সিমা পুরকাইত, দক্ষিণ ২৪ পরগণাঃ
“পিএইচই” জল নিয়ে সমস্যা ছিল দীর্ঘদিনের। উদ্বোধনের পর থেকে পরিষেবার বিঘ্ন ঘটে হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তিনটি পাম্পে। গ্রীষ্ম হোক কিংবা বর্ষা, শীত হোক কিংবা অন্য কোনও ঋতু, জল সমস্যার আজও মেলেনি কোনও সমাধান।
বুলবুল ঘূর্ণিঝড়ের পর আরও জল সঙ্কটের মুখে পড়ে হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৮টি বুথের প্রায় ছাব্বিশ হাজার বাসিন্দা। একদিকে পুকুর, খাল-বিল পচা দুর্গন্ধে ভরা কালো জল, অন্যদিকে “পিএইচই” জল না পাওয়ায় এক মাত্র ভরসা গ্রাম পঞ্চায়েতের গুটি কয়েক ডিপ টিউবকলের জল। ফলে সঙ্কটের মুখে পরে ক্ষোভে ফুসছে এলাকাবাসী।
দায় এড়াতে জলের লেভেল কমেছে বলে দাবি বিধায়ক থেকে পঞ্চায়েত সমিতি সভাপতির । দক্ষিণ সুন্দরবনের নামখানা ব্লকের হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েত। এই পঞ্চায়েতের ১৮ টি বুথের ২৫৮৯৪ জন মানুষের বাস। খেটে খাওয়া মানুষের মূল জীবিকা বলতে মাছ ধরা, সঙ্গে চাষ-আবাদ।
আরও পড়ুনঃ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার নব উদ্যোগের সাক্ষী বসিরহাট
দুর্বিষহ মানুষদের জল সমস্যা ছিল দীর্ঘদিনের। ক্ষমতায় আসলে জল সঙ্কট গ্রাম মুক্ত করার প্রত্যাশা দিয়েছিলেন সাধারণ মানুষের সামনে। সে মতো ২০১৪ সালে রাজ্যের জন স্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কোটি টাকা খরচ করে গ্রাম পঞ্চায়েতে বসানো হয় তিনটি পাম্প।
নির্মিত পাম্প হাউস থেকে প্রতিদিন তিনটি সময়ে সাত ঘন্টা করে জল পাবেন গ্রামবাসী। ১৮ টি বুথের মধ্য ৬ টি বুথ প্রথম এই পরিষেবা পাবে। সেই মতো ৭১ হাজার মিটার জলের পাইপ লাইনের কাজ হবে– এমনটাই ঠিকঠাক ছিল। এমনকি পরিষেবার শুরুতেই ঘটা করে হয় উদ্বোধন।
কিন্তু উদ্বোধনের ঠিক কয়েকদিন পর বন্ধ হয়ে পরে জল পরিষেবা। তিনটি পাম্পের মধ্য দু’টি পাম্প পুরোপুরি অকেজো হয়ে পরে। অভিযোগ, জলের লেভেল কমে যাওয়ায় পাম্প দিয়ে জল উঠছে না।
ফলে পরিষেবায় বিঘ্ন ঘটতে থাকে। যে পাম্পহাউস বেঁচে রয়েছে তা যে প্রতিদিন জল পরিষেবা দেবে তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। কারোর ভাগ্যে জোটে হাফ বালতি, তো কারোর ভাগ্য আরও কম।
কল থাকলেও জল পাওয়া যায় না বলে অনেকের দাবি। পরে থাকতে থাকতে ভুতুড়ে বাঁসা হয়ে উঠেছে পাম্প হাউসগুলি। পাম্পের জলের পাইপ ১২০০ মিটার হলেও কেন জলের লেভেল পাওয়া যাচ্ছে না, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন? তাহলে কি সঠিক দুরত্বে জলের পাইপ জলের লেয়ারে পৌছায়নি, নাকি পকেট কেটে পরিষেবা চালু করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে পিএইচই দফতর—প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে।
যদিও বিষয়টি নিয়ে একমত নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কল্পনা মালী। বুলবুলের পর জেনারেটর দিয়ে চলছে যৎসামান্য জল পরিষেবার কাজ। বিষয়টি নিয়ে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরে জানিয়ে পরিষেবার আশ্বাস দিয়েছেন সাগর বিধায়ক বম্কিম চন্দ্র হাজরা। সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখে কতটা পরিষেবার দিকে কার্যকরী হয় এখন সেটাই দেখার ।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584