কালিয়াগঞ্জের ঘোষ বাড়ির দুর্গা পূজার ইতিহাস

0
100

পিয়া গুপ্তা, উত্তর দিনাজপুরঃ

durga puja history of ghosh bari | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

সালটা ১৯৪৭।তখন পরাধীন ভারতবর্ষের ব্রিটিশ শাসন থেকে সবে মুক্তি পেয়েছে ভারতবর্ষ।কিন্তু ভারতবর্ষ মুক্তির স্বাদ পেলেও সেই সময় তৎকালীন দিনাজপুর জেলা বর্তমান উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ এর মানুষের মনে কিন্তু সেই স্বাধীনতার মুক্তি পাবার আনন্দ ছিল না।

durga puja history of ghosh bari | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

তার কারণ তখন ও কালিয়াগঞ্জ ব্লক পূর্ব পাকিস্তানের অর্থাৎ বর্তমান বাংলাদেশের মধ্যে অন্তর্ভুক্তি হবে এমনই একটা আশঙ্কা ছিল।ঘন জঙ্গলে ঘেরা উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জে তখন খুবই বাঘের উৎপাত ছিল। একদিকে বাঘের উৎপাত অপরদিকে কালিয়াগঞ্জ কে আজকে পূর্ব পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্তি হবার আশঙ্কায় যখন এখানকার মানুষদের মন ওষ্ঠাগত।

অসিম ঘোষ,স্বর্গীয় সতীশ চন্দ্র ঘোষের নাতি।নিজস্ব চিত্র

সেই সময় উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ এর তরঙ্গপুরের স্বর্গীয় সতীশ চন্দ্র ঘোষ সহ বিশিষ্ট কিছু মানুষ তাদের কালিয়াগঞ্জ মাতৃভূমিকে ভারতে অন্তর্ভুক্তি ও বাঘের উৎপাত থেকে রেহাই পেতে দেবী দুর্গার কাছে প্রার্থনা জানিয়ে এই পুজোর প্রচলন শুরু করেছিলেন যা আজ তরঙ্গপুরের ঘোষ বাড়ির দূর্গা পুজা নামে খ্যাত হয়ে গিয়েছে।নিয়ম নিষ্ঠা ও ভক্তি সহকারে এই পুজো সেই সময় থেকেই হয়ে আসছে তরঙ্গপুরে।

শোভা ঘোষ,স্বর্গীয় সতীশ চন্দ্র ঘোষের নাতনি।নিজস্ব চিত্র

আরও পড়ুনঃ আড়ম্বর না থাকলেও আজও পুজোয় আছে আন্তরিকতা

৭০ বছর আগে দেশভাগের সময় এই কালিয়াগঞ্জ বাংলাদেশে প্রায় পড়ে গিয়েছিল। সেসময় শতীষ চন্দ্র ঘোষ মা দুর্গার কাছে প্রার্থনা করে ,যাতে কালিয়াগঞ্জ পূর্ব পাকিস্তান অধুনা বাংলাদেশ যাতে না পড়ে।সেই সময় ঠাকুরদা নিজের স্বাধীনতা সংগ্রামী হয়ে লড়াই করে সেই কালিয়াগঞ্জ কে ভারতে অন্তর্ভুক্ত করার ব্যবস্থা করে।আর তখন থেকেই এখাণে এই দেবী দুর্গার পুজোর প্রচলন শুরু হয়েছিল।

যখন মন্দির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল সেই সময় এই তরঙ্গপুর এলাকা ছিল গভীর অভয়ারণ্য।তখন খুবই বাঘ সহ হিংস্র পশুদের উৎপাত ছিল।গ্রামের মানুষরা তখন একত্রিত হয়ে জঙ্গল পরিষ্কার করে ও টিন বাজিয়ে হিংস্র পশুদের তাড়িয়ে এই পুজোর করে সেই থেকে আজও রেওয়াজ হয়ে আসছে।

দূর্গা পূজোর সময় টিন বাজিয়ে এই পুজো আরম্ভ হয় ষষ্ঠীর দিনে।এই পুজোকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ধর্মের মানুষরা প্রতি বছরই একত্রিত হয়ে মিলন মেলা রূপ দেয়।

ধর্মীয় আচার মেনে এখানে মা দুর্গা পুজো হয়ে থাকে পুজো শেষে হাজার হাজার মানুষ অন্নভোগ ও গ্রহণ করেন।পুজো ঘোষ বাড়ির পারিবারিক হলেও এই পুজো প্রতি বছরই বারোয়ারি পুজোর মতোই রূপ নেয়।পুজোর দিনগুলিতে তাদের আত্মীয়-স্বজনরা যে যেখানেই থাকুক না কেন তারা পুজোর সময় এই বাড়ির পুজোয় অংশ নেয়।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here