নিজস্ব সংবাদদাতা, পশ্চিম মেদিনীপুরঃ
একে রামে রক্ষে নেই সঙ্গে আবার দোসর। একদিকে করোনা আর লকডাউনে মানুষ যখন দিশেহারা তেমনই দিনের পর দিন হাতির তাণ্ডবে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। বেশ কয়েকদিন ধরেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গোয়ালতোড়, শালবনী সহ জঙ্গলমহলের বিভিন্ন এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে হাতির পাল৷ আর তাদের সেই দাপানিতে কখনও ভাঙছে ঘর তো কখনও নষ্ট হচ্ছে মাঠের ফসল।
আবার কখনও মানুষের প্রাণ যাচ্ছে, নয় আহত হয়ে ভর্তি হচ্ছে হাসপাতালে। দশ কিলোমিটারের মধ্যে এমনই দুটি ঘটনার সাক্ষী থাকলো গোয়ালতোড়ের বাসিন্দারা।জানা গিয়েছে এদিন ভোরে গোয়ালতোড়ের কেড়ুমারা গ্রামের বিশ্বনাথ মাহাতো (৬৫) সাইকেলে করে জঙ্গল পথে সিংলা যাচ্ছিলেন৷ মাঝ রাস্তায় হাতির মুখােমুখি হতেই তার উপরে হামলা চালায় হাতিটি৷ হাতির হামলায় তার বুকের পাঁজরে এবং পায়ে গুরুতর আঘাত লাগে।
স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কেওয়াকোল হাসপাতালে ভর্তি করে। কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে তাকে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। যা নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। সোমবার কেড়ুমারার জঙ্গলে একটি হাতি যখন বিশ্বনাথ মাহাতোর উপর হামলা চালায় ঠিক একই সময়ে অপর একটি হাতি গ্রামে ঢুকে তাণ্ডব চালায়। গোয়ালতোড়ের ধরমপুরে হাতির হামলায় একটি কাঁচা বাড়ি ও একটি ব্রয়লার ফার্ম ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
জানা যায় ধরমপুরের জঙ্গল থেকে সোমবার ভোরের দিকে একটি হাতি খাবারের সন্ধানে বেরিয়ে স্থানীয় ইন্দ্রজিৎ মাহাতোর মাটির বাড়ি ভাঙচুর করে। সেখানে কিছু না পেয়ে কিছুটা দূরে আদিত্য মাহাতোর ব্রয়লার ফার্মে হামলা চালায়। সেখানে দেওয়াল ভেঙে মুরগীর খাবার খেয়ে ছড়িয়ে একাকার করে দেয়। পরে গ্রামবাসীরা একত্রিত হয়ে হাতিটিকে জঙ্গলে ফেরৎ পাঠায়।হাতির এই তাণ্ডবের জেরে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী৷ তাদের অভিযোগ,”বনদফতরের উদাসীনতার কারণেই এই রকম ঘটনা ঘটছে বারবার।
বনকর্মীরা নিজেরাও হাতি তাড়াচ্ছেনা আর স্থানীয়দের হাতি তাড়ানোর জন্য তেল, বাজি হুলাও দিচ্ছেনা। ফলে দিনের পর দিন হাতি একই স্থানে রয়ে যাচ্ছে আর তার ফল ভুগছি আমরা।” বনদফতরের এই উদাসীনতার বিরুদ্ধে সোমবার বীট অফিস ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় স্থানীয়রা৷ এদিন শালবনীর পিড়াকাটা সংলগ্ন ভাউদি বীট অফিসে বিক্ষোভ দেখায় তারা।
আরও পড়ুনঃ দাম চড়ছে আলুর, কালোবাজারি রুখতে ময়দানে প্রশাসনিক কর্তারা
তাদের অভিযোগ বন কর্মীরা হাতি তাড়াচ্ছেনা৷ তাই নিজেরাই হাতি তাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে৷ কিন্তু হাতি তাড়ানোর জন্য তেল, পটকা, হুলা বনদফতরের পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে না৷ তাই তারা বীট অফিস ঘিরে এই বিক্ষোভ দেখায়৷ হয় হাতি তাড়াতে হবে নয় হাতি তাড়ানোর সরঞ্জাম দিতে হবে। পরে বনদফতরের পক্ষ থেকে স্থানীয়দের তেল হুলা ইত্যাদি সরঞ্জাম দেওয়ার পাশাপাশি হাতি তাড়ানোর আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ উঠে যায়।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584