শিব শংকর চ্যাটার্জ্জী,দক্ষিন দিনাজপুরঃ
দিনাজপুর জেলার ভারত বাংলাদেশের সীমান্তের কাঁটা তারের ওপারে বাংলাদেশ লাগোয়া গ্রাম হাড়িপুকুর।এই গ্রামের মাঝখানে একটি বড় মাপের পুকুর থেকেই নামকরণ হয়েছে ওই গ্রামের।গ্রাম থেকে প্রায় দুশো মিটার দূরে বিএসএফের নজরদারি থাকলেও গ্রামের মধ্যে দুদেশের কোনও বেড়া না থাকায় মিলেমিশে এলাকার দুই দেশের মানুষ। প্রায় দেড়শো বছর ধরে রয়েছে এখানে কালীর থান।দুদেশের সীমানা পিলারের কাছে থাকা দেবীর ওই থান প্রতিবছরের মত এবারও সেজে উঠেছে।হাড়িপুকুর গ্রামে প্রায় দেড়শোটির বেশী মুসলিম পরিবারের বসবাস।তাই কালীপুজোর ওই দায়ভার তুলে নেন বরাবরের মতন ওই গ্রামের মুসলিম মানুষেরা ও বিএসএফ জওয়ানরা।
পুজোর দিনে ছুটে আসেন প্রতিবেশী দেশের নওপাড়া,বাঘমারা সহ বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি গ্রামের হিন্দু ও মুসলিম মানুষেরা।তাই হাড়িপুকুর গ্রামের ওই কালী পুজো আজ শুধুমাত্র ওই এলাকারই পুজো নয়, দুদেশের ও দুই সম্প্রদায়ের মানুষের এক মেলবন্ধন।অন্য আর দুচারটে কালী পুজোর থেকে হাড়িপুকুর গ্রামের ওই কালী পুজো অনেকটাই আলাদা।সেখানে দেবী কোন মূর্তিতে নয়,পূজিত হন থানে।ঘট পুজোর মাধ্যমে কালী পুজোর রাতে পুজো হয় দেবীর।রঙিন আলোতে সেজে ওঠে এলাকা। দেবীর ভোগ হিসাবে নানা মিষ্টান্ন,বাতাসা,ও ফলমূল প্রচলিত।পুজোর পরদিন রীতি অনুযায়ী বিলি হয় খিচুড়ি ভোগ।বছরের অন্যান্য দিনে নিয়মিত ভাবে কাঁটা তারের এপার থেকে যান হিন্দু পুরোহিত।পুজোর দিনে পরম্পরাগত ঐতিহ্য মেনে পুজো করেন তিনি।যেখানে অংশ নেন দুদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জওয়ানরাও। পুজোর দিনগুলিতে নিরাপত্তা বাড়াতে বাড়তি নজরদারি রাখেন বিএসএফ।এলাকার বাসিন্দা দের মতে,প্রতি বছর এই ভাবে তাঁরা এলাকায় কালী পুজো করে থাকেন।তাদের গ্রামের মানুষেরা ছাড়াও বাংলাদেশ ও কাঁটা তারের এপারের হিন্দু মানুষেরাও আসেন তাদের পুজোতে।পুজোর দিনগুলি তাদের কাছে এক মহা আনন্দের হয়ে থাকে।হিন্দু মুসলিম সকলে প্রসাদ গ্রহন করেন এবং আনন্দে মেতে হঠেন সকলে।থাকেনা কোন জাতিভেদ,মানেনা ধর্ম। কালি পুজোর রাত্রে বোঝা জায় হিন্দু মুসলিম নেই কোন ভেদাভেদ।
আরও পড়ুনঃ রয়্যাল বেঙ্গল শাবক ইকার মৃত্যু
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584