সিমা পুরকাইত,দক্ষিন ২৪ পরগনাঃ
কাশ ফুলের ঢেউ, আকাশে ছেঁড়া তুলার মতো সাদা রঙের মেঘ মনে করিয়ে দিচ্ছে আগমনীর আগমন মর্তে এখন দোড়গোড়ায়।বনেদিয়ানা থেকে সার্বজনীন পূজা ঘিরে উন্মাদনা এখন তুঙ্গে।
বাংলার শহর থেকে গ্রাম, শিল্পাঞ্চল থেকে দ্বীপাঞ্চল উমার পূজা ঘিরে উৎসাহ উদ্দীপনা উল্লাস প্রবীন থেকে নবীনদের মধ্যে।শহর ছাড়িয়ে দ্বীপের পূজা এবার অন্যমাত্রা নিয়েছে।
জঙ্গলে ভরা হিংস্র যন্তু আর প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে প্রতিনিয়ত লড়াই করতে হয় সুন্দরবনবাসীদের। তাই অশুভ ছায়া হিংস্র যন্তু আর প্রাকৃতিক দুর্যোগ যাতে গ্রাস না করতে পারে তারই জন্য আরাধনা শুরু হয়েছে দুর্গা মাকে ঘিরে। সুন্দরবনের ১০৮ টি দ্বীপের মধ্যে পাথর প্রতিমা ব্লকের অচিন্তনগর -খ গ্রামপঞ্চায়েতের এই দ্বীপটি ঘিরে রেখেছে তিনটি নদী।
দ্বীপের উত্তর পশ্চিমে শিবুয়া নদী,পূর্বে ঠাকুরন নদী যেখান থেকে বাঘের জঙ্গল দিয়ে বাঘ চলে আসে, কে প্লট দ্বীপে,দক্ষিনে জগদ্দল নদী ঘিরে রেখেছে কে প্লট দ্বীপকে। সালটা ১৩৭৭। কে প্লটের বাসিন্দারা দুর্গা ঠাকুর দেখতে শিবুয়া নদী পার হয়ে কাশিনগরে আসছিলেন।সে সময় দুর্ঘটনায় পরে অনেকে প্রান হারান।কে প্লট দ্বীপে স্বনামধন্য দ্বীপে বাসিন্দা ঈশ্বর ভুবন পড়িয়া পূজিত করেন মা দূর্গাকে।
পশ্চিম শ্রীপতিনগরে পঞ্চাশ বছর ধরে চলে আসছে সার্বজনীন পূজা।গ্রামবাসিদের চাঁদায় গ্রামের প্রবীন নবীনেরা করে থাকেন এই উৎসবে।
মহালয়া থেকে পূজার সূচনা শুরু হয়। প্রতিবছরের মতো এবারেও ধাপাস বল খেলা দিয়ে পূজার সূচনা করবেন গ্রামের পূজা উদ্যোক্তারা।ষষ্ঠীতে মায়ের বোধন।সপ্তমীতে পূজার্চনা অষ্টমীতে চন্ডীপাঠ তবে কুমারী পূজা নেই দ্বীপের এই পূজায়।
আরও পড়ুনঃ ৯৮ এ পা দিল অলিপুরদুয়ারের বাবুপাড়া ক্লাবের দুর্গা পুজো
নবমীতে হয় সন্ধ্যা পূজা। বলি প্রথা রয়েছে তবে চালকুমড়া আক আর চালের অবায়ক তৈরী করা ছাগল বলি হয় এই পূজায়।দশমীতে মায়ের বিদায় পালা।পূজা ঘিরে রয়েছে নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।গাজন গান থেকে যাত্রা পালা।নানান প্রতিযোগিতা মূলক খেলা হয় পূজা ঘিরে।শেষ বেলায় পূজা ঘিরে যাত্রা পালার মোহড়া বসিয়েছেন দ্বীপের মহিলারা ।
ছেলেদেরও রয়েছে যাত্রা পালা অনুষ্ঠান । দালান বাড়ির পাশে চলছে জোর কদমে প্রস্তুতি । গ্রামের মানুষেরা সময় পেলে পূজা নিয়ে আলোচনা করে বেড়িয়ে পরেন চাঁদা তুলতে।এই দ্বীপে হয় দুটি দূর্গা পূজা।পুরানো পুজা বলতে পশ্চিম শ্রীপতি নগরের দূর্গা পূজা।
বিন্দুবাসিনি দেবির পূজা হয় এই দ্বীপে।কিন্তু দূর্গা পূজার আনন্দ হয় সবচেয়ে বেশি।তিনটি মৌজায় প্রায় সাত হাজার মানুষের বাস এই দ্বীপে। চাষ আবাদ মৎস্য শিকার মধুসংগ্রহ করা মূল জীবিকা। অর্থাভাবে পূজার সময় জোটেনা অনেকের নতুন পোষাক।চাল আলু কেউবা স্বল্প টাকা দিয়ে পূজিত করেন এই দ্বীপের মা দূর্গাকে।ভক্তি বিশ্বাসে আজও মা’কে নিয়ে মেতে থাকেন কে প্লট দ্বীপবাসিরা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584