয়ে কটাক্ষ করে বলেন সব পুরনো মদ নতুন করে বোতলে ভরে অনুব্রত মণ্ডল দিদিকে খুশি করছে নিজের চেয়ার টিকিয়ে রাখার জন্য আগামী বিধানসভা নির্বাচনে দিদি ও ভাই অনুব্রত-এর কারোরই চেয়ার থাকবে না।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584