শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
মুখ্যমন্ত্রী পরিযায়ী শ্রমিকদের বিরুদ্ধে কথা বলছেন, তিনি পরিযায়ীদের ঘরে ফেরাতে চান না এমন একাধিক অভিযোগ উঠেছিল প্রধান বিরোধী দল বিজেপির তরফে। এদিন নবান্নে কেন্দ্রের একাধিক অভিযোগ সাংবাদিকদের সামনে স্পষ্ট উত্তর দিলেন ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি বলেন, “অনেকে বলছে পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। ঢুকতে না দিলে রাজ্যে এত লোক আসছে কী করে?” মুখ্যমন্ত্রী জানান,১০ জুনের মধ্যে ১০ লক্ষ মানুষ ঢুকছেন রাজ্যে। পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরানোর ট্রেন ভাড়া মিটিয়েছে রাজ্য সরকার। শুধু তাই নয়, লকডাউনের প্রথম থেকেই প্রকল্প তৈরি করে পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। বিরোধীদের অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে মত মুখ্যমন্ত্রীর। পরিযায়ী শ্রমিকদের উসকানি দিয়ে গন্ডগোল বাঁধানোর চেষ্টা করলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুনঃ প্রতিটি পরিযায়ী শ্রমিককে ১০ হাজার টাকা দিক কেন্দ্র, টুইট করলেন মুখ্যমন্ত্রী
একই সঙ্গে তিনি এদিন জেলাশাসক ও এসডিও-বিডিওদের নির্দেশ দিয়েছেন, সব পরিযায়ীদের তালিকা তৈরি করতে। তাদের কুটির ও ক্ষুদ্রশিল্পের কাজে লাগানো হবে। প্রয়োজনে ১০০ দিনের কাজে তাঁদের শ্রম ব্যবহার করা হবে বলে এদিন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা মোকাবিলায় তৈরি রাজ্যের ২০০ কোটি টাকার ফান্ড প্রায় শেষ। তিনমাস ধরে কোনও রোজগার নেই রাজ্যের। নো আর্নিং, ওনলি বার্নিং। তাও রাজ্য কোষাগার থেকে স্নেহের পরশ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৫৭ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিকের অ্যাকাউন্টে ১০০০ টাকা করে দিয়েছে সরকার। কেন্দ্র কত দিয়েছে? সব নিজেরাই করেছি। তাও শ্রমিকদের উসকানো হচ্ছে।’
আরও পড়ুনঃ অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনে সংশোধন, দাম বিচার করে ফসল বিক্রি করবেন কৃষক
আমফান বিধ্বস্তরা ঠিকমতো ত্রাণ পাননি বলেই বারবার অভিযোগে সরব হয়েছে বিরোধীরা।তবে ত্রাণ থেকে কাউকে বঞ্চিত করা হলে, কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেই হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে আমফান বিধ্বস্ত মৎস্যজীবীদের আর্থিক সাহায্যের কথাও ঘোষণা করেন তিনি।মৎস্যজীবীদের ছোট নৌকা ক্ষতিগ্রস্ত হলে তাঁদের ১০ হাজার টাকা এবং ছিঁড়ে যাওয়া জাল মেরামতির জন্য ২৬০০ টাকা করে আর্থিক সাহায্য করবে রাজ্য।
প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের প্রায় দু’সপ্তাহ পর এখনও বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়নি বলে স্বীকার করে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। খেঁজুরি, নন্দীগ্রাম, হাওড়া, মিনাখা, হাড়োয়া, সন্দেশখালি, বসিরহাট, হিঙ্গলগঞ্জে এখনও পরিষেবা পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। তবে খুব তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে। বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মীরা সাধ্যমতো কাজ করছে।’ এছাড়াও টিউবওয়েল এবং নদীবাঁধ মেরামতির কাজও চলছে বলেই জানান তিনি।
আমফানের থেকে রক্ষা পায়নি সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভও। তাই পরিবেশ দিবসে সুন্দরবনে ৫ কোটি ম্যানগ্রোভ লাগানো হবে বলেই জানান মুখ্যমন্ত্রী। সরকারি কর্মীদের জন্যও সুখবর শোনালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। বুধবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, তাড়াহুড়ো করে, সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়িয়ে অফিসে পৌঁছানোর দরকার নেই। “প্রয়োজনে কিছুটা দেরিতে অফিসে যান, কিন্তু বিধি মেনে সুরক্ষিতভাবে যান। আর এই কারণেই আগামী এক মাস কর্মস্থলে পৌঁছতে দেরি হলে সরকারি কর্মীদের হাজিরায় লালকালি পড়বে না। সবাইকে নিয়ম মেনে ফাঁকা বাসে যাতায়াত করার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584