দেবশ্রীর টোটো বিতরণ কর্মসূচি ঘিরে রহস্য

0
303

সিমা পুরকাইত,দক্ষিন ২৪ পরগনাঃ

স্বাধীনতার পর আজও অবহেলিত দক্ষিন সুন্দরবনের রায়দিঘি।এলাকা অনুন্নয়ন থেকে বেকারত্বের সমস্যা আজও রয়েছে।

নিজস্ব চিত্র

ক্ষমতায় আসলে এলাকা হালহকিত বদলানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন দু’বারের বিধায়ক দেবশ্রী রায়। বেকারদের কর্মসংস্থান সহ গরীব মানুষের পাশে দাঁড়ানর ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন তিনি।সাধারন মানুষের রুটি রুজির পথ বেছে দিতে নিজে উদ্যোগ নিলেন বেকার গরীব পরিবারদের হাতে বিনা পয়সায় তুলে দেবেন টোটো।

Debashree Roy | newsfront.co
দেবশ্রী রায়।নিজস্ব চিত্র

চলতি বছরে জুলাই মাসে রায়দিঘির ৪নং পেট্রোল পাম্পের মোড়ে তৃণমূল জয় হিন্দ বাহিনীর কার্যালয়ে দেবশ্রী রায় ঘোষনা করেন টোটো দেওয়ার কথা।দেবশ্রী ফাউন্ডেশানের মাধ্যমে দেওয়া হবে টোটো।২০২০ সালে জানুয়ারী থেকে ফেব্রুয়ারী মাসের মধ্যে পাবে দেড় লক্ষ টাকার টোটো।

মথুরাপুর এক ও দু’নম্বর ব্লকের সতেরোটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৮২ টি বুথে দেওয়া হবে টোটো। রায়দিঘি বিধানসভার জন্য বরাদ্দ হয়েছে ২০০০ টি টোটো।

সুখচাঁদ হালদার, টোটো চালক।নিজস্ব চিত্র

তাহলে প্রতি বুথে কেন দেওয়া হচ্ছে ২০০টি ফ্রম।রাজ্যে দেবশ্রী ফাউন্ডেশান আশার আলো থেকে দেওয়া হবে এক লক্ষ টোটো।টোটো নিতে গেলে বেনিফিসারিদের বেশ কিছু শর্ত অবলম্বন করতে হবে।প্রথমত,বেনিফিসারিরা গরীব সম্প্রদায় পরিবার হতে হবে।

লাল চাঁদ হাজারি, এলাকাবাসি।নিজস্ব চিত্র

দুই,টোটো নিতে গেলে দেবশ্রী ফাউন্ডেশানে বেননিফিসারিদেরকে চার হাজার টাকা দিয়ে রেজিস্টেশান করতে হবে।রেজিস্টেশানের মাধ্যমে সদস্য হলে তবে পাবে টোটো।যে কেউ আবেদন করতে পারে ফর্মফিলাপে।প্রতি বুথে রেজিস্টেশান ফর্ম দেওয়া হচ্ছে ২০০টি ।

জেলা আই এন টি টি ইউ সির সভাপতি শক্তিপদ মন্ডল। ।নিজস্ব চিত্র

প্রতি ফর্মে ৪০০০টাকা।তাহলে হিসাব বলছে ২৮২ টি বুথে দুশো ফর্ম প্রতি বর্মে ৪০০০ টাকা।অঙ্ক বলছে (২৮২×২০০= ৫৬হাজার ৪০০ ফর্ম।প্রতি ফর্ম ৪০০০টাকা হলে অঙ্ক বলছে ২২ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকা।মথুরাপুর ২নং ব্লকে ইতিমধ্যে ২ হাজার ফর্ম বিলি হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ দেবশ্রী কোথায় উঠছে প্রশ্ন, ফোন হোয়াটসঅ্যাপেও সংযোগ বিচ্ছিন্ন

নিজস্ব চিত্র

রেজিস্টেশান করে টোটো না পেলে তাদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে।ঘোষনার পর শুরু হয়েছে দেবশ্রী ফাউন্ডেশান আশার আলোই রেজিস্ট্রেশনের জন্য ফর্ম ফিলাপ।প্রতিটি বুথে দেওয়া হয়েছে ২০০টি ফর্ম।রায়দিঘি বিধানসভায় ১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত।

নিজস্ব চিত্র

২৮২ টি বুথ নিয়ে যদি দেবশ্রী রায়ের কথায় ২০০০ টোটো দেওয়া হয় তাহলে কেন ফর্ম পিছু রেজিস্টেশান করতে ৪০০০ টাকা নিচ্ছে।চলতি বছরে জুলাই মাসে দেবশ্রী রায়ের এমন পরিকল্পনায় রাজ্য রাজনীতিতে শুরু হয়েছে জল্পনা।বর্তমানে রায়দিঘি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় চলে শতাধিক টোটো।রায়দিঘি বিধানসভা জুরে রয়েছে কয়েক হাজার টোটো।

