মনিরুল হক, কোচবিহারঃ
দীর্ঘ টালবাহানার পর শেষমেশ হোলির দিনেই প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করল বিজেপি। রাজ্যে ২৮টি আসনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়। প্রথম দফায় যে দুই আসনে ভোট তারমধ্যে অন্যতম লোকসভা আসন হল কোচবিহার। আগামী সোমবার, ২৫ মার্চ, কোচবিহার কেন্দ্রের জন্য মনোনয়ন দাখিলের শেষদিন। তার আগে বৃহস্পতিবার এই কেন্দ্রের প্রার্থীর নাম ঘোষনা করেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটি।
তৃণমূল যুব কংগ্রেসের বহিষ্কৃত নেতা নিশীথ প্রামানিক কিছুদিন আগে মুকুল রায়ের হাত ধরে বিজেপিতে যোগদান করেন। আর সেই তৃণমূলের বহিষ্কৃত নেতা নিশীথ প্রামানিকের এই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হতেই কোচবিহারের বিজেপি পার্টি অফিসে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি দেখা যায়।
কোচবিহার আসনটি এবার বিজেপির পক্ষে ভালো আসন হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতেই কয়েকশো বিজেপি কর্মী দলের কার্যালয়ে ঢুকে বিক্ষোভ দেখান প্রার্থী বদলের দাবিতে। ভাঙচূর করা হয় বলে। তৃণমূলের বহিষ্কৃত এই নেতাকে মানতে নারাজ পদ্মশিবিরের স্থানীয় কর্মীরা। তাঁরা ওই ঘটনার পর গোটা ঘটনার জন্য গণ ইস্তফা দেবেন বলেও সুর চড়িয়েছেন। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ইতিমধ্যেই নিজেদের মতের কথা জানিয়েছেন সেখানের স্থানীয় বিজেপি নেতারা।
বিক্ষোভরত বিজেপি কর্মীদের বক্তব্য, ঘোষিত প্রার্থী একজন স্মাগলার। বহু মামলা আছে তাঁর নামে। এখনই প্রার্থী বদল করা না হলে বিকল্প পথে যেতে তাঁরা বাধ্য হবেন। এখনও তুমুল বিক্ষোভ চলছে। অশালীন ভাষা ব্যবহার করা হচ্ছে বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে। বিজেপি কর্মীরাই অভিযোগ তুলেছেন, মোটা অর্থের বিনিময়ে প্রার্থী করা হয়েছে নিশীথ প্রামানিককে।
এবিষয়ে কোচবিহার জেলার বিজেপি সভাপতি মালতি রাভা বলেন, “টাকা পয়সা নিয়ে আমি কোন প্রার্থী দেইনি। আর প্রার্থী তালিকায় নিশীথ প্রামানিক নামও আমি পাঠান নি। কোচবিহারে এবার বিজেপির ভালো প্রভাব ছিল। আমরা চেয়েছিলাম দীপক বর্মণ প্রার্থী হোক। সে ভালো ছেলে ও দাঁড়ালে আমরা জিতব। কিন্তু রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতারা প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে নিশীথের নাম প্রাকাশ করে। যেহেতু নিশীথ তৃনুমল ঘরনা ছেলে তাই জেলার বিজেপি কর্মী সমর্থকরা নিশীথ প্রামাণিককে মানতে নারাজ।”
ওপর দিকে বামফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী গোবিন্দ রায় বলেন, “যে কোন দলের ক্ষেত্রে এটা হওয়া সম্ভব। একদল থেকে আরও একদলে এসে যদি কোন তৎকাল নেতা প্রার্থী হয় তাহলে তো এটা হওয়া স্বাভাবিক।
আরও পড়ুনঃ তৃণমূলত্যাগী বিজেপি নিশীথের বিরুদ্ধে ফ্লেক্স ঘিরে বিতর্ক
কোচবিহার জেলা ১ নং ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি খোকন মিয়া বলেন, “বিজেপি দলের কোন নিয়ম শৃঙ্খলা নেই। যাদের কে তৃণমূল দল থেকে ছুড়ে ফেলে দেয়। তাদেরকে বিজেপি কুড়িয়ে নিয়ে প্রার্থী করেন। তবে খেলাতো সবে শুরু। বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীদের আহব্বান জানাই তাঁরা যেন তাদের মূল্যবান ভোট নষ্ট না করে যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেয়।” পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, তাতে দ্রুত এই কেন্দ্রে প্রার্থী বদল করতে হতে পারে বিজেপিকে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584