সিমা পুরকাইত, দক্ষিণ ২৪ পরগণাঃ
গ্রামে নেই কোনও বড় উৎসব। বারো মাসে তেরো পার্বন থাকলেও উৎসব মুখর এই এলাকার বাঙালিরা মেতে থাকেন ফুটবল খেলা নিয়ে। খেলা ঘিরে অনুন্নয়ন গ্রাম আজ দেখছে উন্নয়নের দিশা।
দুধের স্বাধ ঘোলে মেটাতে দু’দিন ব্যাপি নক-আউট ফুটবল খেলায় মাতেন দক্ষিণ সুন্দরবনের চুপড়িঝাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের চিন্তাহরণ বাবুরচক গ্রামের প্রবীণ থেকে নবীনরা।
প্রায় দুহাজার এরও বেশি মানুষের বাস এই গ্রামে । পেশা বলতে চাষাবাদ আর মাছ শিকার। বেশির ভাগ পরিবারে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মতো অবস্থা। কাজেই আর্থিক সঙ্কট রয়েছে প্রতিটি পরিবারে। তার জেরে হারাতে বসেছে গ্রামের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য। গ্রামবাসিদের গতানুগতিক এই জীবনে ছিল না কোনও সংহতি, ঐক্যবন্ধন। অবশেষে চালু হল ফুটবল খেলা।
নিজেদের উদ্যোগ আর উদ্দীপনা বুকে নিয়ে শুরু করা ফুটবল খেলা যা ত্রিশ বছর ধরে চলে আসছে এই গ্রামে। মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল গ্রামীণ অনুন্নয়ন।
বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ফুটবল খেলা। অবশেষে আবার চালু করা হল এই খেলা। কারণ যা দেখে আনন্দ উল্লাস ঐক্যবন্ধন গড়ে উঠেছিল প্রত্যন্ত এলাকাবাসিদের মধ্যে তা বন্ধ হয়ে পড়ে থাকতে দেওয়া যায় না—এ কথা বুঝেছিল গ্রামবাসী।
নীরদবরণ স্কুলের মাঠে দু’দিন ব্যাপি নক-আউট ফুটবল খেলায় অংশগ্রহণ করেন এখানকার গ্রামবাসিরা। এই জেলার পাশাপাশি ভিন জেলা কলকাতা থেকেও খেলোয়াররা আসেন খেলতে।
আরও পড়ুনঃ তিনদিনের নক-আউট ফুটবল টুর্নামেন্ট ঘিরে উদ্দীপনা
সুন্দরবনের এই গ্রামের মানুষরা কলকাতা শহরে বা কাছাকাছি কোথাও খেলা দেখতে যেতে পারেন না। তাই দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে এমন উদ্যোগ নিয়েছে তারা। স্বাধীনতার পর ধীরে ধীরে হয়েছে গ্রামের অগ্রগতি।
একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে আজ উন্নয়নের দিশা দেখছে চিন্তাহরণ বাবুরচক গ্রামবাসি। সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতি খেলা ঘিরে গড়েছে উন্মাদনার পারদ।
দু’দিন ব্যাপি খেলায় অংশগ্রহণ করেছে ১৬ টি দল। প্রথম যারা হবেন ৫০ হাজার টাকা সঙ্গে ট্রফি পুরস্কার পাবেন। দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারীরা পাবেন ৪০ হাজার টাকা সঙ্গে ট্রফি। খেলা ঘিরে চলে নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান । উৎসব মুখর খেলা দেখতে ভিড় জমান জামতলা, রায়দিঘি, কুলতলি, কাকদ্বীপ, ডায়মন্ডহারবার, জয়নগর এলাকার ফুটবল প্রেমীরা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584