শিব শংকর চ্যাটার্জ্জী,দক্ষিন দিনাজপুরঃ
গ্রামের প্রতিটি বাড়ীর উঠোনের গাছে বন্যপাখি। বন্যপাখি, বন্যপ্রাণী এবং মানুষের মেলবন্ধনের অন্যতম উদাহরণ,ইকো ট্যুরিজমের স্বপ্ন দেখা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুমারগঞ্জ ব্লকের সমজিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের আঙিনা গ্রামবাসীদের স্বপ্ন আজও রয়েছে অধরা।
হাজার পাখির গ্রাম হিসাবে খ্যাত আঙিনা গ্রামের বাসিন্দাদের জীবন বর্তমানে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে বিদেশি পাখির বৃষ্ঠার দুর্গন্ধে।সেই সঙ্গে গ্রামবাসীদের দীর্ঘ দিনের রাস্তা নির্মাণের দাবি আজও পূরণ না হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা গ্রামের বাসিন্দারা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে প্রতিবছর বর্ষার শুরুতেই এই গ্রামে আসতে শুরু করে এশিয়ান ওপেন বিল স্ট্রোক, নাইট হেরন, ব্ল্যাক আইবিচ, গ্লসি আইবিচ-এর মতন পরিযায়ী পাখির দল।
বেশ কয়েকমাস গ্রামের বাড়ীর উঠোনে থাকা গাছে তারা আশ্রয় নিয়ে ফের চলে গেলেও বহু সংখ্যক পাখি সারাবছর এই গ্রামেই থেকে যায়।একদা গ্রামে আসা এই পরিযায়ী পাখিদের পরিচর্যার জন্য গ্রামের লোকদেরকে গঠিতও হয় আঙিনা বার্ডস্ আন্ড এনভায়রনমেন্ট প্রোটেকশন সোসাইটি।
আরও পড়ুনঃ বিরল প্রজাতির বাজপাখি উদ্ধার
সেই সঙ্গে সঙ্গে পরিযায়ী পাখি দেখতে ভিড় জমাতে শুরু করেন বহু পর্যটকও।একই সঙ্গে পাখি দর্শনকে কেন্দ্র করে গ্রামে গড়ে উঠতে পারে ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র।
এই স্বপ্ন দেখতে আরম্ভ করে আঙিনা গ্রামের বাসিন্দারা।এমনকি সরকারি ভাবে পরিকল্পনাও গৃহীত হয় আঙিনা গ্রামে ওয়াচ টাওয়ার,শৌচালয়,আর্ট গ্যালারি, সংগ্রহশালা এবং ক্যান্টিন নির্মাণ করে আঙিনাকে ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তুলে রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে আঙিনা-র আত্মপ্রকাশ ঘটাতে।
কিন্তু দেড় দশক সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পরও আঙিনার গ্রামের চিত্রের বিন্দুমাত্র বদল ঘটেনি।ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র গড়া তো দূরের কথা গ্রামে আজও রাস্তা নির্মাণ হয়নি।ফলে বর্ষার প্রবল বারিধারায় নয় সামান্য বৃষ্টিতেই আঙিনা গ্রামের কাদাভরা রাস্তা হয়ে উঠেছে চলাচলের অযোগ্য।
তারই মধ্য দিয়ে মহিলারা নিজেদের সম্ভ্রমভুলে হাটুর উপর কাপড় তুলে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে রাস্তার বেহাল দশার কারনে।সেই সঙ্গে পরিযায়ী পাখির বৃষ্ঠার কারনে দুর্গন্ধ ছড়িয়েছে গোটা গ্রামে।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় এলাকায় চুন এবং ব্লিচিং পাউডার চেয়ে একাধিক বার বিভিন্ন সরকারি দফতরের দ্বারে দ্বারে ঘুরে তা না পাওয়ায় গ্রামের মানুষরা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছে বলে জানিয়েছে আঙিনা গ্রামের বাসিন্দারা।
ফলে একদা পরিবারের সদস্য হিসাবে পরিযায়ী পাখিদের আপন করে নেওয়া আঙিনা গ্রামের বাসিন্দারা এখন পরিযায়ী পাখিদের বিষয়গুলি মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে।
স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধের পাশাপাশি আঙিনা বার্ডস আন্ড এনভায়রনমেন্ট প্রোটেকশন সোসাইটি-র সম্পাদক বিশ্বজিৎ বসাক-এর ভূমিকা নিয়ে গ্রামবাসীরা প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ উগড়ে দিতে শুরু করেছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584