মনোদীপ ব্যানার্জী,বহরমপুরঃ
চারিদিকে কাশফুলের দোলা আর শিউলি ফুলের সুঘ্রাণকে সঙ্গী করে দুয়ারে হাজির পুজো। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব। নবাবের জেলা মুর্শিদাবাদও মেতে উঠেছে পুজোর আনন্দে। এই জেলারই পদ্মার পার্শ্ববর্তী গ্রাম লালগোলা। এই লালগোলার প্রাচীন পুজো গুলির একটি পাহাড়পুরের মিত্র বাড়ির পুজো।
২০০ বছরের বেশি পুরোনো এই পুজো নিজের জৌলুস হারালেও ঐতিহ্য মেনে এখনও পূজিত হয়ে আসছে বর্তমান বংশধরদের হাত ধরে। স্বর্গীয় কার্তিক চন্দ্র মিত্রের জমিদারিত্বে শুরু হয় এই পুজো, যা ২০০ বছর পরও তার বর্তমান প্রজন্ম এগিয়ে নিয়ে চলেছেন।
এই মিত্র বাড়ির বর্তমান প্রজন্মের সুমন মিত্র ও উজ্জ্বল কুমার মিত্র এই পুজোর দেখভাল করেন। বৈষ্ণব মতে পুজো হয়ে আসছে এই বাড়িতে। চাল কুমড়ো বলি ও আঁখ বলির প্রথাও হয়ে চলেছে রীতি মেনে ।
অষ্টমীর সন্ধিতে মালপোয়া ভোগ মায়ের কাছে নিবেদন করা হয়। দীর্ঘদিন যাবৎ এই পুজোর পৌরোহিত্য করে এসেছেন গঙ্গাদাস রায় চ্যাটার্জ্জী। বর্তমানে শারীরিক অসুস্থতার কারণের তার কনিষ্ঠ পুত্র হীরালাল চ্যাটার্জ্জী সেই স্থান দখল নিয়েছেন।
১৯৫১ সালের এক দুর্ঘটনায় প্রাণ যায় এই বাড়ির পূর্ব পুরুষ সুধীর কুমার মিত্রের। নষ্ট হয় কাঠামো। তারপর প্রায় ৫০ বছর বন্ধ থাকে দূর্গা পুজো। ২০০০ সালে সুমন মিত্র ও উজ্জ্বল কুমার মিত্রের উদ্যোগে ফের চালু হয় মিত্র বাড়ির দুর্গোৎসব।
আরও পড়ুনঃ আতাহার খানের বুড়িমা দুর্গাপুজোর ইতিহাস
ইতিহাস বিজরিত এই বাড়ির বিপ্লবী পুত্র বিনয় কুমার দত্ত ইংরেজদের চোখে ধুলো দিয়ে বাড়ির দুর্গা পূজায় উপস্থিত হতেন বলে জানান সুমন বাবু। যদিও এলাকার মানুষ তাকে ধম্ম মিত্র বলেই চেনেন।
গৃহ দেবতা শ্রী শ্রী ভৈরব নাথ হলেও, দূর্গা পুজোয় অতিথি সমাগমে ভরে ওঠে এই বাড়ির উঠান। নবমীতে চলে খিচুড়ি ভোগ বিতরণ। দিনের দিন বাড়ছে খরচের মূল্যও, তবুও আনন্দ যেন খরচ টাকে দূরে রেখেছে সবার থেকেই।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584