মনিরুল হক, কোচবিহারঃ
কারুর সাথে কথা না বলেই অনেকজনকে এক পদ থেকে সরিয়ে অন্য পদে বসানো হয়েছে। কাউকে আবার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার কারণ পর্যন্ত জানানো হয়নি। এমন বেশ কিছু অভিযোগ তুলে তৃণমূল কংগ্রেস থেকে কোচবিহারের একাধিক নেতা কর্মী পদত্যাগ করেছেন। আর তা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় কার্যত শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
এদিন কোচবিহারে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা কার্যালয়ে দলের জেলা সভাপতি পার্থ প্রতিম রায়কে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ওই পদত্যাগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমার হাতে কোন পদত্যাগ পত্র এসে পৌঁছায়নি। তবে দুই তিন জনের পদত্যাগ করার খবর পেয়েছি।
তাদের সাথে কথা বলে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়া হবে।”কোচবিহার উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের পাতলাখাওয়া অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা আব্দুল হোসেন মিয়াঁ দল থেকে পদত্যাগ করে জানান, তিনি দীর্ঘদিন থেকে তৃণমূলের পাতলাখাওয়া অঞ্চলের সভাপতি পদে ছিলেন।
আরও পড়ুনঃ পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসককে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন চেয়ে ডেপুটেশন দিল চুক্তিভিত্তিক স্বাস্থ্যকর্মীরা
গতকাল জেলা কমিটির বৈঠকের পর সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারেন তাকে অঞ্চল সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে ব্লক কমিটির সহ-সভাপতি করা হয়েছে।
এনিয়ে তার সাথে কোন রকম আলোচনাও করা হয়নি বলে জানিয়েছেন আব্দুল হোসেন মিয়াঁ। আর সেই কারণেই তিনি দল থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আব্দুল হোসেন বলেন,“দলের জন্ম লগ্ন থেকে ছিলাম। বর্তমানে মূল্যহীন হয়ে পড়েছি। আর তাই আমার এই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত।”
কোচবিহার উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের টাকাগাছ অঞ্চলের সহসভাপতি নীরেন্দ্রনাথ রায় নিজের পদ থেকে পদত্যাগ করে জানান, যেভাবে অঞ্চল স্তরের নেতৃত্বকে গুরুত্ব না দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাতে অপমানিত বোধ করেছেন নীরেন্দ্রনাথ বাবু। আর তাই তার পদত্যাগের সিদ্ধান্ত। প্রায় একই অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করেছেন কোচবিহার ২ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির সদস্য সমীর চক্রবর্তীও।
আরও পড়ুনঃ বিপুল পরিমাণে নিষিদ্ধ শব্দবাজি আটক করল মুরারই থানার পুলিশ
কোচবিহারে দীর্ঘদিন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি পদে ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনি জেলার সর্বত্র নিজের মত করে সংগঠন গড়ে তুলে ছিলেন। রবীন্দ্রনাথ বাবুর পরে কয়েক মাসের জন্য বিনয়কৃষ্ণ বর্মণকে ওই পদে বসানো হয়। কিন্তু তিনি কোথাও কোন কমিটি বা নেতৃত্ব পরিবর্তন করেননি। বিনয় বাবুর পরে পার্থ প্রতিম রায়কে তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি পদে বসানো হয়।
পার্থ প্রতিম রায় এক সময় রবীন্দ্রনাথ ঘোষের হাত ধরে রাজনীতিতে উঠে আসলেও পরবর্তীতে দুজনের মধ্যে সম্পর্কে ফাটল ধরে। তাই রবীন্দ্রনাথ বাবুর এক সময়ের ভরসা যোগ্য পার্থ প্রতিম রায় দলের ভিতরে মূল প্রতিপক্ষ হয়ে ওঠেন।
আর সেই পার্থ প্রতিম রায় ক্ষমতায় এসেই ব্লক ও অঞ্চল কমিটি গুলো নতুন করে গঠন করার সময় নিজের লোকজনকে কমিটিতে জায়গা দেওয়ার জন্যই অনেকেই অপমানিত বোধ করে পদত্যাগ করছেন বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584