পলাশ রানা,তৃনমূল কংগ্রেসের জয় হিন্দ বাহিনির জেলা সহসভাপতি।নিজস্ব চিত্র

যাদের নির্দিষ্ট কোন স্ট্যান্ড নেই। পরিকাঠামোর অভাব।নিজেদের গাঁটের পয়সাই জায়গা ভাড়া করে স্ট্যান্ড করেছে বলে দাবি অনেক টোটো চালকের।যেখানে পরিকাঠামোর অভাব।সেখানে অন্যকিছু না ভেবে কেন এমন পরিকল্পনা,উঠছে প্রশ্ন।

ভূষণ চন্দ্র সাঁপুই,বিজেপি নেতা।নিজস্ব চিত্র

অনেকের দাবি দেবশ্রী রায় বিধায়িকা বলে যদি ভরতুকি দেন টোটোর জন্য।তাহলে কেনইবা ৪০০০ টাকা নিচ্ছে রেজিস্টেশানের জন্য।যা নিয়ে প্রশ্ন রায়দিঘি বিধানসভা জুরে।তাহলে প্রতারনার কোন ফাঁদে পা দিচ্ছেন না তো রায়দিঘির বিধানসভার মানুষেরা।

অন্যদিকে বিজেপির দাবি এর নেপথ্য রয়েছে রাজনৈতিক চক্রান্ত।তৃনমূল ভোট ব্যাঙ্ক বাড়ানোর জন্য এই পরিকল্পনা।এটা মিথ্যা প্রতিশ্রুতি। বিজেপির দাবি আশার আলোই রেজিস্টেশান করে কেউ যদি টোটো না পায় তাহলে ৪০০০টাকা ফেরত পাবে।

এতো দিন এই টাকা আটকে অন্য কোন পরিকল্পনা করছেনা তৃণমূল। যদি টোটো না পায় তাহলে আন্দোলনের হুমকি দেন বিজেপির জেলা সহ সভাপতি ভুষন চন্দ্র সাঁপুই।তবে এই কর্মকান্ডে তৃণমূল কংগ্রেস দল জরিত নই বলে দাবি জেলার জয় হিন্দ বাহিনীর সহ সভাপতি পলাশ রানার । দেবশ্রীর ব্যক্তিগত কর্মসূচি এটি বলে দাবি তার।এটা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন ।

যদি এই প্রকল্প দেবশ্রীর ব্যক্তিগত হয় তাহলে জয়হিন্দ বাহিনির কার্যালয়ে কেন এমন পরিকল্পনা।যেখানে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বরা রয়েছেন।বেনিফিসারিদের ফর্ম ফিলাপ করছেন। টোটো নিয়ে সরব এবার জেলা আইএনটিটিইউসির সভাপতি শক্তিপদ মন্ডল।

যে টোটো নিয়ে এতো জল্পনা তা অবৈধ্য বলে দাবি করেন তিনি।অবৈধ্য টোটো কিভাবে বৈধ্য করে এলাকায় টোটো নামানোর পরিকল্পনা করছেন এলাকার বিধায়িকা দেবশ্রী রায়! তা নিয়ে সংশয় বেধেছে সাধারন মানুষের মধ্যেও।ইতিমধ্যে দিল্লির বিজেপি দরবারে হাজির দেবশ্রী।

যা নিয়ে রাজ্য রাজনিতিতে শুরু হয়েছে জল্পনা।দু’বারের তৃনমূল কংগ্রেস থেকে আট বছর ধরে রয়েছেন বিধায়িকা।এলাকায় দেখা যায় না তাকে।টোটো ফর্ম ফিলাপের পর দেবশ্রী চিঠি করে জয়হিন্দ বাহিনি সহসভাপতি পলাশ রানার উপর দায়িত্ব দিয়ে যায় বিধায়িকার কাজ কর্মের।

দিদিকে বলো কর্মসূচি নিয়ে দক্ষিন সুন্দরবনের রায়দিঘি বিধানসভায় আজও পা পরেনি বিধায়িকার। তারপর বিজেপির সদর দফতর।সঙ্গে টোটো নিয়ে জল্পনা।সব মিলিয়ে দেবশ্রী রায়ের রায়দিঘি বিধানসভায় প্রশ্ন চিহ্নের মুখে দাঁড়িয়েছে সাধারন মানুষের কাছে।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here