সুদীপ পাল, বর্ধমানঃ
পূর্ব বর্ধমানের মানকরে ভট্টাচার্য পাড়ার মুখার্জী বাড়ির প্রায় তিনশ বছরের পুরনো পূজো এলাকাবাসীর কাছে তিন পুতুলের পূজো নামে খ্যাত। তিন পুতুল অর্থাৎ এখানে পূজিত হন দেবী দুর্গা, তাঁর বাহন ও মহিষাসুর। পরিবারের কন্যা মুনমুন গোস্বামী বলেন, এই দেবী মূর্তি মহিষমর্দিনী নামে খ্যাত। বর্ধমান জেলায় কালনায় এবং এখানে এই পূজোর প্রচলন রয়েছে। মানকরে এই পূজো পুরনো বাড়ির পূজো নামেও খ্যাত। যেহেতু মানকর অঞ্চল ছিল শাক্ত তন্ত্র প্রভাবিত এলাকা তাই খুব স্বাভাবিক ভাবে মহিষমর্দিনী পূজোতেও সে প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। মুখার্জী পরিবারের আদি পুরুষ রামপদ মুখোপাধ্যায় এই পূজার প্রচলন করেন তারপর থেকে ধারাবাহিক ভাবে প্রতি বছর পুজোর আয়োজন করা হয়। মাঝে কয়েক বছর বিভিন্ন কারণে মূর্তির বদলে ঘটে পূজো করা শুরু হলেও পরবর্তী কালে সদ্য স্বাধীনত্তোর কালে এই বংশের সুরেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের মেয়ের জন্ম গ্রহণের পর আবার মূর্তিতে পূজো শুরু হয়।
দেবীর ভোগে নানা উপকরণ থাকলেও বড়িপোস্ত অবশ্যই দিতে হবে। বড়ি বানানো হয় বাড়িতেই। পরিবারের বর্তমান সদস্য অভিষেক মুখার্জী জানান, নবমীর দিন মাকে যে ছাগ বলি ভোগ নিবেদন করা হয় তা রান্না করা হয় না। পারিবারিক ঐতিহ্য মেনে একটি বড় হাতায় ছাগ মাংস ভেজে নিবেদন করা হয়। যা হাতাভাজা নামে পরিচিত। পূজোয় বলিদান নিয়েও রয়েছে নিয়ম। কটি ছাগ বলি হবে সে নিয়েও রয়েছে বিশেষ নিদান। সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীতে রয়েছে দেবীকে যে ভোগ দেওয়া হবে তার চালের পরিমানের আলাদা আলাদা নিয়ম। এই পরিবারের গৃহবধূ বলেন, মহিষমর্দিনী পূজো কালনায় শ্রাবণ মাসে পূর্ণিমা তিথিতে হয়ে থাকে কিন্তু এখানে তা দুর্গাপূজার সময় হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে মানকরে একাধিক দুর্গাপূজার মধ্যে তিন পুতুলের পূজোর মূর্তি রয়েছে বিশেষ স্থানে ।
আরও পড়ুনঃ শতাব্দী প্রাচীন নদীপার বারোয়ারী মন্দিরের দুর্গাপুজো
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584