শ্যামল রায়,কালনাঃ
এলাকার বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি কালনা মহকুমার একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা পূর্বস্থলী শহরে দমকল কেন্দ্রের। সেই দাবি বাস্তবায়িত করতে পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্ত দফতরের তরফ থেকে দমকল কেন্দ্র তৈরীর জন্য একটি নকশা তৈরি করে রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। জানা গিয়েছে যে পূর্বস্থলীতে দমকল কেন্দ্র তৈরীর জন্য প্রায় পাঁচ কোটি টাকা অনুমোদন দরকার।
তবে দমকল কেন্দ্র তৈরীর জন্য সমস্ত রকমের উদ্যোগ বাস্তবায়নের পক্ষে বলে পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্ত দপ্তর থেকে জানা গিয়েছে।
ইতিমধ্যে পূর্বস্থলীর পলাশপুলি গ্রামে দমকল কেন্দ্র তৈরীর একটা আলোচনা চলছে বলে জানা গিয়েছে। ওই গ্রামটি বাস্তুকার আধিকারিকরা পরিদর্শন করে গিয়েছেন বলে দপ্তর সূত্রে খবর।
প্রশাসন সূত্রে আরো জানা গিয়েছে যে ওই এলাকায় দমকল কেন্দ্র তৈরীর জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছিলেন এলাকার মানুষ।
স্থানীয় সিপিএমের বিধায়ক প্রদীপ সাহা জানিয়েছেন যে, বিষয়টি নিয়ে আমি বারবার বিধানসভায় দমকল মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে আশা করছি দমকল কেন্দ্র তৈরি হবে। যদিও সিপিএমের বিধায়ককে কটাক্ষ করে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন যে দীর্ঘ চৌত্রিশ বছর ধরে সিপিএমের নেতাদের মনে পড়েনি পূর্বস্থলীতে দমকল কেন্দ্র তৈরি হোক। আর আজকে তৃণমূলের সরকার পূর্বস্থলীতে দমকল কেন্দ্র তৈরীর উদ্যোগ গ্রহণ করতেই সিপিএমের বিধায়কের টনক নড়ে গেল যে তাদের তরফ থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে এটা মিথ্যা এবং অপপ্রচার ছাড়া কিছুই নয়।তাই দমকল কেন্দ্র তৈরীর অনেক আগে থেকেই রাজনৈতিক দলে বাকবিতন্ডা বিতর্ক শুরু হয়ে গেল।

কাজ বাস্তবায়িত না হতেই এই ধরনের বিতর্ক উঠতে শুরু করেছে পূর্বস্থলীতে।
পূর্ব বর্ধমান জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা পূর্বস্থলী। এই পূর্বস্থলীতে আছে পাখিরালয়। রয়েছে উত্তরবঙ্গের সাথে যোগাযোগকারী ব্যান্ডেল কাটোয়া রেল শাখায় পূর্বস্থলী রেল স্টেশন। আছে একাধিক বিদ্যালয় আছে কলেজ আছে ব্যবসায়িক কেন্দ্র। পূর্বস্থলী রেল কলোনিতে রয়েছে ভূমি ভূমিসংস্কার দপ্তরের অফিস,রয়েছে জমি রেজিস্ট্রি অফিস পোস্ট অফিস এবং পূর্বস্থলী থানা। তাই দমকল কেন্দ্র খুবই দরকার বলে এলাকার মানুষের দাবী।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে গত কয়েক বছর ধরেই একের পর এক অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে চলছে পূর্বস্থলী এলাকাতে। বহু দোকানঘর বহুবারই ভস্মীভূত হয়ে গেছে।
গত কয়েক মাস আগে পূর্বস্থলীর ধরমপুর গ্রামে এক ভয়ানক অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ষাট সত্তরটি বাড়ি সম্পূর্ণভাবে ভস্মীভূত হয়ে যায় এরপরেও পূর্বস্থলী রেলস্টেশন সংলগ্ন বাজারেও প্রায় আট থেকে দশটি দোকান সম্পূর্ণভাবে ছাই হয়ে যায়। তাই দমকলকেন্দ্র গড়ে তোলার দাবি ক্রমেই জোরালো হয়ে উঠেছে।জানা গিয়েছে যে এই এলাকায় যেকোনো ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে দমকল কেন্দ্র না থাকার কারণে কালনা শহর থেকে অথবা কাটোয়া থেকে নবদ্বীপ থেকে দমকল কেন্দ্রকে এখানে আসতে হয়। দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে দমকল কেন্দ্রের অনেকটা সময় পেরিয়ে যায় যার ফলে অগ্নিকাণ্ডে সম্পূর্ণভাবেই পুড়ে যায় বাড়িঘর দোকানপাট।
পূর্বস্থলী রেলস্টেশন বাজারে বসেন চিকিৎসক জয়ন্ত চক্রবর্তী,তিনি জানিয়েছেন যে আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি এলাকায় একটি দমকলকেন্দ্র গড়ে উঠুক। আজ জানতে পারছি যে দমকল কেন্দ্র তৈরীর কাজ প্রায় অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে তাই দ্রুত বাস্তবায়িত হলে আমরা এলাকাবাসি হিসাবে খুশি হব।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584